বিনামূল্য সকলকে করোনা টিকা, প্রধানমন্ত্রী মোদীর ঘোষণার পর পক্ষ আর বিপক্ষের মতামত

Published : Jun 07, 2021, 10:48 PM ISTUpdated : Jun 07, 2021, 10:49 PM IST
বিনামূল্য সকলকে করোনা টিকা, প্রধানমন্ত্রী মোদীর ঘোষণার পর পক্ষ আর বিপক্ষের মতামত

সংক্ষিপ্ত

  বিনামূল্যে করোনা টিকা দেবে কেন্দ্র  ঘোষণা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর  মোদীকে সমর্থন সহযোগী বিজেপি নেতাদের  তীব্র সমালোচনা বিরোধীদের 

সোমবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ঘোষণা করেছেন আগামী ২১ জুন থেকে ১৮ বছরের বেশি বয়সীদের বিনামূল্যে করোনাভাইরাসের টিকা দেওয়া হবে। প্রধানমন্ত্রীর এই ঘোষণাকে স্বাগত জানিয়েছে ভারচীয় মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন। সংস্থার পক্ষ থেকে স্পষ্ট করে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে মোদী সরকারের এই সিদ্ধান্ত করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে ভারতের যুদ্ধকে আরও শক্তিশালী করবে। অন্যদিকে মোদী বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলি প্রধানমন্ত্রীর সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানালেও সমালোচনা করতে পিছপা হয়নি। তালিকায় রয়েছেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় থেকে শুরু করে অধীর চৌধুরীর নাম। প্রধানমন্ত্রীর সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারী। 

সোমবার জাতির উদ্দেশ্যে ভার্চুয়াল ভাষণে প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন যে কেন্দ্রীয় সরকার ১৮-৪৪ বছর বয়সী প্রত্যেক ভারতীয় নাগরিককে বিনামূল্যে কোভিড ১৯ এর টিকা দেবে। কেন্দ্রীয় সরকার ভ্যাকসিন সংগ্রহ করবে ও তা রাজ্যে সরবরাহ করবে। কোনও রাজ্য সরকারকেই আলাদাভাবে ভ্যাকসিন কিনতে হবে না। দেশের প্রত্যেক নাগরিকই বিনামূল্যে করোনা টিকা পাবে বলেও জানিয়েছেন তিনি। ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনের প্রধান ডক্টর  জে জালাল প্রধানমন্ত্রীর এই ঘোষণাকে স্বাগত জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন সর্বজনীন টিকা ভারতে মহামারি সংকট থেকে বেরিয়ে আসতে সহযোগিতা করবে। এইমস-এর চিকিৎসক তথা কোভিড টাস্ক ফোর্সের সদস্য নভজিত ইউজও প্রধানমন্ত্রীর সিদ্ধান্তে খুশি হয়েছেন। 

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর এই ঘোষণার পর মুখ খুলেছেন দেশের রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বরা। বিরোধীরা প্রধানমন্ত্রীর সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানালেও দেরিতে সিদ্ধান্ত গ্রহণের জন্য সমালোচনা করছেন। আর তাঁর সমর্থকরা অবস্য মোদী বন্দনায় আরও একবার দরাজ হয়েছেন। 

 


রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, তিনি গত ফেব্রুয়ারি মাস থেকে বিনামূল্য টিকার দাবি জানিয়ে আসছিলেন। সেই জন্য একাধিকবার দিল্লির সরকারকে চিঠিও লিথেছিলেন। চার মাস পরে পরিস্থিতি চাপে পড়ে কেন্দ্রীয় সরকার এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তিনি আরও বলেছেন প্রধানমন্ত্রীর সিদ্ধান্ত দেরিতে গ্রহণেরর মূল্য অনেককে জীবন দিয়ে দিতে হয়েছে। 

 

প্রধানমন্ত্রীর এই সিদ্ধান্ত দেরিতে নেওয়া তীব্র সমালোচনা করেছেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী। তিনি বলেন টিকা প্রদানের বিষয়টি বিচারাধীন রয়েছে। সনিয়া গান্ধীও বিনামূল্যে টিকার দাবিতে প্রচারও শুরু করেছিলেন। 

সমালোচনায় সরব হয়েছেন কংগ্রেস নেতা পি চিদম্বরম। তিনি বলেন কেন্দ্রীয় সরকার ভুল থেকে শিক্ষা নিয়েছে। কেন্দ্রীয় সরকার দুটি ভুল করেছে। আর তা সংশোধন করার চেষ্টা করছে। প্রধানমন্ত্রী নিজে ভুল করে বিরোধীদের দোষারোপ করছেন বলেও অভিযোগ করেন চিদম্বরম।

