কোভিডের কারণে গত দেড় বছরেরও বেশি সময় ধরে থমকে গিয়েছে সবকিছু। এর প্রভাব পড়েছে ক্রিকেটে। তবে, বায়ো-বাবলের কনসেপ্টকে জয় করে ইংল্যান্ডই প্রথম ক্রিকেট বিশ্বকে দেখিয়েছিল কীভাবে অতিমারির মধ্যেও ক্রিকেট ম্যাচের আয়োজন করা যায়। ক্রিকেট বাণিজ্যের মরা গাঙে আশা জাগিয়েছিল ভারত-ইংল্যান্ড টেস্ট। ম্যাঞ্চেস্টারের ওল্ড ট্র্যাফোর্ডে পষ্ণম টেস্ট ছিল সিরিজের ফয়সালাকারী ম্যাচ।
ক্ষিপ্ত ইসিবি চিফ টম হ্যারিসন। টেস্ট বাতিলের জন্য ভারতীয় ক্রিকেটারদের দিকেই আঙুল তুলেছেন তিনি। ইংল্যান্ড ক্রিকেট বোর্ডের সিইও টম হ্যারিসন শুক্রবার ম্যাঞ্চেস্টারে জানান, কোভিড ১৯-এর জন্য পষ্ণম টেস্ট বাতিল হয়নি। টেস্ট বাতিল হয়েছে ভারতীয় ক্রিকেটারদের আতঙ্কের জন্য। ভারতীয় ক্রিকেটাররা সারাক্ষণ ভেবে চলেছেন কোভিড ১৯ হলে তাঁদের কি হবে। আর জেরে তাঁরা সমানে নিজেদের আতঙ্কের প্রহর বাড়িয়ে চলেছেন বলেই মনে করছেন হ্যারিসন। মাঠের মধ্যে ভারতীয় ক্রিকেটাররা যাতে সবধরনের আরাম এবং চিকিৎসা পরিষেবা পান তার সব ব্যবস্থা করে দেওয়া হয়েছিল। এমনকী, দর্শকরা যাতে সবধরনের আরাম পান এবং কোভিড ১৯-এর সংক্রমণ হাত থেকে সুরক্ষিত থাকতে পারেন সে ব্যবস্থা করা হয়েছিল। কিন্তু ভারতীয় ক্রিকেটাররা কোনওভাবেই মাঠে নামতে চাননি। ইসিবি-র সিইও ভারতীয় টিম ম্যানেজমেন্টের আচরণেও চটেছেন।
কোভিডের কারণে গত দেড় বছরেরও বেশি সময় ধরে থমকে গিয়েছে সবকিছু। এর প্রভাব পড়েছে ক্রিকেটে। তবে, বায়ো-বাবলের কনসেপ্টকে জয় করে ইংল্যান্ডই প্রথম ক্রিকেট বিশ্বকে দেখিয়েছিল কীভাবে অতিমারির মধ্যেও ক্রিকেট ম্যাচের আয়োজন করা যায়। ক্রিকেট বাণিজ্যের মরা গাঙে আশা জাগিয়েছিল ভারত-ইংল্যান্ড টেস্ট। ম্যাঞ্চেস্টারের ওল্ড ট্র্যাফোর্ডে পষ্ণম টেস্ট ছিল সিরিজের ফয়সালাকারী ম্যাচ। ইতিমধ্যেই ভারত ২-১ এগিয়ে। প্রথম টেস্ট জিতে ভারতকে ধাক্কা দিয়েছিল ইংল্যান্ড। কিন্তু, সিরিজ যত এগোতে থাকে ভারত ততই আগ্রাসী হয়ে ওঠে। দুই দলের দুরন্ত ক্রিকেট সকলকে মুগ্ধ করেছে। ফলে ইসিবি ম্যাঞ্চেস্টার টেস্টে এক বিশাল অঙ্কের দর্শককে মাঠে আশা করছিল।
আরও পড়ুন- India-England Test- কোভিড ১৯ হল ভিলেন, বাতিল পঞ্চম টেস্ট, সিরিজের জয়-পরাজয় সিদ্ধান্ত রইল ঝুলে
