বিশ্বে এখন করোনাভাইরাসের নতুন এপি সেন্টার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। গত সোমবারই দেশটিতে মৃতের সংখ্যা ছুঁয়ে ফেলেছ হাজারের গণ্ডি। গত ২৪ ঘণ্টাতেও মৃত্যু হয়েছে হাজারের বেশি মানুষের হোয়াইট হাউসের চিকিৎসা বিশেষজ্ঞরা আশঙ্কা করছেন, পরিস্থিতি এমন চলতে থাকলে দেশে কোভিড ১৯ রোগে মৃত্যু হতে পারে এক লক্ষ থেকে আড়াই লক্ষ মানুষের। পরিস্থিতি সবচেয়ে খারাপ নিউইয়র্ক, নিউজার্সি এলাকায়। আমেরিকার ৯০ শতাংশ মানুষই এখন গৃহবন্দি হয়ে রয়েছে। বর্তমান বিশ্বে সবচেয়ে করোনা আক্রান্তরা রয়েছেন আমেরিকায়। দেশে আক্রান্তের সংখ্যা প্রায় চার লক্ষের কাছাকাছি। কোভিড ১৯-এর এখনো প্রতিষেধক আবিষ্কার না হওয়ায় ম্যালেরিয়ার ওষুধ দিয়েই চিকিৎসা চলছে মার্কিন মুলুকে। আর এই পরিস্থিতিতে বন্ধু নরেন্দ্র মোদীর কথাই মনে পড়েছে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের।
ইতিমধ্যে মোদীকে ফোন করে ম্যালেরিয়ার ওষুধ হাইড্রক্সিক্লোরোকুইন সরবরাহ করা জন্য এদেশের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে অনুরোধ করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। এদিকে ভারতে করোনাভাইরাসের সংক্রমণের পর পরই হাইড্রক্সিক্লোরোকুইনের রফতানির উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে কেন্দ্র।
জুনে পরিস্থিতি হবে সবচেয়ে খারাপ, সমীক্ষা বলছে লকডাউন চলতে পারে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত
আশঙ্কার কালো মেঘ আরও ঘনীভূত, পরিসংখ্যান বলছে দেশে ৬ দিনে আক্রান্তের সংখ্যা ছাড়াবে ১০ লক্ষ
বাতাস থেকে দ্রুত ছড়ানোর কোনও প্রমাণ মেলেনি, মারণ ভাইরাস নিয়ে আশার আলো দেখাল আইসিএমআর
ট্রাম্প সংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে বলেছেন, “ভারতে বিপুল পরিমাণে এই ওষুধ তৈরি হয়। সেখানে এই ওষুধের চাহিদাও রয়েছে প্রচুর। যে পরিমাণ ওষুধের বরাত দিয়েছি আমরা, তা সরবরাহ করার জন্য অনুরোধ জানিয়েছি ভারতকে।”
বন্ধু মোদীর কাছে ম্যালেরিয়ার প্রতিষেধকের জন্য ভিক্ষে করলেও কড়া বার্তা দিতে ভোলেননি ট্রাম্প। ওষুধ ভারত যদি না পাঠায় তা হলে বদলা নেওয়ার ইঙ্গিতও দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট।
মোদীর সঙ্গে হাইড্রক্সিক্লোরোকুইন-এর ব্যাপারে রবিবার ফোনে কথা হয় ট্রাম্পের। এ প্রসঙ্গে ট্রাম্প বলেন, ‘খুব ভালো কথা হয়েছে।’ পাশাপাশি তিনি জানিয়েছেন, ভারত যদি তাঁদেরকে হাইড্রক্সিক্লোরোকুইন দেয় তবে তাতে অবাক হওয়ার কোনও ব্যাপার নেই। ভারত অন্য দেশের জন্য এটি বন্ধ করেছে। ট্রাম্প জানিয়েছেন, ফোনালাপে মোদী বলেছেন, দেশে এই ওষুধ পর্যাপ্ত মজুত আছে কি না, তা ভালো করে যাচাই করে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
ডোনাল্ড ট্রাম্পের বক্তব্য, তিনি আশা করেন ভারত এই ওষুধ পাঠাবে, তবে ভারত যদি এই নিষেধাজ্ঞা না তোলে সেক্ষেত্রে ভারত ও আমেরিকার মধ্যেকার ভালো বাণিজ্য চুক্তির ইঙ্গিত টেনে ‘ব্যবস্থা’ নেওয়ার কথা বলেছেন ট্রাম্প।
গত ২৫ মার্চ নিঃশব্দে হাইড্রক্সিক্লোরোকুইনের রফতানিতে বিধিনিষেধ আরোপ করে কেন্দ্রীয় সরকার। করোনায় সংকটময় পরিস্থিতিতে এই ওষুধের যাতে আকাল না পড়ে, তার জন্যই তড়়িঘড়ি এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
এদিকে মার্কিন প্রেসিডেন্টের হুঁশিয়ারি পর ২৪টি অ্যাকটিভ প্যারাসিটামল রফতানির বিষয়ে নিষেধাজ্ঞা তুলে নিয়েছে ভারত সরকার। এবার আন্তর্জাতিক চাপের মুখে ম্যালেরিয়া প্রতিষেধক ওষুধ হাইড্রক্সিক্লোরোকুইন রফতানিতে মোদী সরকার ফের ছাড়পত্র দেয় কিনা সেটাই দেখার।