সেই সময় ছিল না আইপিএল, সৌরভ-সচিনকে বল করা ক্রিকেটার এখন চা বিক্রেতা
- FB
- TW
- Linkdin
অসমের প্রাক্তন ক্রিকেটার প্রকাশ ভগত। একসময় ঘরোয়া ক্রিকেটে সারা জাগিয়েছিলন এই বাঁ-হাতি স্পিনার। অসমের জার্সিতে অনুর্দ্ধ-১৭ ক্রিকেটে বিজয় মার্চেন্ট ট্রফিতে বিহারের বিরুদ্ধে হ্যাটট্রিক সহ সাত উইকেট নিয়েছিলেন।
অসমের হয়ে রঞ্জি ট্রফিতে খেলেছেন প্রকাশ ভগত। শিলচর আন্তঃজেলা ক্রিকেট চ্যাম্পিয়নশিপ জিতে নুরুদ্দিন ট্রফি পেয়েছিলেন। সেই দলের অধিনায়কও ছিলেন প্রকাশ ভগত।
২০০৩ সালে এনসিএ-তে আসন্ন নিউজিল্যান্ড সিরিজের প্রস্তুতি সারছিল ভারতীয় ক্রিকেট দল। ড্যানিয়েল ভেত্তোরিকে খেলার জন্য একজন ভালো বাঁ-হাতি স্পিনার খুঁজছিল ভারতীয় ক্রিকেটার। সেই সময় এনসিএ থেকে ফোন করে ডাকা হয়েছিল প্রকাশ ভগতকে।
সচিন-সৌরভদের প্রস্তুতিতে বল করেছিলেন তিনি। তার প্রতিভা পছন্দ হয়েছিল ভারতীয় ক্রিকেটারদের। তারপর একাধিকবার অনুশীলনে প্রকাশ ভগতকে খুঁজতেন সৌরভ-সচিনরা। ভারতীয় ক্রিকেটারদের সঙ্গে ছবিও রয়েছে প্রকাশের।
২০০৯-২০১০ এবং ২০১১-১২ মরশুমে অসমের হয়ে রঞ্জি দলে খেলেন তিনি। ২০১১ সালে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয় প্রকাশ ভগতের বাবার। চরম অভাবের সংসারে পুরো দায়িত্ব এসে পড়ে প্রকাশের কাঁধে।
সংসারের চাপে বেশি দিন আর ক্রিকেট চালিয়ে যেতে পারেননি প্রকাশ ভগত। শিলচরে দাদার চায়ের দোকান ছিল। ক্রিকেট ছেড়ে সরাসরি দোকানেই বসে যান তিনি। সেখানেই চা-ডালপুরি বিক্রি করেন তিনি।
তাও কোনওমতে চলে যাচ্ছিল দিন। কিন্তু করোনা অতিমারী ও লকডাউন শেষ করে দিয়েছে সবকিছু। ফলে এমনিতেই রাস্তায় লোকজন কম, যারা বেরোচ্ছে বাইরের খাবার খাচ্ছে না খুব একটা সংক্রমণের ভয়ে। ফলে ব্যবসার অবস্থা খুব খারাপ। কার্যত অনাহারে দিন কাটছে প্রকাশের।
হতাশার সুর প্রকাশের গলাতেও। বলেন,'কিছু বলার নেই। আমরা এমনিতেই দিন এনে দিন খাওয়া পরিবার। লকডাউনে কার্যত অভুক্ত থাকতে হচ্ছে আমাদের। সারাদিনে দোকানে যা বিক্রিবাটা হয়, তাতে দুবেলা খাবার জোটানো সম্ভব নয়।
এছাড়াও প্রকাশ বলেন,'আমার সঙ্গে যাঁরা রাজ্যস্তরে খেলত, তাঁরা সবাই সরকারি চাকরি পেয়েছে। প্রত্যেকেই জীবনে প্রতিষ্ঠিত। আর আমি এখনো লড়াই করছি প্রতিদিন।'
এক ক্রিকেটারের স্বপ্ন শেষ হয়ে গেল। চা-ডালপুরি বিক্রি করছেন তিনি। রাজ্যস্তরে খেলা অন্য়ান্য ক্রিকেটাররা যেখানে প্রতিষ্ঠিত। সেখানে প্রকাশের ক্ষেত্রে কেন এমন দ্বিচারিতা। তা নিয়েও প্রশ্ন উঠছে।