করোনার 'দেশি' রূপান্তরই কি আনল দ্বিতীয় তরঙ্গ, ডাবল মিউট্যান্ট নিয়ে বাড়ছে উদ্বেগ

করোনার 'বি.১.৬১৭' রূপটি পাওয়া গিয়েছে আটটি দেশে

একে বলা হচ্ছে করোনার দেশি রূপান্তর

মহারাষ্ট্রে নথিভুক্ত ৬১ শতাংশ ক্ষেত্রে পাওয়া গিয়েছে এই রূপান্তর

ভারতে কোভিডের দ্বিতীয় তরঙ্গের জন্য কি দায়ী এই 'দেশি' করোনাই

 

amartya lahiri | Published : Apr 15, 2021 1:13 PM IST

সম্প্রতি ন্যাশনাল সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল বা এনসিডিসি (NCDC)  জানিয়েছে, ভারতে করোনাভাইরাসের একটি 'নতুন ডাবল মিউট্যান্ট রূপান্তর' পাওয়া গিয়েছে। বিজ্ঞানীরা এই রূপান্তরটির নাম দিয়েছে, 'বি.১.৬১৭' (B.1.617)। তবে সাধারণভাবে করোনার এই রূপান্তরকে 'দেশি মিউট্যান্ট' বা দেশি রূপান্তর বলা হচ্ছে। একে  এই রূপান্তরটি এখনও পর্যন্ত আটটি দেশে পাওয়া গিয়েছে। তার ৭০ শতাংশ নমুনাই ভারতবর্ষ থেকে উদ্ভূত বলে জানা গিয়েছে। সেইসঙ্গে আচমকা ভারতের করোনা সংক্রমণ যেভাবে বেড়ে গিয়েছে, তাতে প্রশ্ন উঠছে ভারতে কোভিডের দ্বিতীয় তরঙ্গের জন্য কি দায়ী এই 'দেশি' করোনাই?

এর আগে করোনাভাইরাসের যেকটি ডাবল মিউট্যান্ট দেখা গিয়েছে, প্রত্যেকটি ক্ষেত্রেই সেই রূপান্তর করোনাভাইরাসকে আরও সংক্রামক করে তুলেছিল। বিজ্ঞানীরা বলছেন, করোনার দেশি রূপান্তরটির খুব কাছাকাছি করোনার আরও একটি রূপান্তর রয়েছে। তার নাম ই৪৮৪কে (E484K)। এই রূপান্তরটি ধরা পড়েছে মার্কিন যুত্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ায়। এর ফলেই দক্ষিণ ক্যালিফোর্নিয়ায় যে করোনা সংক্রমণ হুহু করে বেড়েছে, তা প্রমাণিত। কাজেই সেই একই ঘটনা ভারতে কেন ঘটবে না, সেই প্রশ্ন তুলছেন দেশের শীর্ষস্থানীয় ভাইরোলজিস্টরা।

চিনের উহান থেকে করোনাভাইরাসের যে রুপটি ভারতে এসেছিল, ভারতের ডাবল মিউট্যান্ট অর্থাৎ, করোনার দেশি রূপান্তর তৈরি হওয়ার মধ্যে ভাইরাসটির ১৫ বার পরিবর্তন হয়েছে। এর মধ্যে তিনটি পরিবর্তন ঘটেছে ভাইরাসটির সবচেয়ে বাইরের অংশ, অর্থাৎ স্পাইক প্রোটিন অংশে। স্পাইক প্রোটিনের মাধ্যমেই করোনাভাইরাস মানুষের দেহে প্রবেশ করে। এই স্পাইক প্রোটিনের পরিবর্তনই ভাইরাসটিকে আরও সংক্রামক করে তোলে।

ভারতের দৈনিক নতুন কোভিড-১৯ সংক্রমণের সংখ্যা বৃহস্পতিবার ২ লক্ষ ছাপিয়ে গিয়েছে। ভারতের বেশ কয়েকটি রাজ্য থেকে দেশি মিউট্যান্ট সংক্রমণের খবর পাওযা যাচ্ছে। মহারাষ্ট্রে, নথিভুক্ত নতুন সংক্রমণের ৬১ শতাংশ ক্ষেত্রেই এই ভারতীয় ডাবল মিউট্যান্ট দায়ী। দিল্লি, উত্তরপ্রদেশ, গুজরাত এবং ছত্তিসগড় থেকেও প্রায় একই সংখ্যায় দেশি করোনা সংক্রমণের ঘটনা সামনে আসছে। স্বদেশি করোনা কতটা উদ্বেগ বাড়াতে চলেছে, তার মাত্রা এখনও বিচার করা যাচ্ছে না, এমনটাই জানাচ্ছেন ভাইরাস বিশেষজ্ঞরা।

এখন প্রশ্ন হচ্ছে এই দেশি করোনার বিরুদ্ধে ভ্যাকসিন কাজ করবে কি? এর উত্তর বিজ্ঞানীদের এখনও জানা নেই। ভ্যাকসিনকে সে পরাস্ত করতে পারছে কি না, তা যাচাই করার জন্য বর্তমানে গবেষণা চালানো হচ্ছে। দু'সপ্তাহের মধ্যে তার ফল জানা যাবে, এমনটাই আশা করা হচ্ছে।

Share this article
click me!