দেশের হয়ে জিতেছেন ক্রিকেট বিশ্বকাপ, অর্থাভাবে বর্তমানে সবজি বিক্রেতা এই ক্রিকেটার

  • দেশের হয়ে জিতেছেন ক্রিকেট বিশ্বকাপ
  • প্রথম কয়েক দিন জুটেছিল সম্মান ও অভ্যর্থনা
  • কিন্তু বর্তমানে ভাগ্যে শুধুই অবহেলা আর বঞ্চনা
  • অভাবের তারনায় বিশ্বকাপ জয়ী এখন সবজি বিক্রেতা
     

Sudip Paul | Published : Aug 23, 2020 5:41 AM IST

দেশের হয়ে বিশ্বকাপ জিতেছেন কপিল দেব, মহেন্দ্র সিং ধোনি। বিশ্বকাপ জয়ের পর তাদের সম্মান, প্রতিপত্তি, যশ, অর্থ কোনও কিছুরই অভাব হয়নি। বছরের পর বছর কেটে গেলেও তারা দেশবাসীর কাছে 'সুপরা হিরোই'  থেকে যায়। আর থাকাটাই স্বাভাবিক। দেশের নাম বিশ্বের দরবারে যারা শীর্ষে নিয়ে যায় তাদের তো মাথায় করেই রাখা উচিৎ। কিন্তু বিষয়টি সকলের ক্ষেত্রে কি এক? সেই জায়গাটা ভাবার সময় এসেছে।  আহমেদাবাদের বাসিন্দা নরেশ তুম্বা। তিনিও ক্রিকেটে দেশের হয়ে প্রতিনিধিত্ব করেছেন। দেশের বিশ্বকাপ জয়ে নিয়েছেন গুরুত্ব পূর্ণ ভূমিকা। ভারতের নাম বিশ্ব মঞ্চে তিনিও উজ্জ্বল করেছেন। শুধু তফাৎ একটাই তিনি দৃষ্টিহীনদের ক্রিকেটে দেশের প্রতিনিধিত্ব  করেছেন। কিন্তু সম্মান প্রতিপত্তি, যশ, অর্থ কোনওটাই জোটেনি তার। ভাগ্যের বিড়ম্বনায় তিনি এখন বাজারে সবজি বিক্রেতা।

আরও পড়ুনঃআমিরশাহিতে লাফিয়ে বাড়ছে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা, নয়া চ্যালেঞ্জের মুখে আইপিএল

২০১৮ সালের দৃষ্টিহীনদের বিশ্বকাপ। ফাইনালে উঠেছিল ভারতীয় দল। প্রতিপক্ষ ছিল চিরপ্রতীদ্বন্দ্বী পাকিস্তান। ফাইনালে প্রথমে ব্যাট করে ৩০৮ রানের বিশাল টার্গেট দেয় পাক দল। এত বড় রানের লক্ষ্য মাত্রা দেখে প্রথমে কিছুটা ভেঙেই পড়েছিল ভারতীয় দল। কিন্তু অসাধ্য সাধন করে সেই ম্যাচ জিতেছিল ভারতীয় দল। দলের জয়ে গুরুত্বপূর্ণ ইনিংস খেলেছিলেন নরেশ তুম্বা। বিশ্বকাপ জিতে ইতিহাস রচনা করেছিল ভারতীয় ক্রিকেট দল। বিশ্বকাপ জয়ের পর প্রথম কয়েক দিন অনেক সংবর্ধনা, অভ্যর্থনা পেয়েছিলেন নরেশ তুম্বা। ভেবেছিলেন জীবনটাই হয়তো এবার বদলে যাবে  এবার। তাকে সকলে ধোনি, কপিলদের মতো মাথায় তুলে রাখবেন। কিন্তু শেষমেশ তা হয়নি। অর্থ তো দুরস্থ বেশিদিন তাকে মনেও রাখেননি কেউ। সম্মানের বদলে জুটেছে শুধুই অবহেলা। আক্ষেপের সুরে বিশ্বজয়ী ক্রিকেটার বলেছেন, নরেশ তুম্বা আক্ষেপ করে বলেন,'ধোনিরা বিশ্বকাপ জিতলে দেশ ও রাজ্যের সরকার কত টাকা, সম্মান প্রদান করে। কিন্তু  আমাদের মতো দৃষ্টিশক্তিহীন ক্রিকেটারদের জন্য কোনও উচ্ছ্বাস নেই! আর্থিক অনুদানও পাই না। আসলে আমাদের কখনওই সমান নজরে দেখা হয় না।'

আরও পড়ুনঃপ্রতি বছর আইপিএল জন্ম দেয় নতুন স্টারের,এবার কারা সম্ভাবনাময় তারকা, জেনে নিন এক নজরে

আরও পড়ুনঃনিজের ভবিষ্যৎ অনিশ্চিৎ, তা জেনেও আইপিএল ১৪ সহ বোর্ডের একবছরের পরিকল্পনা তৈরি সৌরভের

তাও ক্রিকেটে খেলে কোনও মতে চলছিল দিন। কিন্তু করোনা ভাইরাস মহামারী সব কিছু শেষ করে দিল। অভাবের সংসারে নরেশের কাঁধে ৫ জনের পরিবারের দায়িত্ব। তাই ক্রিকেট, ২২ গজ, ব্যাট-বল এখন অতীত। দেশকে দৃষ্টিশক্তিহীনদের ক্রিকেটে বিশ্বকাপ জেতানো এই ক্রিকেটার এখন বাজারে বসে সবজি বিক্রি করেন। সংসার চালাতে হিমশিম খাচ্ছেন নরেশ। ভারতের আহমেদাবাদের জামালপুর মার্কেটের এক কোণে বসে এখন সবজি বিক্রি করেই দিন কাটে তাঁর। বিশ্বকাপ খেলে আসার পর ম্যাচের পারিশ্রমিক ছাড়া বেশি কিছু পাননি। কোনও আর্থিক অনুদানও জোটেনি। দৃষ্টিহীন হওয়ায় কোনও চাকরিও জোটেনি নরেশের। অভাবের সংসার চালাতে দেশের বিশ্বজয়ী ক্রিকেটার সবজি ব্রিক্রিকেই ভাগ্যের পরিহাস বলে মেনে নিয়েছেন। আর এই ভাবেই নরেশের মত ক্রীড়া ব্যাক্তিত্বরা বারবার চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিচ্ছে ভারতীয় ক্রীড়া ক্ষেত্রেই বৈষম্যটা।
 

Share this article
click me!