সবাই চাইছে সংক্রমণ আটকাতে
সে ডাক দিয়েছিল ভাইরাস ছড়াতে
গ্রেফতার হতে হয়েছে ইনফোসিস-এর ইঞ্জিনিয়ার-কে
এবার খোয়ালেন চাকরিটাও
কোন পথে করোনাভাইরাস-এর সংক্রমণ রোখা যায়, এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতেই যখন গোটা দুনিয়া ব্যস্ত, তখন সে জনসাধারণের মধ্যে নভেল করোনাভাইরাস ছড়িয়ে দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছিল। লোকের মুখের কাছে গিয়ে গিয়ে হাঁচার ডাক দিয়েছিল। না সে কোনও এলেবেলে লোক নয়, রীতিমতো ইনফোসিস-এর মতো নামি তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থার পদস্থ কর্মচারি। সেই জায়গা থেকে এই চরম দায়িত্বজ্ঞানহীন, সন্ত্রাসবাদী পোস্টের বিরুদ্ধে জনরোষ গড়ে উঠতে সময় লাগেনি। শনিবার তাঁকে বরখাস্ত করল ইনফোসিস।
গত বৃহস্পতিবার মুজিব মহম্মদ নামে ইনফোসিস-এর এক সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার ফেসবুকে নিজের এটি ছবি পোস্ট করে লিখেছিল, 'আসুন হাতে হাতে মিলিয়ে সকলে প্রকাশ্যে মুখ খুলে রেখে হাঁচি দিই, এভাবে ভাইরাস ছড়িয়ে দিই'। সেই সঙ্গে তাঁর ছবির উপর লেখা ছিল, 'স্প্রেড দ্য ওয়ার্ড টু এন্ড দ্য ওয়ার্ল্ড'। অর্থাৎ, মানব সভ্যতায় ইতি টানতে তাঁর কথাগুলি ছড়িয়ে দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছিল সে।
এরপরই এই পোস্টটি ভাইরাল হয়ে যায়। করোনাভাইরাস সংক্রমণ নিয়ে বাড়তে থাকা আতঙ্কের মধ্যে সে কার্যত সন্ত্রাস ছড়াচ্ছে বলে অভিযোগ উঠতে শুরু করে। যেখানে আইএস জঙ্গি গোষ্ঠীর মতো সন্ত্রাসবাদী সংগঠনও তাদের জঙ্গিদের করোনা সংক্রমণ নিয়ে সতর্ক থাকার নির্দেশ দিয়েছে, সেই পরিপ্রেক্ষিতে একজন তথাকথিত উচ্চ শিক্ষিত নাগরিক-এর কাছ থেকে এই ধরণের মন্তব্য এতটাই অনভিপ্রেত ও অবিশ্বাস্য যে, প্রথমে ইনফোসিস এই ঘটনা বিশ্বাসই করতে পারেনি। কিন্তু, শুক্রবার রাতেই বেঙ্গালুরুতে তার খোঁজ পায় পুলিশ এবং তাকে গ্রেফতার করা হয়।
ইনফোসিস প্রথমে বলেছিল, সম্ভবত মুজিব ইনফোসিস-এর কর্মী হিসাবে নিজের মিথ্যা পরিচয় দিয়েছে। কিন্তু তার গ্রেফতারির পরই নড়েচড়ে বসেছিল ওই সংস্থা। তদন্ত করে জানতে পারে মুজিব সত্যি সত্যিই তাদের কর্মচারী। শনিবার ভোর রাতে তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থাটি টুইট করে জানিয়েছে, সোশ্যাল মিডিয়ায় ওই ঘৃণ্য পোস্ট করা ব্যক্তি তাদেরই কর্মচারী। এই বিষয়ে তাদের তদন্তের পর তারা নিশ্চিত হয়েছে, এটা কোনও ভুল বা মিথ্যা পরিচয়ের ঘটনা নয়।
সংস্থাটি আরও বলেছে যে তারা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট করার বিষয়ে দায়িত্বশীল। কিন্তু ওই কর্মীর পোস্টটি ইনফোসিসের আচরণবিধি এবং দায়বদ্ধ সোশ্যাল শেয়ারিং বিধির পরিপন্থী। এই বিষয়ে ইনফোসিস-এর নীতি শূন্য সহনশিলতা। তা মেনেই ওই কর্মীকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হয়েছে।