সোমবার বাজেট অধিবেশনের শুরুতে ভাষণ দিলেন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ, কী বক্তব্য রাখলেন দেখে নিন

অধিবেশনের শুরুতে রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ ভাষণ দিলেন সংসদে। বাজেট অধিবেশনের শুরুতেই করোনা অতিমারির কথা উল্লেখ করে প্রথম সারির যোদ্ধাদের ধন্যবাদ জানালেন রাষ্ট্রপতি। এছাড়াও অন্যান্য বিশেষ বিষয়গুলোর ওপর ফোকাস করলেন রাষ্ট্রপতি। 
 

Kasturi Kundu | Published : Jan 31, 2022 8:17 AM IST / Updated: Jan 31 2022, 05:28 PM IST

আগামীকাল অর্থাৎ ১ ফেব্রুয়ারী দিল্লির সংসদে ২০২২-২৩ অর্থবর্ষের ইউনিয়ন বাজেট (Union Budget) পেশ করবেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমণ (Nirmala Shitaraman)। তার আগে ৩১ জানুয়ারি শুরু হয়ে গেল বাজেট অধিবেশন (Budget Session)। দুই পর্বে অধিবেশন চলবে ৮ এপ্রিল পর্যন্ত। সংসদে রামনাথ কোবিন্দের (Ramnath Kovind) ভাষণের মধ্যে দিয়ে শুরু হল বাজেট অধিবেশন। তার আগে অধিবেশন শুরুর প্রাক্কালে বক্তব্য পেশ করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। বাজেট অধিবেশনের (Budget Session) শুরুতেই করোনা অতিমারির কথা উল্লেখ করে প্রথম সারির যোদ্ধাদের ধন্যবাদ জানালেন রাষ্ট্রপতি। অধিবেশনের শুরুতে রাষ্ট্রপতি (President) কী কী বক্তব্য রাখলেন দেখে নিন এক নজরে। 

১.টোকিও অলিম্পিকে ভারতের তরুণ তুর্কীদের ক্ষমতার প্রশংসা করলেন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ। তাঁদের পারফরমেন্স সর্বকালের সেরা পারফরমেন্স বলে অভিহিত করলেন।  ভারতের ঝুলিতে এসেছে ৭ টি মেডেল। টোকিও অলিম্পিকে ভারতের অবদান যতটা গুরুত্বপূর্ণ ঠিক ততটাই মূল্যবান অবদান রয়েছে টোকিও প্যারাঅলিম্পিকেও। সেখানেও ১৯ টি মেডেল জিতে রেকর্ড গড়েছে ভারত। 

আরও পড়ুন-Budget Session 2022: 'অপকর্ম থেকে মুক্তির দিকে', বাজেট অধিবেশনে কী বললেন রাষ্ট্রপতি

আরও পড়ুন-Budget Session 2022: বিতর্ক চাইলেন প্রধানমন্ত্রী, বিরোধী সাংসদদের উদ্দেশ্যে বড় আহ্বান

আরও পড়ুন-Budget General Knowlwdge-বাজেট নিয়ে সাধারণ জ্ঞান বাড়াতে চান, তার জন্য রইল ২০ টি প্রশ্ন-উত্তর পর্ব

২.অধিবেশনের শুরুতে রাষ্ট্রপতির ভাষণে উঠে এল তিন তালাগের বিষয়টিও। সরকার তিন তালাগ প্রথাকে যে বিলুপ্ত করে দিয়েছে  তার প্রশংসা করেন রাষ্ট্রপতি। একইসঙ্গে সরকারের মুসলিম মহিলাদের হজ যাত্রায় অনুমতি দেওয়াকে সাধুবাদ জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ। পুরুষ অভিভাবকদের সঙ্গে মহিলাদের সঙ্গে হজ যাত্রায় যাওয়াকে অনুমোদিত করেছে সরকার। 

৩.জম্মু অ্যান্ড কাশ্মীর বা জে অ্যান্ড কে-র মানুষদের জন্য স্বাস্থ্য ও শিক্ষাব্যবস্থার উন্নতির জন্য বিশেষ পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে সরকার। দুটি এআইআইএমএস  ছাড়াও ৭ টি মেডিক্যাল কলেজ রয়েছে সেখানে। দুটো  এআইআইএমএস-এর মধ্যে একটি রয়েছে জম্মু ও আরেকটি রয়েছে কাশ্মীরে। জম্মু ও কাশ্মীরের আইআইটি তৈরির কাজ এখনও চলছে। 