ইসিবি সিইও টম হ্যারিসন জানিয়েছেন, গত কয়েক দিন ধরে যা ঘটে চলেছে তা সাংঘাতিক। ভারতীয় ক্রিকেটাররা কোনও নিয়ম তো মানেননি। সেই সঙ্গে যখন দ্বিতীয় ফিজিও জোগেশ পারমার-এর করোনা রিপোর্ট পজিটিভ আসে তখন সকলে কেমন যেন আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে পড়ে। জোগেশের সংস্পর্শে আসা সব ক্রিকেটারের সঙ্গে কথা বলা হয়। তাঁদের সবধরনের সহানুভূতি দেওয়া হয়। এমনকী এদের সকলেরই রিপোর্ট নেগেটিভ আসে। এরপরও ভারতীয় ক্রিকেটাররা মাঠে নামতে চাননি।
দেখুন ভিডিও- সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের বয়োপিক- এ কি থাকছেন দাদা, সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে সৌরভ নিজেই জানালেন সেই কথা
টম হ্যারিসন আরও জানিয়েছেন যে, 'এটা সত্যিকারে আমার কাছে একটা দুঃখের দিন। আমার হৃদয় ভেঙে গিয়েছে। আমরা সত্যি সত্যি হতবাক। আন্তর্জাতিক স্তরে এই ম্যাচে বিপুল সংখ্যক দর্শক হওয়ার কথা ছিল। বৃহস্পতিবার মধ্যাহ্নভোজের সময়ই বোঝা যায় ভারতীয় ক্রিকেটাররা আতঙ্কে ভুগছেন এবং কিছুই ঠিক নেই।'
হ্যারিসনের মতে, 'এটাকে কোনওভাবেই বলা যায় না যে কোভিড ১৯-এর জন্য ম্যাচ বাতিল হয়েছে। ভারতীয় ক্রিকেটারদের অতিমাত্রায় আতঙ্কিত হওয়াতেই ম্যাচ বাতিল হয়ে গিয়েছে। কারণ তাঁরা কল্পনায় আতঙ্ককে এমন একটা পর্যায়ে নিয়ে গিয়েছেন যে মাঠেই নামতে চাইছেন না।'
ম্যাচ বাতিলের সিদ্ধান্ত হতেই বিসিসিআই একটি লিখিত বিবৃতি প্রকাশ করে। সেখানে পরিস্কার করে জানানো হয় যে ম্যাচের আয়োজন পুনরায় করা যায় কি না তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। হ্যারিসন জানিয়েছেন যে, যদি ম্যাচ পুনরায় আয়োজন করা হয় তাহলে সেটা আর সিরিজের ফয়সালাকারী টেস্ট বলে বিবেচিত হবে না। এটা একটা আলাদা টেস্ট বলেই ধরা হবে। ফলে সিরিজের ফয়সালাকারী টেস্ট হিসাবে যে একটা উত্তেজনার পারদ চড়েছিল সেটা আর ফিরে আসবে না। তবে তাঁরা আরও বেশকিছু অপশন বিসিসিআই-এর সামনে রেখেছেন বলেও জানিয়েছেন হ্যারিসন। সেই সঙ্গে তিনি জানিয়েছেন যে ম্যাচ বাতিলের ফলে যে আর্থিক ক্ষতি হওয়ার কথা ছিল তা অনেকটা কম হবে। কারণ কোভিড পরিস্থিতির কথা ভেবে তারা আগে থেকে বিমা করিয়ে রেখেছিলেন। ফলে, ম্যাচ বাতিল হওয়ায় দর্শকদের টিকিটের অর্থ ফেরত দিতে খুব একটা অসুবিধা হবে না।