কোভিড-এ বেআব্রু গ্রমীণ ভারত, গাছেই আইসোলেন ওয়ার্ড বানালেন করোনা আক্রান্ত

  • কোভিডেই আক্রান্ত এক তরুণ 
  • বাড়িতে একটি মাত্র ঘর 
  • তাই গাছেই চড়ে কাটালেন ১১ দিন 
  • নিজেই বানিয়েছিলেন আইসোলেশন ওয়ার্ড 

Asianet News Bangla | Published : May 16, 2021 11:24 AM IST

এক দু'দিন নয়, টানা ১১টি দিন গাছে চড়েই কাটালেন তেলাঙ্গনার করোনা আক্রান্ত এই তরুণ। বাড়ির উঠানে বাঁশ দিয়ে মাছা তৈরি করে সেখানেই পেতেছিলনে বিছানা। সেটাই ছিল তঁর নিজের তৈরি করা আইসোলেশন ওয়ার্ড।  সেখানেই কেটেছে তাঁর করোনা আক্রান্ত দিনগুলি। তেলাঙ্গনার নালাগোন্ডা জেলার ঘটনা। সেখানে করোনাভাইরাস শুধু মহামারির চ্যালেঞ্জই নিয়ে আসেনি। একই সঙ্গে বেআব্রু  করে দিচ্ছে ভারতের পিছিয়ে পড়া শ্রেণির দৈনন্দিন জীবনের একাধিক সমস্যা। 

ভারত এমনই একটি দেশ যেখানে এখনও পর্যন্ত একান্নবর্তী পরিবার দেখা যায়। আর সেই পরিবারের প্রত্যেকের নিজের জন্য একটি সুনির্দিষ্ট ঘরও বরাদ্দ থাকে না। আরও খুলে বললেন তেমন কোনয়ও ব্যবস্থা করা সম্ভব নয়। রান্নাঘর বা বারান্দাই বরাদ্দ থাকে। তেমনই একটি পরিবারের সদস্য ১৮ বছরের শিব। চার জনের পরিবার। একটি মাত্র ঘর। আর সেখানেই রান্না হয়। তাই পরিবারের সদস্যদের করোনা আক্রান্ত হওয়ার থেকে বাঁচাতে নিজেই গাছে থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। নিজের জন্য গাছের ওপর বাঁশ দিয়েই মাচা তৈরি করেছিলেন। সেখানেই ছিলেন ১১টি দিন।  তাঁদের পরিবারের একটি শৌচাগার রয়েছে। তাই শৌচাগার ব্যবহারের ক্ষেত্রেও তিনি সাবধানতা অবলম্বন করেছিলেন বলেও জানিয়েছেন।শিবের মা জানিয়েছেন বেশিরভাগ দিনই সূর্য ওঠার আগে শিব প্রকৃতিক ক্রিয়া সারতে মাঠে চলে যেত। প্রযোজন ছাড়া শৌচাগার ব্যবহার করত না। 

ভারতের করোনা পরিস্থিতি কী লিখলেন অস্ট্রেলিয়ান ক্রিকেটার ম্যাথু হেডন, যা শেয়ার করলেন আনন্দ মহিন্দ্রা

শিব আরও জানিয়েছেন গ্রামের স্বেচ্ছাসেবীরা তাঁর কোভিড আক্রান্ত হওয়ার কথা গ্রাম প্রধানকে বলেছেন কিনা? তবে গ্রামবাসীরা কেই তাঁর দিকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেয়নি বলেও অভিযোগ করেন তিনি। শিবের কথা গ্রামের মানুষ ভয় পেয়েছিলেন। শিবের মা জানিয়েছেন তিনি আর তাঁর স্বামী দিনমজুরের কাজ করেন। তাই পরিবারের সকলের মধ্যে এই রোগ ছড়িয়ে পড়লে উপার্যন বন্ধ হয়ে যাবে। এই কথা চিন্তা করেই শিব একদম আলাদা থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

ব্ল্যাক ফাঙ্গাস থেকে কী ভাবে রক্ষা পাবেন, কোভিড রোগীদের সচেতন করে পরামর্শ হর্ষ বর্ধনের ... R 

গত ৪ মে শিব জানতে পেরেছিলেন তিনি করোনা পজেটিভ। গ্রামের স্বাস্থ্যকেন্দ্রে চিকিৎসার জন্য গিয়েছিলেন। স্বাস্থ্য কেন্দ্র থেকে শিবকে প্রয়োজনীয় ওষুধ দিয়ে দেওয়া হয়েছিল। তারপর বাড়িতে থাকার পরামর্শ দেওয়া হয়। শারীরিক অবস্থা সংকটজনক না হওয়ায় হাসপাতালে ভর্তির করার কোনও প্রশ্নই ওঠেনি। অগত্যা শিব বাড়িতে ফিরে আসে গাছেই তৈরি করে আইসোলেশন ওয়ার্ড। গ্রামে কোনও আইসোলেশন সেন্টার নেই। তাই ঝুঁকি নিয়ে তাঁকে গাছেই দিনরাত কাটাতে হয়েছে বলেও জানিয়েছিলেন তিনি। 

করোনা ক্লান্ত দেশে Covaxin-এ আশার আলো, ভারতে পাওয়া কোভিড স্ট্রেইনের বিরুদ্ধে কার্যকর এটি ... R

তেলাঙ্গনার কোথাান্দিকান্দা গ্রামে সাড়ে ৩০০টি পরিবারের বাস। সেথানে ১৩ মে আগে পর্যন্ত কোনও আইসোলেশন ওয়ার্ড ছিল না। সম্প্রতী তফশিলী উপজাতির ছাত্রাবাসকে আইসোলেশন কেন্দ্রে পরিণত করা হয়েছে।  তবে এই গ্রামে শিবই এক মাত্র সমস্যা নয়। আরও অনেকেই রয়েছেন কোভিড আক্রান্ত যারা এই ঘটনা প্রকাশ্যে আনছেন না। তাঁদের ভয় গ্রামের অন্যান্য বাসিন্দারা একছা জানার পরই সহযোগিতার হাত সরিয়ে নেবে। বেঁচে থাকাই দুষ্কর হয়ে যাবে। করোনা থেকে মুক্ত হওয়ার পরেই গ্রামের অনেক মানুষ আক্রান্তকে সহজে গ্রহণ করতে রাজি হননা বলেও জানিয়েছেন এলাকার মানুষ।

"

Share this article
click me!