৪.সরকারের লক্ষ্য, দেশের সেনাদের জন্য যে অস্ত্রের প্রয়োজন তা ভারতেই ম্যানুফ্যাকচার করা বা তৈরি করা।  সরকার এই বিষয় গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষের গ্রহণ করেছে। অর্ডন্যান্স ফ্যাক্টরিকে ৭ টি ডিফেন্স পাবলিক সেক্টর আন্ডারটেকিং বা পিএসইউএসে রূপান্তরিত করা হয়েছে। 

৫.অধিবেশনের শুরুতে ভাষণ দিতে গিয়ে রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ বলেন, সরকারের অনবদ্য অবদানের জন্যই ভারত আজ  বিশ্বের মধ্যে ফের একবার অর্থনৈতিক দিক দিয়ে দ্রুত এগিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে নিজের স্বতন্ত্র পরিচয় গড়তে সক্ষম হয়েছে।  

৬.৩১ জানুয়ারি সোমবার দুপুর ৩টেয় সমস্ত রাজনৈতিক দলগুলিকে নিয়ে বৈঠক সরকারের। সূত্রের খবর, সেই বৈঠকে বেশ কিছু দাবি পেশ করতে পারেন তৃণমূলের লোকসভার দলনেতা সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়। 

৭. দেশের স্বাধীনতার জন্য সেই লক্ষাধিক মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করেছেন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ। বাজেট অধিবেশনের ভাষণের মাঝে ৭৫ বছরের স্বাধান ভারতকে উন্নয়ন ও অগ্রগতির পথে যে সকল বীর যোদ্ধাদের অবদান রয়েছে তাঁদেরকে স্মরণ করে শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন। 

৮. চলতি বছরের শুরুতে সরকার ২৩ জানুয়ারি নেতাজির জন্মদিন থেকে ২৬ জানুায়রি প্রজাতন্ত্র দিবসউদযাপন করেছে। তিনি বলেছেন, সরকার অতীত থেকে শিক্ষা নিয়েই বর্তমানের পথে অগ্রসর হচ্ছে, যাতে ভবিষ্যৎকে সুদৃঢ় করা যায়। অতীত থেকে শিক্ষা নেওয়ার মত ভাল শিক্ষা আর কোনও কিছু থেকে পাওয়া যায় না, বাজেট অধিবেশনের শুরুতে এমটাই বললেন রাষ্ট্রপতি।

৯.অতিমারি করোনার সঙ্গে লড়াই করার ক্ষমতা রয়েছে ভারতের। করোনার টিকাকরণের প্রোগ্রামের উদ্যোগে সরকারের অবদান অনস্বীকার্য বললেন রাষ্ট্রপতি। এক বছরের কম সময়ের মধ্যে ১৫০ কোটি ভ্যাকসিন ডোজের রেকর্ড গড়ে আজ বিশ্বের মধ্যে উল্লেখযোগ্য স্থানে পৌঁছে গিয়েছে ভারত। 

১০. বাজেট অধিবেশনে আয়ুষ্মান ভারতকার্ডের কথা উল্লেখ করেছেন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ। এই কার্ডের মাধ্যমে গরীব অসহায় মানুষগুলো অনেক কম দামে জন ওষুধি কেন্দ্র থেকে ওষুধ পায়। সরকারের এই পদক্ষেপের প্রশংসা করেছেন রাষ্ট্রপতি। 

১১. অতিমারি করোনা পরিস্থিতিতে বহু মানুষ তাঁদের প্রিয়জনকে হারিয়েছে। মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েছে বহু চিকিৎসক থেকে নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মীরা। তারপরও সমজের প্রথম সারির কর্মীরা যেভাবে প্রতিনিয়ত করোনার সঙ্গে যুদ্ধ করে বাঁচার লড়াইয়ে সামল হচ্ছেন। তাঁদের প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন রাষ্ট্রপরি রামনাথ কোবিন্দ। 

