করোনা পরবর্তী সময়ে টেস্ট ক্রিকেটে যে আমূল পরিবর্তন আসতে চলেছে এই বিষয়ে কারও সন্দেহ নেই। এক প্রকার নিশ্চিত যে লাল বলের ক্রিকেটে বল পালিশের জন্য লালা বা ঘাম ব্যবহার বন্ধ করতে চলেছে আইসিসি। ইতিমধ্যেই ঘরোয়া ক্রিকেটে লালা বা ঘাম দিয়ে বল পালিশে নিশেধাজ্ঞা জারি করেছে অস্ট্রেলিয়ান ইনস্টিটিউট অব স্পোর্টস। কিন্তু ক্রিকেট শুরুর লগ্ন থেকে যে পদ্ধতি চলে আসছে সেই তা হঠাত বন্ধ করে দিলে বোলারদের সমস্যা হতে পারে। কারণ বলের পালিশের উপর অনেকাংশে নির্ভর করে সুইং। সব থেকে উল্লেখযোগ্য হল পেস বোলারদের রিভার সুইং করাতে হলে লাল বা ঘাম দিয়ে বলকে পালিশ করে এতদিন আবশ্যক ছিল । ফলে এই বিষয়ে নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন অনেকেই। কিন্তু করোনা পরবর্তী সময়ে প্লেয়ারদের নিরাপত্তা, সুরক্ষা ও সুস্থতার কথা ভেবে এই নিয়ম যে মানতেই হবে তাও ধরেই নিয়েছেন সকলে। বিগত কয়েকদিন ধরে ক্রিকেট সংক্রান্ত আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে এই বিষয়টি। লালা-ঘাম নিতান্ত ব্যবহার করা না গেলে লাল বলের ক্রিকেটে বেকায়দায় পড়বেন বোলাররা। তাই বোলারদের কথা চিন্তা করে, বলের স্যুইং পেতে করোনা পরবর্তী সময়ে কৃত্রিম পদার্থ ব্যবহারের বিষয়টিও ভেবে দেখছে আইসিসি। ফলে একসময় বল বিকৃতির আওতায় পড়ত যে বিষয়গুলি, সেগুলিই পরবর্তীতে স্বীকৃতি দিতে চলেছে বিশ্ব ক্রিকেটের নিয়ামক সংস্থা। বল পালিশের বিকল্প পদ্ধতি কী হতে পারে তাই নিয়ে জোর চর্চা চলছে ক্রিকেট বিশ্বে।
আরও পড়ুনঃভারতে খেলাধুলা শুরু করার নীল নকশা তৈরি করল অলিম্পিক সংস্থা,কী রয়েছে তাতে
আরও পড়ুনঃভারতীয় দলের বোলিং কোচ হওয়ার ইচ্ছে প্রকাশ শোয়েব আখতারের
বল পালিশে লালা-ঘামের পরিবর্ত কী হতে চলেছে। এই জল্পনার মধ্যেই কিছুটা স্বস্তির খবর নিয়ে বল প্রস্তুতকারক কোম্পানি কোকাবুরা। কোকাবুরা জানাল বলের পালিশ বজায় রাখতে এমন একটি মোমের প্রলেপ তারা বাজারে আনতে চলেছে, যা বিকল্প হতে পারে লালা কিংবা ঘামের। এব্যাপারে কোকাবুরার গ্রুপ ম্যানেজিং ডিরেক্টর জানিয়েছেন, ‘আমরা বল পালিশের ব্যাপারে লালা এবং ঘামের বিকল্প তৈরিতে দীর্ঘদিন ধরে গবেষণা চালিয়েছি। এবং অত্যন্ত আনন্দের সঙ্গে জানাচ্ছি বিকল্প হিসেবে আমরা মোমের তৈরি এক ধরনের প্রলেপ বাজারে আনতে চলেছি।’ কোকাবুরা ম্যানেজিং ডিরেক্টরের আরও সংযোজন, ‘এই প্রলেপ ব্যবহারে বোলাররা কোনওভাবেই বাড়তি সুযোগ-সুবিধা পাবেন না। ক্রিকেটের জৌলুসও কোনওভাবেই ব্যাহত হবে না। এটি বল পালিশের পদ্ধতিতে কেবল পরিবর্তন আনবে মাত্র।’ কোকাবুরার এই ঘোষণার পর কিছুটা আশার আলো দেখছেন বিশ্ব জুড়ে পেস বোলাররা। তবে লালা-ঘামের পরিবর্তে মোমের এই কৃত্রিম প্রোলেপ কতটা কার্যকর হবে তা নিয়ে প্রশ্ন থাকছেই। তবে আইসিসি অনুমতি দিলে বিষয়টি ব্যবহারের পরই পরিষ্কার হওয়া যাবে বলে মনে করছেন ক্রিকেট বিশেষজ্ঞরা। তর্ক-বিতর্ক থাকলেও প্লেয়ারদের সুরক্ষার বিষয়টি যে সবার উপরে তা মানছেন সকলেই।
আরও পড়ুনঃমদের দোকান খোলার সিদ্ধান্তকে কড়া ভাষায় সমালোচনা হরভজন সিংয়ের