প্রবল চাপ নিয়েই স্ত্রী ও সন্তানদের নিয়ে দেশ ছেড়েছিলেন। একটি আন্তর্জাতিক সংবাদপত্রকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তেমনই অভিযোগ করলেন সেরাম ইনস্টিটিউটের কর্তা আদার পুনাওয়ালা। সম্প্রতি কেন্দ্রীয় সরকার তাঁকে Y বা ওয়াই ক্যাটাগরির নিরাপত্তা দিয়েছিল। এই নিরাপত্তা পাওয়ার পর এই প্রথম তিনি মুখ খুললেন। বর্তমানে দেশে করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় তরঙ্গে মারাত্মক আকার নিয়েছে। আর সেই কারণে করোনাভাইরাসের টিকা কোভিশিল্ড দ্রুততার সঙ্গে উৎপাদনের জন্যও তাঁর ওপর চাপ সৃষ্টি করা হয়েছিল বলেও জানিয়েছেন তিনি।
চলতি সপ্তাহের শুরুতেই সেরাম ইনস্টিটিউটের কর্তা আদার পুনাওয়ালাকে ওয়াই ক্যাটাগরির নিরাপত্তা নিয়েছিল কেন্দ্রীয় সরকার। সেই প্রসঙ্গে 'দ্যা টাইমস'কে দেওয়া একটি সাক্ষাৎকারে পুনাওয়ালা বলেছেন, করোনাভাইরাসের টিকা কোভিশিল্ড সরবরাহের দাবি জানিয়ে কয়েক জন প্রভাবশালী ব্যক্তি তাঁকে ফোন করেছিল। সেইসব প্রভাবশালীদের ফোনে ছিল প্রবল হুমকির সুর। আর দেশের প্রভাবশালী ব্যক্তিদের ফোন পাওয়ার পরেই তিনি দেশ ছেড়ে চলে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। সম্প্রতী তিনি রয়েছেন লন্ডনে। সঙ্গে রয়েছেন তাঁর স্ত্রী সন্তানরা। পুনাওয়ালা জানিয়েছেন 'দেশ ছেড়ে যাওয়ার সিদ্ধান্তের পিছনে রয়েছে হুমকি ফোন।' পুনাওয়ালা জানিয়েছে আপাতত তিনি লন্ডনেই থাকছেন। এই পরিস্থিতিতে তিনি দেশে ফিরতে চাইছেন না বলেও জানিয়েছেন।
পুনাওয়ালা জানিয়েছেন তিনি চান না এমন পরিস্থিতি তৈরি হোক যেখানে তিনি নিজের কাজটি ঠিক মত করতে পারবেন না। তিনি তাঁর কাজটি সঠিক ও সুষ্ঠুভাবে করার চেষ্টা করছেন। কিন্তু এক্স ওয়াই বা জেড তাঁকে সরবরাহের জন্য হুমকি দিতে পারে না বলেও মনে করেন তিনি। আর সরবরাহের জন্য তাঁরা কী কী পদক্ষেপ নিতে পারে তা নিয়েও তাঁর প্রশ্ন রয়েছে বলেও জানিয়েছেন ৪০ বছরে সেরাম কর্তা।
ভারতের করোনা সংকটের সময়ে পাশে থাকার বার্তা দিয়েও লাদাখে শক্তিবৃদ্ধি, সামনে এল চিনের দ্বিচারিতা ...
বেলাগাম করোনা মোকাবিলায় আরও কঠোর হল লকডাউন, দেখে নিন বিধিনিষেধ ..
গণনা শেষ হওয়া পর্যন্ত থাকতে হবে গণনা কেন্দ্রে, প্রার্থী ও এজেন্টদের কড়া নির্দেশ তৃণমূল নেত্রী মমতার...
বিশ্বের সব থেকে বড় টিকা প্রস্তুতকারক সংস্থা সেরাম। ভারতসহ প্রায় ৬৪টি দেশে করোনাভাইরাসের টিকা সরবরাহ করার বিষয়ে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হয়েছে। তিনি জানিয়েছেন বর্তমানে দেশে এমন পরিস্থিতিত তৈরি হয়েছে, যেখানে সকলেই চাইছেন টিকা নিতে। তাঁর কথায় 'প্রত্যাশা ও আগ্রাসনের স্তরটি প্রকৃতপক্ষে নজিরবিহীন। প্রত্যেকেই মনে হচ্ছে তাঁদের টিকা নেওয়া জরুরি। কিন্তু এই মনোভাব ঠিক নয়। এটা কেউই বুঝতে চাইছে না।
কথায় কথায় পুনাওয়ালা জানিয়েছেন, বিদেশে থেকলেও তিনি করোনা টিকা উৎপাদন ও তা সম্প্রসারণের সঙ্গে যুক্ত রয়েছে। বিদেশী সংস্থাগুলির সঙ্গেও যোগাযোগ করেছেন। ব্রিটেনকেই তিনি ভারেতর বাইরে অন্যতম বেসড বেসরকারি দেশ হিসেবে বেছে নিয়েছেন। আগামী কয়েক দিনের মধ্যে এই বিষয়ে একটি ঘোষণা হতে পারে বলেও ইঙ্গিত দিয়েছেন তিনি। সূত্রের খবর অক্সফোর্ড ও অ্যাস্ট্রোজেনিকা ভ্যাকসিনের অনুমদনের সময় পর্যন্ত সেরাম ৮০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার ব্যয় করে উৎপাদন ক্ষমতা ১.৫-২.৫ বিলিয়ন ডোজ করেছে। ৫০ মিলিয়ন কোভিশিল্ডের ডোজ মজুত রয়েছে। পুনাওয়ালা জানিয়েছেন তাঁর সংস্থা যাতে আরও সাহায্য পেতে পারে সেই দিকেই জোর দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে কোভিশিল্ডের দাম নিয়েও যে বিতর্ক তৈরি হয়েছে তা নিয়েও মুখ খুলেছেন সেরাম কর্তা। তিনি জানিয়েছেন বর্তমানে এটি বিশ্বের সবথেকে সাশ্রয়ী মূল্যের করোনা টিকা। মানের দিক থেকে কোনও রকম আপোস করা হয়নি। সংস্থা বিশাল কোনও লাভ না রেখেই টিকা তৈরিতে সমস্ত চেষ্টা করা হচ্ছে। তিনি আরও বলেন ভারত ও বিশ্বের জনগণের প্রতি দায়িত্ববোধ থেকেই তাঁরা টিকা তৈরিতে মনোনিবেশ করেছিলেন।