১২. বাজেট অধিবেশনে ভাষণ দিতে দিয়ে ডঃ বি.আর আম্বেদকরের প্রসঙ্গ টেনে এনে রাষ্ট্রপতি বলে বলেন, তাঁর আদর্শ ছিল স্বাধীনতা, সাম্য ও সম্প্রতীর সমাজ গড়ে তোলা। তাঁর মতে, গণতন্ত্র শুধু সরকারের একটি রুপ নয়, গণতন্ত্রের মূল উদ্দেশ্য হল মানুষের প্রতি শ্রদ্ধাবোধ জগরিত করা। সরকার সেই  ডঃ বি.আর আম্বেদকরের দেখানো নীতিকেই  পথপ্রদর্শক করে এগিয়ে চলেছে।

১৩. অতিমারি করোনা পরিস্থিতিতে সরকার কাউকে অভুক্ত রাখনি। গরীব কল্যান যওজনার আওতায় প্রতিটি গরীব মানুষের ঘরে চাল পৌঁছে দিয়েছে।  আজ গোটা বিশ্বে ভারত সবচেয়ে বড় ফুড ডিস্ট্রিবিউশন প্রোগ্রাম গড়ে তুলতে সক্ষম হয়েছে। আগামী ২০২২ সালের মার্চ পর্যন্ত এই যোজনার আওতায় প্রতিটি গরীব মানুষের ঘরে চাল পৌঁছে দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ। 

১৪. সরকারের তরফে যেভাবে দেশের নাগরিক হওয়ার স্বপক্ষে জনধন-আধার-মোবাইল-জ্যাম ট্রিনিটি মধ্যে যোগসুত্র গড়ে তুলেছে তার ফলাফল সকলেই দেখতে পাচ্ছে। এই সংযুক্তিকরণের জন্যই মহামারি পরিস্থিতিতে সরাসরি টাকা ট্রান্সফারের সুবিধা পেয়েছে দেশের নাগরিকরা। সেই সঙ্গে ৪৪ কোটিরও বেশী দরিদ্র নাগরিকরা ব্যাঙ্কিং পরিষেবার সঙ্গে যুক্ত করা হয়েছে।

১৫. ফুটপাতের ছোট ব্যবসায়ীদের জন্য সরকার স্বনিধি যোজনা চালু করেছে। এই যোজনার আওতায় প্রায় ২৮ লাখ স্ট্রীট ভেন্ডার বা রাস্তার ধারের ব্যবসায়ীরা প্রায় ২৯ কোটি টাকা সাহায্য পেয়েছেন। বর্তমানে সরকার এই ছোট ব্যবসায়ীদের অনলাইন সংস্থাগুলোর সঙ্গে যুক্ত করে দিয়েছে। 

১৬. ওম্যান এনপাওয়ারমেন্ট বা নারীশক্তি হল সরকারের অন্যতম প্রধান দৃষ্টি আকর্ষণের জায়গা। উজালা যোজনা থেকে শুরু করে মুদ্রা যোজনার মাধ্যমে মহিলারা নিজেদেরকে অনেক বুস্ট আপ করেছে। সেই সঙ্গে বেটি বাঁচাও, বেটি পড়াও-য়ের মত প্রকল্পগুলো তো মহিলার পাশে সবসময়ই রয়েছে। 

১৭. জাতীয় শিক্ষানীতির অংশ হিসাবে স্থানীয় ভাষায় ওপর গুরুত্ব আরোপ করা হবে। ভারতীয় ভাষায় গুরুত্বপূর্ণ প্রবেশিকা পরীক্ষা পরিচালনার ওপর জোড় দেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি। ১০ রাজ্যের ১৯ টি ইঞ্জিয়ারিং কলেজে এই বছর ৬ টি ভারতীয় ভাষায় পড়ান হবে বলে জনিয়এছেন রামনাথ কোবিন্দ।

১৮. ছেলে-মেয়ের মধ্যে কোনও রকম বৈষম্য সৃষ্টি করা যাবে না। সেই বিষয়ে ইতিমধ্যেই সরকার গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নিয়েছে। ১৮ বছরে মেয়েদের বিয়ের প্রথা ভেঙে মেয়েদের বিয়ের বয়স ২১ বছর করা হয়েছে। 

Read more Articles on
Share this article
click me!