১৫ থেকে ১৮ বছর বয়সীদের টিকাকরণ (Vaccine for Children) এবং বুস্টার ডোজ (Booster Dose) - জাতির উদ্দেশে ভাষণে দুটি বড় ঘোষণা করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী (PM Narendra Modi)। কীভাবে দেখছে চিকিৎসক মহল?
দেশজুড়ে অত্যন্ত সংক্রামক ওমিক্রন (Omicron) ভেরিয়েন্ট সংক্রমণের সংখ্যা ক্রমে বাড়ছে। এর মধ্যে শনিবার রাতে জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে, করোনা মোকাবিলার বিষয়ে বেশ কিছু বড় সিদ্ধান্ত ঘোষণা করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী (PM Narendra Modi)। ২০২২ সালের ৩ জানুয়ারি থেকেই করোনা টিকা দেওয়া হবে ১৫ থেকে ১৮ বছর বয়সীদের। এছাড়াও, স্বাস্থ্য পরিষেবা এবং ফ্রন্টলাইন কর্মীদের 'সতর্কতামূলক ডোজ' দেওয়া হবে। সহ-অসুস্থতা থাকা ষাটোর্ধরাও ডাক্তারদের সুপারিশ অনুযায়ী ১০ জানুয়ারি থেকে বুস্টার ডোজ নিতে পারবেন। ওমিক্রন উদ্বেগের মধ্যে, প্রধানমন্ত্রীর এই ঘোষণাকে ক্রিসমাসের তোফা বলে জানাচ্ছেন ভারতের শীর্ষস্থানীয় চিকিৎসকরা।
দিল্লির স্যার গঙ্গা রাম হাসপাতালের (Sir Ganga Ram Hospital, Delhi) পেডিয়াট্রিক পালমোনোলজিস্ট ডা. ধীরেন গুপ্তা (Dr Dhiren Gupta, Paediatric Pulmonologist) প্রধানমন্ত্রীর এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন। সংবাদ সংস্থা এএনআই-কে তিনি বলেছেন, সরকারের পরবর্তী পরিকল্পনা হওয়া উচিত, ৫ বছরের বেশি বয়সী শিশুদের টিকা দেওয়া। একইসঙ্গে তিনি শিশুরোগ বিশেষজ্ঞদের (Pediatricians) ক্লিনিকেই শিশুদের টিকা দেওয়ার অনুমতি দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন।
আরও পড়ুন - Doctors welcome PM's decision: মোদীর ঘোষণা 'ক্রিসমাস গিফট', কী বললেন ডাক্তাররা
তবে, সরকার বুস্টার ডোজ (Booster Dose) দেওয়ার ক্ষেত্রে বেশ দেরি করছে বলেই মনে করছেন ডা. ধীরেন গুপ্তা। তিনি বলেছেন, 'টিকাদান কেন্দ্রগুলিও প্রায় খালি এবং কোভ্যাক্সিন (Covaxin) এবং কোভিশিল্ড (Covishield) প্রস্তুতকারকদের কাছে পর্যাপ্ত স্টকও রয়েছে। তাহলে, কেন আমরা ১০ জানুয়ারি পর্যন্ত অপেক্ষা করব?' তাঁর মতে এক-দুই দিনের মধ্যেই বুস্টার ডোজ দেওয়া শুরু করা উচিত।
ইন্ডিয়ান মেডিকাল অ্যাসোসিয়েশন বা আইএমএ (IMA)-র সভাপতি জেএ জয়লালও (JA Jayalal) প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণাকে স্বাগত জানিয়ে বলেছেন, প্রধানমন্ত্রীকে তিনি চিঠি লিখে, শিশুদের টিকাকরণের জন্য, শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ এবং পারিবারিক চিকিত্সকদের ব্যবহার করার পরামর্শ দিয়েছেন। জয়লাল আরও জানিয়েছেন, আইএমএ-র মতে বুস্টার শট দেওয়ার ক্ষেত্রে 'মিক্সড অ্যান্ড ম্যাচ' নীতি অনুসরণ করা উচিত। অর্থাৎ, কোনও ব্যক্তি যদি এর আগে কোভ্যাক্সিনের দুটি ডোজ নিয়ে থাকেন, তাহলে বুস্টার ডোজ হিসাবে তাঁর কোভিশিল্ড নেওয়া উচিত। আবার আগে যারা কোভিশিল্ড নিয়েছেন, তাঁদের নিতে হবে কোভ্যাক্সিন।
রেডিক্স হেলথকেয়ার-এর (Radix Healthcare) ডিরেক্টর ডা. রবি মালিক (Dr Ravi Malik) সরকারের এই সিদ্ধান্তকে 'ঐতিহাসিক' বলে মনে করছেন। তাঁর মতে কোভিড-১৯ (COVID-19)-এর বিরুদ্ধে ভারতের লড়াইয়ে এই দুই সিদ্ধান্ত একটি মাইলফলক হয়ে থাকবে। কারণ, এই রোগের বিরুদ্ধে ভ্যাকসিনই হল সবথেকে কার্যকর হাতিয়ার।
ইন্ডিয়া টুডের এক প্রতিবেদন অনুযায়ী, মেদান্ত হসপিটালস-এর (Medanta Hospitals) চেয়ারম্যান, ডা. নরেশ ত্রেহান (Dr Naresh Trehan) সরকারের এই সিদ্ধান্তকে 'ক্রিসমাসের সেরা উপহার' বলেছেন। এতদিন করোনার বিরুদ্ধে শিশুরা অরক্ষিত ছিল বলে চিকিৎসক মহলে উদ্বেগ ছিল বলে, জানিয়েছেন তিনি। এই সিদ্ধান্ত তাঁর মতে 'বড় স্বস্তির'। কারণ, টিকার সম্পূর্ণ ডোজ নিলে ওমিক্রনের মতো রূপান্তরগুলির প্রভাবও যে হালকা উপর দিয়ে যায়, তা এখন প্রমাণিত।