টি২০ (T20)ও ওয়ান ডে (One Day) ক্রিকেট দলের অধিনায়কত্ব আগেই ছেড়েছেন বিরাট কোহলি (Virat Kohli)। এবার টেস্ট দলের অধিনায়কত্ব ছাড়লেন। ট্যুইট করে জানালেন সিদ্ধান্তের কথা। স্বাগত জানাল বিসিসিআই (BCCI)। জেনে নিন কোহলির অধিনায়কত্ব ছাড়ার পেছনে কী হতে পারে ১০টি কারণ।
টি২০ (T2o) ও ওডিআই (ODI)দলের অধিনায়কত্ব আগেই ছেড়েছিলেন। শনিবার টেস্ট দলের অধিনায়কত্ব ছাড়ার কথা ঘোষণা করলেন বিরাট কোহলি (Virat Kohli)। সোশ্যাল মিডিয়ায় (Social Media) নিজের অদিনায়কত্ব ছাড়া কথা জানান বিরাট কোহলি (Virat Kohli)। এই ৭ বছরে সততার সঙ্গে ১২০ শতাংশ দেওয়ার পাশাপাশি ধন্যবাদ জানিয়েছেন বিসিসিআই (BCCI) , এমএস ধোনি (MS Dhoni)ও রবি শাস্ত্রীকে (Ravi Shastri)। টেস্টে ভারতকে ৬৮টি ম্যাচে নেতৃত্ব দিয়েছেন বিরাট। এর মধ্যে ৪০টি ম্যাচে জিতেছেন এবং ১৭টি ম্যাচে হেরেছেন। ড্র হয়েছে ১১টি ম্যাচ। পরিসংখ্যান বলছে, সাদা জার্সিতে ভারতের সফলতম অধিনায়ক তিনি। কিন্তু হঠাৎ লাল বলের ক্রিকেটে বিরাটের অধিনায়কত্ব ছাড়ার সিদ্ধান্ত অবাক করেছে ক্রিকেট বিশ্বকে। জেনে নিন বিরাট কোহলির অধিনায়কত্ব ছাড়ার ১০টি কারণ-
১.টি ২০ দলের অধিনায়কত্ব স্বেচ্ছায় ছেড়েছিলেন বিরাট কোহলি। কিন্তু একদিনের দলের অধিনায়কত্ব ছাড়তে চাননি বিরাট। কিন্তু সাদা বলের ক্রিকেটে এক জন অধিনায়ক রাখার তত্ত্বের কারনে বিসিসিআই বিরাটকে ওডিআই অধিনায়কত্ব থেকে সরিয়ে দেন। যা নিয়ে বিরাটের অভিমান ছিল।
২. ওডিআই দলের অধিনায়কের পদ থেকে সরানোর পর বিসিসিআইয়ের সঙ্গে বিরাট কোহলির দ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে আসে। বোর্ড নাকি কোহলিকে সরে দাঁড়ানোর জন্য ৪৮ ঘণ্টা সময় দিয়েছিল, কিন্তু কোহলি রাজি না হওয়ায় তাঁকে বিসিসিআই-এর তরফেই সরিয়ে দেওয়া হয়। সৌরভ গঙ্গোপাধ্য়ায়ের সঙ্গে মত পার্থক্যের কারণেই এমন সিদ্ধান্ত হতে পারে বিরাটের।
৩.সব মিলিয়ে বিসিসিআই-এর দিক থেকে কোহলি চাপ অনুভব করছিলেন বলেই টেস্টের নেতৃত্ব ছেড়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে অনেকেই দাবি করছেন। আর কোহলির নেতৃত্ব ছাড়া নিয়ে কাঠগড়ায় তোলা হচ্ছে সৌরভকেই।
৪. এর আগে অস্ট্রেলিয়া বা ইংল্য়ান্ডের মত শক্তিশালী দলের বিরুদ্ধে তাদের ঘরের মাঠে গিয়ে হারিয়েছে ভারত। সেই অনুযায়ী দক্ষিণ আফ্রিকা অপেক্ষাকৃত অনভিজ্ঞ কম শক্ত দল ছিল। কিন্তু সেখানে সিরিজে এগিয়ে গিয়েও ২-১ ব্যবধানে হারতে হয়। দক্ষিণ আফ্রিকার মাটিতে প্রথমবার টেস্ট সিরিজ জয়ের সুযোগ হাতছাড়া হয় বিরাটের।
৫.টি২০ ও ৫০ ওভারে দলের বর্তমান অধিনায়ক রোহিত শর্মা। যদিও দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে রোহিতের অনুপস্থিতিতে অধিনায়কত্ব করবেন কেএল রাহুল। বিরাট শুধু টেস্ট দলের অধিনায়ক ছিলেন। কিন্তু দলের অন্দরে বিরাটের সঙ্গে ক্রিকেটারদের দূরত্ব বাড়ছিল বলেও মনে করছেন ক্রিকেট বিশেষজ্ঞরা।
৬. বর্তমানে বিরাট কোহোলির বয়স ৩৩। ক্রিকেট বিশেষজ্ঞদের মতে বয়স বাড়ার ফলে অধিনায়কত্ব ও ব্যাটিং একসঙ্গে চালিয়ে যাওয়াটা হয়তো অতিরিক্ত চাপ বলেও মনে হতে পারে। সেই কারণেই অধিনায়কত্ব ছাড়লেন তিনি।
৭. বিরাট তার অধিনায়কত্বের বেশিরভাগ সময় খেলেছেন কোচ রবি শাস্ত্রীর অধীনে। শাস্ত্রী-বিরাট জুটির সম্পর্কের রসায়ন কতটা মধূর ছিল তা আমাদের সকলের জানা। নতুন কোচ দ্রাবিড়ের সঙ্গে ব্যক্তিগত কোনও সমস্যা না হলেও মানসিকতার তফাৎও একটা কারণ হতে পারে বিরাটের অধিনায়কত্ব ছাড়ার।
৮.বিরাট কোহলিকে কেরিয়ারের প্রথম থেকেই 'রান মেশিন' বলা হয়ে থাকে। কিন্তু বিগত দুই বছরের বেশি সময় ধরে নিজের সেরা ফর্মে ছিলেন না বিরাট। ছিল না একটিও সেঞ্চুরি। ফলে ব্য়াটিংয়ে বেশি মনোনিবেশ করার জন্যই এমন সিদ্ধান্ত।
৯. এই বছর অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে রয়েছে টি২০ বিশ্বকাপ। পরের বছর ভারতের মাটিতে রয়েছে ৫০ ওভারের বিশ্বকাপ। এছাড়াও নিজের ক্রিকেট কেরিয়ারকে দীর্ঘায়িত করা ও চাপমুক্ত হয়ে খেলার জন্য এমন সিদ্ধান্ত নিতে পারেন বিরাট।
১০. শেষ কারণ হিসেবে পরিবারকে সময় দেওয়ার জন্যও এমন সিদ্ধান্ত নিতে পারেন বিরাট কোহলি। অধিনায়ক ও ব্য়াটসম্যান দুই দায়িত্ব সামলে পরিবারকে সময় দেওয়াটা সত্য়িই কঠিন। তাই ফ্যামিলি ম্যান বিরাট এই পথে হাঁটলেন।