কোভিড ১৯-এর আতঙ্কের থাবা কতটা ভয়ঙ্কর হয়ে নেমে এসেছে তা ভালোই ঠাহর করতে পারছে বিশ্ববাসী। এরমধ্যে একের পর এক ভ্যারিয়েন্টের হদিশ আতঙ্কের মাত্রাকে আরও কয়েকশ গুণ বাড়িয়ে দিয়েছে। এমতাবস্থায় ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্টের সন্ধান পাওয়াটা নতুন করে আতঙ্কের মাত্রাকে বাড়িয়েছে।
ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্ট-এর (Omicron Variant) হদিশ মেলার পর থেকেই কোভিড ১৯ (COVID 19) সংক্রমণে এক নয়া আতঙ্কের জন্ম হয়েছে। বিশেষ করে দক্ষিণ আফ্রিকা (Omicron Variant In South Africa) থেকে আসাদের নিয়ে রীতিমতো সন্দেহের আবহাওয়া তৈরি হয়েছে। এরমধ্যে আতঙ্ক শিয়রে সমনের মতো হাজির হয়েছে মহারাষ্ট্রে দক্ষিণ আফ্রিকা ফেরত একজনের শরীরে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ পাওয়ার পর। কিন্তু ওমিক্রনকে প্রাণঘাতী বা মারাক্তক ভ্যারিয়েন্ট হিসাবে মানতে রাজি নন উত্তরপ্রদেশের (Uttar Pradesh) কোভিড মোকাবিলা উপদেষ্টা কমিটির চেয়ারপার্সন তথা লখনউ (Lucknow) এসজিপিআই-এর ডাইরেক্টর ডক্টর আর কে ধীমান (Dr. R K Diman, Director, SGPI)। তিনি দাবি করেছেন যে ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের (Delta Variant) মতো প্রাণঘাতক নয় ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্ট (Omicron Variant Is not Deadly Like Delta Variant)।
চিকিৎসক আর কে ধিমান জানিয়েছেন, তিনি ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্টে আক্রান্তদের রিপোর্ট খতিয়ে দেখেছেন। বিশেষ করে দক্ষিণ আফ্রিকায় যারা ওমিক্রনে আক্রান্ত হয়েছেন তাদের রিপোর্ট বিস্তারিতভাবে খুটিয়ে দেখেছেন। সেখানে রিপোর্টে এই ভ্যারিয়েন্টের দ্রুত ছড়িয়ে পড়ার কথা বলা হলেও কোথাও লেখা নেই যে এটি এক্কেবারে প্রাণঘাতী। এমনকী, ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট যতটা ভয়ঙ্কর ওমিক্রন ততটাও খতরনাক নয় বলেই দাবি করেছেন আর কে ধিমান। স্বাভাবিকভাবেই এই দাবিকে ঘিরে এখন চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। কারণ, কোভিড ১৯-এর আতঙ্কের থাবা কতটা ভয়ঙ্কর হয়ে নেমে এসেছে তা ভালোই ঠাহর করতে পারছে বিশ্ববাসী। এরমধ্যে একের পর এক ভ্যারিয়েন্টের হদিশ আতঙ্কের মাত্রাকে আরও কয়েকশ গুণ বাড়িয়ে দিয়েছে। এমতাবস্থায় ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্টের সন্ধান পাওয়াটা নতুন করে আতঙ্কের মাত্রাকে বাড়িয়েছে। তাই আর কে ধিমান-এর দাবি সত্যি বলে প্রমাণিত হলে মানুষের মনে অনেকটাই বল আসবে বলেই মনে করা হচ্ছে।
আর কে ধিমানের সঙ্গে ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্ট নিয়ে কিছু গবেষণা করেছেন আইসিআমআর-এর চিফ এপিডেমিওলজিস্ট ডক্টর সমীরণ পাণ্ডা। এই দুজনের দাবি হল, ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্টের ক্ষতিকর মাত্রা খতিয়ে দেখে এবং বিভিন্ন রিপোর্ট পড়ে তা বুঝেছেন যে এতে আক্রান্তদের হাসপাতালে ভর্তি হওয়ারও প্রয়োজন দেখা যাচ্ছে না। সুতরাং অহেতুক আতঙ্কগ্রস্ত না হওয়াটাই ভালো। এমনকী দুই বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের আরও দাবি যে, ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টে যেভাবে আক্রান্তদের অক্সিজেনের লেভেল পড়তে থাকে, ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্টে আক্রান্তদের ক্ষেত্রে তেমন কোনও লক্ষণ পরিলক্ষিত হয়নি।
Covid 19: ২০২২-এ শেষ হবে করোনা মহামারি, তবে বড় চ্যালেঞ্জ টিকার বৈষম্য বলল WHO
Omicron in India : এখনও ওমিক্রনের খোঁজ মেলেনি ভারতে, আশ্বাস স্বাস্থ্যমন্ত্রীর
এই বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের কথায়, ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের সন্ধান মেলার পর দেখা গিয়েছে আচমকাই মাত্রারিক্ত হারে বেড়ে গিয়েছিলেন কোভিড ১৯-এ আক্রান্তের সংখ্যা। এমনকী মৃত্যুর হারও প্রবলভাবে বৃদ্ধি পেয়েছিল। অথচ, ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্টের হদিশ মেলার পরও ডেল্টার মতো সংক্রমণের ঊর্ধ্বমুখী ট্রেন্ড এখানে ধরা পড়েনি। এর থেকেই পরিস্কার যে ওমিক্রণ ভ্যারিয়েন্ট নিয়ে যতটা আতঙ্ক তৈরি হয়েছে তা করলেও হবে। চিকিৎসক আর কে ধিমান জানিয়েছেন যে এখনও এদেশে ওমিক্রনের ভ্যারিয়েন্ট পাওয়া যায়নি। কিন্তু দক্ষিণ আফ্রিকায় আক্রান্তদের রিপোর্ট চিকিৎসক বিশেষজ্ঞরা খতিয়ে দেখছেন এবং বোঝার চেষ্টা করছেন এর সংক্রমণের রূপটা।