মঙ্গলবার দিল্লিতে নতুন করে করোনায় আক্রান্ত হয়েছিলেন ৫ হাজার ৪৮১ জন। এমনকী, করোনায় আক্রান্ত দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়ালও। তাঁর শরীরে করোনার মৃদু উপসর্গ রয়েছে। এই মুহূর্তে বাড়িতেই নিভৃতবাসে রয়েছেন তিনি।
বছর ঘুরতে না ঘুরতেই গোটা দেশেই করোনার (Coronavirus) বাড়বাড়ন্ত লক্ষ্য করা যাচ্ছে। বেশিরভাগ রাজ্যেই দাপট দেখাচ্ছে করোনা। আবার দোসর হয়েছে তার নতুন রূপ ওমিক্রন (Omicron)। বিদেশ ভ্রমণের (Foreign Tour) কোনও ইতিহাস না থাকা সত্ত্বেও থাবা বসাচ্ছে এই ভাইরাস (Virus)। আর এভাবেই দেশবাসীর কাছে ত্রাস হয়ে উঠেছে করোনা। দিল্লিতে (Delhi) করোনা কার্যত সুনামির আকার নিয়েছে। মঙ্গলবার দিল্লির স্বাস্থ্য দফতরের (Health Department) পরিসংখ্যান অনুযায়ী, নতুন করে প্রায় সাড়ে ৫ হাজারের কাছাকাছি মানুষ ফের করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। আর বুধবার সেই সংখ্যাটা ১০ হাজারের গণ্ডি ছুঁতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী সত্যেন্দ্র জৈন (Health Minister Satyendar Jain)। তাঁর মতে, দেশে আছড়ে পড়েছে করোনার তৃতীয় ঢেউ। তবে দিল্লির ক্ষেত্রে সেটা পঞ্চম ঢেউ।
দিল্লিতে গতকাল পর্যন্ত করোনার পজিটিভিটি রেট (Positivity Rate) ছিল ৮.৩ শতাংশ। সোমবার তা ছিল ৬.৪৬ শতাংশ। আজ পজিটিভিটি রেট আরও ২ শতাংশ বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। সত্যেন্দ্র জৈন বলেন, "দিল্লিতে আজ ১০ হাজার মানুষ নতুন করে করোনা আক্রান্ত হতে পারেন। পজিটিভিটি রেট ১০ শতাংশের কাছে পৌঁছতে পারে। দেশে করোনার তৃতীয় ঢেউ (Third Wave) আছড়ে পড়েছে। দিল্লির ক্ষেত্রে সেটা পঞ্চম ঢেউ (Fifth Wave)।"
আরও পড়ুন- হোম আইসোলেশনের নয়া নির্দেশিকা প্রকাশ করল কেন্দ্র
মঙ্গলবার দিল্লিতে নতুন করে করোনায় আক্রান্ত হয়েছিলেন ৫ হাজার ৪৮১ জন। এমনকী, করোনায় আক্রান্ত দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়ালও (Arvind Kejriwal)। তাঁর শরীরে করোনার মৃদু উপসর্গ রয়েছে। এই মুহূর্তে বাড়িতেই নিভৃতবাসে রয়েছেন তিনি।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, "রাজধানীতে যেভাবে করোনা সংক্রমণ হচ্ছে তাতে স্বাস্থ্য ব্যবস্থার উপর বড় চাপ পড়তে পারে। এ জন্য বেসরকারি হাসপাতালগুলোর শতকরা ৪০ ভাগ বেড সংরক্ষিত রাখা হয়েছে পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার জন্য। দিল্লি থেকে এখন মাত্র ৩০০ থেকে ৪০০ নমুনা জিনোম সিকোয়েন্সিংয়ের জন্য পাঠানো হচ্ছে। সব নমুনা জিনোম সিকোয়েন্সিংয়ের জন্য পাঠানো সম্ভব নয়। করোনা পরীক্ষা বাড়ানো হয়েছে।"
আরও পড়ুন - End of Covid-19 Pandemic: ওমিক্রন নিয়ে সব গবেষণার তথ্য একটাই সংকেত দিচ্ছে, কী জানেন
আর এই পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য দিল্লিতে সপ্তাহান্তে কার্ফুর জারির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। প্রশাসনিক কর্তারা জানিয়েছেন, মুদিখানার দোকান-সহ প্রয়োজনীয় জিনিস বিক্রির দোকান ছাড়া সপ্তাহান্তে সব দোকান বন্ধ থাকবে। মল, মার্কেট এবং রেস্তরাঁ বন্ধ থাকবে। পাশাপাশি নাইট কার্ফুও জারি রয়েছে। আর এবার শুক্রবার রাত ১০টা থেকে সোমবার সকাল ৫টা পর্যন্ত উইকেন্ড কার্ফুও জারি হল। এছাড়াও সরকারি কর্মীদের বাড়ি থেকে কাজ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। শুধু বেসরকারি অফিসগুলি করোনাবিধি মেনে ৫০ শতাংশ কর্মী নিয়ে অফিস থেকে কাজ করতে পারবে। বাস ও দিল্লি মেট্রোতে সচল রাখা হয়েছে যাতে কোনওভাবেই ভিড় না হয়।
অরবিন্দ কেজরিওয়াল আগেই জানিয়েছিলেন, যে তাঁর সরকার এই পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য প্রস্তুত রয়েছে। এছাড়া করোনার জন্য একটি ওয়ার রুম তৈরির ভাবনা চিন্তাও করা হয়েছে। সেটি প্রতিটি জেলার ও হাসপাতালে কত শয্যা রয়েছে, কতজন রোগী ভর্তি রয়েছেন ও কত পরিমাণ অক্সিজেন রয়েছে সেই বিষয়ে তথ্য প্রস্তুত করবে। তবে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বাড়লেও সাধারণ মানুষকে অযথা আতঙ্কিত হতে বারণ করেছেন উপ-মুখ্যমন্ত্রী মণীশ সিসোদিয়া (Manish Sisodia)।