সংক্ষিপ্ত
উত্তরপ্রদেশ-সহ (Uttar Pradesh) ১২টি রাজ্যে পৌঁছে গিয়েছে ওমিক্রন (Omicron) ভেরিয়েন্ট। এখনই সতর্ক না হলে ভারতে দৈনিক ১৪ লক্ষ করে নতুন করোনা রোগী পাওয়া যেতে পারে।
ব্রিটেন (Britain) এবং বেশ কয়েকটি ইউরোপিয় দেশ-সহ, সারা বিশ্বেই বিভিন্ন দেশে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে করোনাভাইরাসের নতুন রূপ ওমিক্রন (Omicron)। ভারতেও শনিবার সকাল পর্যন্ত মোট ১২ টি রাজ্যে ওমিক্রন থাবা বসিয়েছে। সর্বশেষ ওমিক্রন সংক্রমনের ঘটনা ধরা পড়েছে উত্তরপ্রদেশ (Uttar Pradesh) রাজ্য়ে। সব মিলিয়ে এখনও পর্যন্ত ভারতের ১২ টি রাজ্যে মোট ১১৩ জন ওমিক্রন রোগীর সন্ধান পাওয়া গিয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে করোনার নতুন রূপটি নিয়ে জনগণকে সতর্ক করে কেন্দ্রীয় সরকার বলেছে, ওমিক্রনকে হালকাভাবে দেখলে, কিন্তু ভারতে দৈনিক করোনা রোগীর সংখ্যা ১৪ লক্ষে গিয়ে দাঁড়াতে পারে!
বিজ্ঞানীরা বলেছেন, এখনও পর্যন্ত অধিকাংশ ওমিক্রন সংক্রামিতের শরীরেই গুরুতর উপসর্গ বা অসুস্থতা দেখা যায়নি। তবে, এর সংক্রামক ক্ষমতা এতটাই বেশি, যে অত্যন্ত দ্রুত এই ভাইরাস মানুষকে তার কবলে এনে ফেলছে। ব্রিটেনের শুক্রবার নিয়ে টানা তিনদিন দৈনিক নতুন সংক্রমণের সংখ্যার রেকর্ড হয়েছে। কিছু কিছু আফ্রিকা ও ইউরোপের দেশেও নতুন করে করোনা সংক্রমণের দৈনিক সংখ্যা রেকর্ড উচ্চতায় পৌঁছেছে। হালকাভাবে নিলে আমাদের দেশেও একই অবস্থা হবে, আর সেই কারণেই ওমিক্রন সম্পর্কে অবিলম্বে সতর্ক হওয়া প্রয়োজন বলে জানিয়েছে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক (Union Health Ministry)।
এখনও পর্যন্ত দেশের ১২টি রাজ্য থেকে মোট ১১৩ জন ওমিক্রন সংক্রমণের ঘটনা রিপোর্ট করা হয়েছে। শুক্রবার নতুন করে মহারাষ্ট্রে ৮ টি, কেরল ও উত্তরপ্রদেশে ২ টি করে নতুন ওমিক্রন সংক্রমণের খবর পাওয়া গিয়েছে। সব মিলিয়ে বর্তমানে, মহারাষ্ট্রে ৪০ জন, দিল্লিতে ২২ জন, রাজস্থানে ১৭ জন, তেলেঙ্গানায় ও কর্ণাটকে ৮ জন করে, কেরলে ৭ জন, গুজরাটে ৫ জন, উত্তরপ্রদেশে ২ জন এবং অন্ধ্রপ্রদেশ, তামিলনাড়ু, পশ্চিমবঙ্গ এবং চণ্ডীগড়ে ১ জন করে ওমিক্রন সংক্রামিতকে সনাক্ত করা হয়েছে।
এই অবস্থায়, ওমিক্রনের বিপদ সম্পর্কে সতর্ক করে, নীতি আয়োগের (NITI Ayog)-এর স্বাস্থ্য সংক্রান্ত সদস্য তথা করোনা ভ্যাকসিনেশন টাস্ক ফোর্সের প্রধান, ডাক্তার ভি কে পল (Dr. VK Paul), ভারতবাসীর কাছে কঠোরভাবে করোনা মহামারিকালীন যথাযথ আচরণ অনুসরণ করার এবং ভ্যাকসিনের উভয় ডোজ গ্রহণ করার আবেদন করেছেন। তিনি বলেছেন, ব্রিটেনের জনসংখ্যা সঙ্গে যদি আমরা ভারতের জনসংখ্যার তুলনা করি, তাহলে ব্রিটেনে প্রতিদিন ৪৪ হাজার মানুষ করোনা আক্রান্ত হলে, ভারতের দৈনিক নতুন সংক্রমণের সংখ্যা ১৪ লক্ষের বেশি হতে পারে। তিনি মনে করিয়ে দেন, করোনা মহামারির দ্বিতীয় তরঙ্গের (Coronavirus Second Wave) সময়, দেশে দৈনিক নতুন আক্রান্তের চার লক্ষ ছাড়িয়ে গিয়েছিল। তাতেই দেশের স্বাস্থ্য ব্যবস্থার যা হাল হয়েছিল, তাতে করে প্রতিদিন ১৪ লক্ষ রোগী হলে তার সামান্য অংশকেও হাসপাতালে ভর্তি করতে হলে, আর জায়গা পাওয়া যাবে না।
তিনি আরও জানান, এই মুহূর্তে মহামারির বিষয়ে শুধুমাত্র একটি বিষয়ই নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে, তা হল, যারা ভ্যাকসিন নিচ্ছেন, তাদের মধ্যে সংক্রমণের উপসর্গ কম দেখা যাচ্ছে। এই কারণেই সরকারের পক্ষ থেকে বারবার করে সবাইকে টিকা নেওয়ার কথা বলা হচ্ছে। অন্যদিকে, দেশের ২৪ টি জেলায় সংক্রমণের হার ৫ শতাংশের বেশি। এই তথ্যের বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অফ মেডিক্যাল রিসার্চ বা আইসিএমআর (ICMR) এর ডিরেক্টর ডাক্তার বলরাম ভার্গব (Dr. Balaram Bhargava)। সংক্রমণের হার ৫ শতাংশে নামিয়ে আনার জন্য পরীক্ষা বাড়ানোর উপর জোর দিয়েছেন তিনি। আরও জানিয়েছেন, যত তাড়াতাড়ি সম্ভব, ওমিক্রন ভেরিয়েন্ট সংক্রামিতদের এবং তাদের সংস্পর্শে যারা এসেছেন, তাদের সনাক্ত করতে হবে এবং বিচ্ছিন্ন করতে হবে।