
ভারতীয় দল (Indian Cricket Team) থেকে ঋদ্ধিমান সাহার (Wriddhiman Saha) বাদ পড়া নিয়ে তোলপার গোটা দেশ। ঋদ্ধির বাদ পড়ার প্রতিবাদে গর্জে উঠেছে শহর কলকাতা (Kolkata) থেকে ঋদ্ধির শহর শিলিগুড়িও। রাহুল দ্রাবিড় (Rahul Dravid) ও সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের (Sourav Ganguly) সঙ্গে কী কথা হয়েছিল তা সংবাদ মাধ্যমকে জানিয়েছেন ঋদ্ধিমান সাহা। যা বিতর্কের আগুনে ঘি ঢেলেছে। এই সবকিছুর মধ্যেই আরও একটি বিষয় নিয়ে তোলপার হচ্ছে ভারতীয় ক্রিকেট থেকে নেট দুনিয়া। তা হল সাংবাদিকতার নামে ঋদ্ধিকে রীতিমত 'হুমকি' দেওয়া। সোশ্যাল মিডিয়ায় (Social Media) একটি চ্যাট ফাঁস করেছেন ঋদ্ধিমান সাহা। সেখানে সাক্ষাৎকারের জন্য রীতিমত ঋদ্ধিকে 'হুমকি' দিচ্ছেন এক সাংবাদিক। কাকে সাক্ষাৎকার দিলে ঋদ্ধির ভালো হবে, সেই 'লাভ-লোকসানের' হিসেব বোঝাচ্ছেন ওই সাংবাদিক। ঋদ্ধি ওই সাংবাদিকের নাম প্রকাশ না করলেও নেট দুনিয়া গর্জে উঠেছে এর প্রতিবাদে। ঋদ্ধির পাশে দাঁড়িয়েছেন বীরেন্দ্র সেওয়াগ, প্রজ্ঞান ওঝার মত প্রাক্তন ক্রিকেটাররাও। কিন্তু ঋদ্ধির এউ চ্যাট ফাঁস প্রশ্ন তুলে দিয়েছে ভারতীয় ড্রেসিং রুম কী কন্ট্রোল করে 'মাফিয়া সাংবাদিকের' দল।
কী রয়েছে ঋদ্ধির ফাঁস করা চ্যাটে-
ঋদ্ধিমান সাহা যে স্ক্রিন শেয়ার করেছেন তাতে দেখা যাচ্ছে ১০টা ১৮ মিনিটে একটি চ্যাট ঋদ্ধিকে ওই সাংবাদিক লিখেছেন, 'আমার সঙ্গে একটা ইন্টারভিউ কর। (তোমার জন্য) ভালো হবে।' এক মিনিট পরেই আরও একটি মেসেজ এসেছে। তাতে বলা হয়েছে, 'ওরা (বোর্ড) একজন উইকেটকিপার বেছে নিয়েছে, যে সেরা উইকেটকিপার। তুমি ১১ জন সাংবাদিককে বেছে নেওয়ার চেষ্টা করছ, যাঁরা আমার কাছে সেরা নয়। এমন কাউকে বেছে নাও, যে তোমায় সবথেকে বেশি সাহায্য করতে পারবে।' রাত ১০ টা ৪৩ মিনিটের একটি মেসেজে বলা হয়েছে, 'তুমি ফোন করলে না। আমি কখনও তোমার ইন্টারভিউ নেব না। আমি একেবারে সহজে অপমান মেনে নিই না এবং এটা আমি মনে রাখব। এটা তোমার করা উচিত হয়নি।' তারইমধ্যে ঋদ্ধির পোস্ট করা স্ক্রিনশটে সন্ধ্যা ৭ টা ৩০ মিনিটে হোয়্যাটসঅ্যাপ কলের বিষয়টি ধরা পড়েছে। যা মিসড কল হয়ে গিয়েছিল। এই চ্য়াটের স্ক্রিন শট শেয়ার করে ঋদ্ধি লেখেন, 'ভারতীয় ক্রিকেটের প্রতি আমার যাবতীয় অবদানের পর তথাকথিত শ্রদ্ধেয় সাংবাদিকের থেকে এরকম বিষয়ের সম্মুখীন হতে হচ্ছে। এই পর্যায় নেমে গিয়েছে সাংবাদিকতা।'
প্রতিবাদে সরব প্রাক্তন ক্রিকেটার থেকে নেটিজেনরা-
ঋদ্ধিমান সাহার এই চ্যাট ফাঁস নেট দুনিয়ায় ঝড় তুলতে বেশি সময় নেয়নি। এমন সাংবাদিকতরা প্রতিবাদ করেছেন অনেকেই। শুধু নেটিজেনরা নয়, একাধিক প্রাক্তন ভারতীয় ক্রিকেটারও এই প্রসঙ্গে ঋদ্ধির পাশে দাঁড়িয়ে ওই সাংবাদিককেতুলোধনা করেছেন। প্রাক্তন ভারতীয় ওপেনার বীরেন্দ্র সেওয়াগ (Virender Sehwag) ঋদ্ধির ট্যুইট রিট্যুইট করে এমন সাংবাদিকতাকে 'চামচাগিরি' বলে উল্লেখ করেন। সেওয়াগ লেখেন,'খুব দুঃখজনক ঘটনা। এমন ভাষা প্রকাশ দেখে বলতেই হচ্ছে, ও মোটেই সম্মানীয় তো নয়ই, সাংবাদিকও নয়। স্রেফ চামচাগিরি। ঋদ্ধি, তোমার সঙ্গেই রয়েছি।'
এই ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ করেছেন ভারতের প্রাক্তন তারকা স্পিনার প্রজ্ঞান ওঝা (Pragyan Ojha)। ঋদ্ধির পাশে দাঁড়িয়ে সাংবাদিককে একহাত নিয়েছেন ওঝা। ওই সাংবাদিককে প্রয়োজনে বয়কট করার ডাকও দিয়েছেন তিনি। টুইটে প্রজ্ঞান ওঝা লিখেছেন,'প্লিজ ঋদ্ধি তাঁর নাম বলো! খেলোয়াড়দের প্রতিনিধি হিসেবে আমি তোমাকে কথা দিচ্ছি, বয়কট করা হবে সেই সাংবাদিককে।'
সাংবাদিকের পরিচয় খোঁজার চেষ্টা নেট দুনিয়ার-
দীর্ঘ বছর ধরে জাতীয় দলে খেলা ক্রিকেটারের পাশে দাঁড়িয়ে প্রতিবাদে সরব হয়েছে নেটিজেনরা। ঋদ্ধি ওই সাংবাদিকের পরিচয় না বললেও নেটাগরিকরা নানা সূত্র উদ্ধৃত করে কে ওই সাংবাদিক তা সামনে আনার চেষ্টা করেছেন। এমন 'হুমকি' বা 'মাফিয়া' সাংবাদিকতার জন্য সকলেই তাকে তুলোধনা করেছেন।
ফলে একদিকে যেমন কেন ভারতীয় দল থেকে কেন বাদ পড়লেন ঋদ্ধিমান সাহা তা নিয়ে উত্তাল ভারতীয় ক্রিকেট। বয়স না পারফরম্য়ান্স কোন ভিত্তিতে বাদ গেলেন ঋদ্ধি তার সঠিক উত্তর দিতে পারেননি নির্বাচকরাও। তারইমধ্যে সাংবাদিকতার নামে যদি 'হুমকির' শিকার হতে হয়ে জাতীয় স্তরের ক্রিকেটারদের তা সত্যিই অনভিপ্রেত।