কংগ্রেসের দুই মুখ্যমন্ত্রী ক্যাপ্টেন অমরিন্দর সিং ও ভূপেশ বাঘেলা বলেছেন দেরিতে হলেও কেন্দ্রের এই সিদ্ধান্তে উপকৃত হবে দেশের মানুষ।তাঁদের দাবি মোদী সরকার মেনে নিয়েছে বলেও জানিয়েছেন তাঁরা।   দিল্লির উপমুখ্যমন্ত্রী মনীষ সিসোদিয়া বলেছেন সুপ্রিম কোর্টের হস্তক্ষেপের জন্যই কেন্দ্রীয় সরকার ভ্যাকসিন নীতি বদল করতে বাধ্য হয়েছে। কেন্দ্রীয় সরকারে সিদ্ধান্ত এমন ছিল যেখানে রাজ্যগুলি না টিকা কিনতে পারছিল না তা বদল করতে পারছিল। 

ভারতের কমিউনিস্ট পার্ট ( মার্কসবাদী) বা সিপিএম বলেছে, বিনামূল্যে ভ্যাকসিন সরবরাহের বিষয়টিতে হস্তক্ষেপ করেছে সুপ্রিম কোর্ট। পাশাপাশি বেশ কয়েকটি রাজ্যও একই দাবি তুলেছে। তাতেই ভ্যাকসিন নীতিতে বদল করেছে কেন্দ্রীয় সরকার। তবে দলটির পক্ষ থেকে বেসরকারি হাসপাতালে ২৫ শতাংশ ভ্যাকসিন সরবরানের সিদ্ধান্তকে ভুল বলে চিহ্নিত করা হয়েছে। একই সুরেরই কথা বলেছেন সিপিআই। 

প্রধানমন্ত্রীকে সমর্থনঃ 
রাজনাথ সিং, জেপি নাড্ডা , বাংলার বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারী প্রধানমন্ত্রীর এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন। 

কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী অমিত শাহ প্রধানমন্ত্রী বিনামূল্যে ভ্যাকসিন নীতির কথা ঘোষণার জন্য তাঁকে স্বাগত জানিয়েছেন। 

প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিং বলছেন প্রধানমন্ত্রীর এই সিদ্ধান্ত দেশকে করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে আরও শক্তিশালী করবে। এই সিদ্ধান্ত জনহিতকরী বলেও দাবি করেছেন তিনি। 

ভরতীয় জনতা পার্টির জাতীয় সভাপতি ও রাজ্যসভার সাংসদ জেপি নাড্ডা এই সিদ্ধান্তের জন্য কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন মোদীকে। তিনি আরও বলেছেন করোনার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে মোদী দেশের মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছেন। 

বিজেপি মুখপাত্র তথা আইটিসেলের প্রধান অমিত মালব্য বলেছেন প্রধানমন্ত্রী নরম ছিলেন। কিন্তু তাঁর বার্তা ছিল স্পষ্ট আর পরিষ্কার। বিরেধী রাজ্যগুলি ভ্যাকসিন দিতে চেয়েছিল। কিন্তু তাতে তারা ব্যর্থ হয়েছে। তাই আবারও কেন্দ্রীয় সরকার টিকা প্রদানের বিষয়ে হস্তক্ষেপ করেছে। 

নন্দীগ্রামের বিজেপি বিধায়ক শুভেন্দু অধিকারীও প্রধানমন্ত্রী মোদীকে স্বাগত জানিয়েছেন। তিনি বসেছেন বাংলাসহ বেশ কয়েকটি রাজ্যে টিকা প্রদানে ব্যর্থ হওয়ার পরে কেন্দ্রের এই সিদ্ধান্ত যথেষ্ট কার্যকর। 


উত্তর প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ, বিজেপি নেতা জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়াও প্রধানমন্ত্রীর টিকা নীতির পাশে দাঁড়িয়ে বিরোধীদের সমালোচনায় সরব হয়েছেন। 

PREV
click me!

Recommended Stories

ইম্ফল রোডে তোলাবাজির অভিযোগ, ইউএনএলএফ ক্যাডারকে গ্রেফতার করল মণিপুর পুলিশ
'ভারত বাবরের দেশ নয়', হুঙ্কার রামদেবের, পাল্টা তোপ তৃণমূলের শত্রুঘ্নর