করোনা সঙ্কটের মুখে দাঁড়িয়ে গত দু বছরের বেশি সময় ধরে ধুঁকছে ভারতীয় অর্থনীতি। এরই মাঝে কী ভাবে অর্থমন্ত্রী দেশের অর্থনীতির চাকাকে নতুন করে পুনরুজ্জীবিত করেন সেদিকে তাকিয়ে ছিলেন সকলেই।
কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামনের হাত ধরে সংসদে শুরু হয়েছে বাজেট অধিবেশন। নির্দিষ্ট সময় মেনেই এদিন সকাল ১১টায় বাজেট পেশ শুরু করেন অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমন। এদিকে শুরু থেকেই শোনা যাচ্ছিল এবারে আয়করে (Income Tax) বেশ কিছু ছাড় দিতে পারে কেন্দ্র (Tax Related news)। এমনকী পরিবর্তন করা হতে পারে ট্যাক্স স্ল্যাব (tax slab)। যদিও দেড় ঘণ্টার বাজেট বর্ক্তৃতার শেষে দেখা যায় এই বিষয়ে আপাতত বিশেষ উচ্চবাচ্য করেননি অর্থমন্ত্রী (Finance Minister Nirmala Sitaraman)।
এদিকে করোনা সঙ্কটের মুখে দাঁড়িয়ে গত দু বছরের বেশি সময় ধরে ধুঁকছে ভারতীয় অর্থনীতি। এরই মাঝে কী ভাবে অর্থমন্ত্রী দেশের অর্থনীতির চাকাকে নতুন করে পুনরুজ্জীবিত করেন সেদিকে তাকিয়ে ছিলেন সকলেই। তবে এবার কাজটা যে যথেষ্ট কঠিন ছিল সীতারামনের সামনে তা বলাই বাহুল্য। একদিকে যেমন বাজেট ঘাটতি নিয়ন্ত্রণে রেখে কীভাবে কর্মসংস্থান বাড়ানো যায়, নিম্ন ও মধ্যবিত্তের সমস্যার সমাধান করা যায়, অর্থনীতির পুনরুজ্জীবন করা যায়, সেইসব প্রশ্নের উত্তর পেতে অর্থমন্ত্রীর দিকেই তাকিয়ে ছিল গোটা দেশ। এদিকে এরইমধ্যে আবার পাঁচ রাজ্যে বিধানসভা ভোট রয়েছে। তার মাঝেই এই বাজেট পেশ নিয়ে স্বভাবতই ব্যাপক চাঞ্চল্য ছিল রাজনৈতিক মহলে।
এদিকে এদিন আয়কর রিটার্নের ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী ভুল শোধরানোর জন্য করদাতাদের বাড়তি সময় দিয়েছেন বলেও জানা যাচ্ছে। তিনি জানিয়েছেন, “২০২২-২৩ সাল থেকে করদাতারা সংশ্লিষ্ট অ্যাসেসমেন্ট ইয়ারের দু'বছরের মধ্যে (বছর শেষের ২ বছরের মধ্যে) সংশোধিত রিটার্ন ফাইল করতে পারবেন। তার ফলে ঝক্কি কমবে করদাতাদের। এছাড়াও, মামলার ঝঞ্ঝাটও কমবে।” এছাড়াও, কো-অপারেটিভ সোসাইটির ক্ষেত্রে কমানো হচ্ছে সারচার্জ ও কর। এদিন বাজেট পেশকালীন জানানো হয়েছে, কো-অপারেটিভ সোসাইটির ক্ষেত্রে সারচার্জ ১২ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৭ শতাংশ করা হবে। কর কমিয়ে ১৮ শতাংশ থেকে ১২ শতাংশ করা হবে বলেও জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী।
আরও পড়ুন-প্রতীক্ষার অবসান, অর্থমন্ত্রক থেকে বেরিয়ে রাষ্ট্রপতি ভবনে অর্থমন্ত্রী
আরও পড়ুন- আগামী ৫ বছরে ৬০ লক্ষ চাকরির প্রতিশ্রুতি নির্মলার, বাজেট অধিবেশনেই বড় ঘোষণা অর্থমন্ত্রীর
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, ২০২২ থেকে ২০২৩ সালে ৩৯.৪৫ লক্ষ কোটি টাকা ব্যয় হতে পারে সরকারের। একই সাথে খরচ বৃদ্ধির সাথে সাথেই রাজস্ব ঘাটতি ৬.৪ শতাংশ হতে পারে বলেও মনে করা হচ্ছে। সাল ২০২৫-এর মধ্যে এই রাজস্ব ঘাটতি ৪ শতাংশে নিয়ে যাওয়াই এখন মূল লক্ষ্য। এদিন এমনটাই জানান কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমন। পাশাপাশি, রাজস্ব ঘাটতি কম করতে বেসরকারি বিনিয়োগে জোর দেওয়া হচ্ছে সরকার তরফে। এছাড়াও, রাজ্যগুলিকে সুদবিহীন ঋণ প্রদান করা হবে বলে জানিয়েছেন দেশের অর্থমন্ত্রী। ইতিমধ্যেই অর্থনীতিতে বিনিয়োগ বাড়ানোর জন্য রাজ্যগুলিকে ১ লক্ষ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে কেন্দ্র। এই টাকা প্রধানমন্ত্রী গতিশক্তি প্রকল্প এবং অন্যান্য বিনিয়োগ পরিকল্পনার জন্য ব্যবহার করা হবে বলে সরকারের তরফে ঘোষণা করা হয়েছে। প্রসঙ্গত, এদিন আবার করদাতাদের আলাদা করে ধন্যবাদও জানিয়েছেন সীতারমন। বার্তা দিয়েছেন কর ব্যবস্থায় সরলীকরণ ঘটানোর। তবে মোটের উপর এদিনের বাজেটে আয়করদাতা উদ্দেশ্যে কোনোরকম গঠনমূলক বার্তা দিতে দেখা যায়নি নির্মলাকে, এমনটাই মত অর্থনৈতির বিশেষজ্ঞ মহলের একাংশের।
আরও পড়ুন- কেন দু'বছর পিছিয়ে দেওয়া হল পুরভোট, নির্বাচনী আবহে ফের রাজ্যকে আক্রমণ বামেদের