মহালয়া উপলক্ষ্যে মিটিংয়ের আয়োজন করা হয়েছিল। সেখানে আলোচনার মধ্যে দিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় যে সাহানগর ওমরাহগঞ্জ মহিলা দুর্গোৎসব সমিতির মাতৃ আরাধনা শুরু হবে পঞ্চমীতে বস্ত্র বিতরণের মধ্য দিয়ে।
দেবীপক্ষ (Devi Paksha) শুরু হতেই নজির গড়লেন লালবাগ শহরের প্রমিলা বাহিনীর সদস্যরা। বন্ধ হতে বসা দীর্ঘদিনের দুর্গাপুজোর (Durga Puja) দায়িত্ব নিজেদের কাঁধে তুলে নিলেন তাঁরা। আর তাঁদের এই সিদ্ধান্তে খুশি স্থানীয় বাসিন্দারা।
মহালয়া (Mahalaya) উপলক্ষ্যে মিটিংয়ের আয়োজন করা হয়েছিল। সেখানে আলোচনার মধ্যে দিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় যে সাহানগর ওমরাহগঞ্জ মহিলা দুর্গোৎসব সমিতির মাতৃ আরাধনা শুরু হবে পঞ্চমীতে বস্ত্র বিতরণের মধ্য দিয়ে। তারপর পুজার কটা দিন সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতা, পরিবেশ সচেতনতা মূলক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হবে। আর নবমীর দিন পাড়া অরন্ধন দিবস পালিত হবে। তাই ওই দিন খাওয়া দাওয়া হবে পুজো মণ্ডপেই। আর এসবের আয়োজন করতে হাতে হাত ধরে এগিয়ে এসেছেন সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মহিলারাও।
আরও পড়ুন- ঘাটালে এখন 'দুয়ারে' নদী, বাড়ির সামনে প্লাবনের জলে তর্পণ স্থানীয়দের
অর্থের জোগান না থাকায় বছর ৮-এর এই সাহানগর ওমরাহগঞ্জ সর্বজনীন দুর্গোৎসবের পুজো বন্ধ হতে বসেছিল। কিন্তু, পাড়ার ঐতিহ্য কোনওভাবেই নষ্ট হতে দেওয়া যায় না। তাই এলাকার মহিলারা নিজের কাঁধে যাবতীয় দায়িত্ব তুলে নিলেন। আর অর্থের যোগান দিতে পাড়ার প্রতিটি পরিবারের কাছে মাসে মাসে গিয়ে চাঁদা তোলা হবে বলেও ঠিক হয় মিটিংয়ে। তবে সেখানেও কোনও জোর জুলুম নেই, যে যেমন পারেন ক্ষমতা মত তেমনই চাঁদা দেবেন। কেয়া দাস, নিরুপমা রায়দের সঙ্গে বাড়ি বাড়ি গিয়ে চাঁদা তোলার কাজে সহায়তা করতে এগিয়ে আসেন রূম্পা বেগম, ইতি বেগমরা। মুর্শিদাবাদে এযেন এক অনন্য বন্ধন গড়ে তুলেছে সাহানগর ওমরাহগঞ্জ মহিলা দুর্গোৎসব সমিতি।
আরও পড়ুন, Mahalaya: আজ মহালয়া, ভোর রাত থেকেই শুরু তর্পণ, কড়া নিরাপত্তা বাংলার ঘাটগুলিতে
সেখানে যেমন সম্প্রীতির মেল বন্ধন অটুট থাকেছে, তার পাশাপাশি এই পুজোকে ঘিরে একে অপরের সঙ্গে সম্পর্ক আরও মজবুত হচ্ছে। এই বিষয়ে পুজা কমিটির সম্পাদক নমিতা ভট্টাচার্য বলেন, "এই যে আমরা প্রতি মাসে বাড়ি বাড়ি চাঁদা তুলতে যাব। মূলত মহিলাদের কাছ থেকেই আমরা চাঁদা সংগ্রহ করব। ওই চাঁদা সংগ্রহ করতে গিয়ে একটি পরিবারের ভালো মন্দ টের পাই, জানতে পারি পরিবারের সুখ দুঃখের কথা। সেখানেও যদি কোনও সমস্যা দেখি তাহলে একটি সাংসারিক জীবনকে সাজিয়ে তুলে হাসি ফোটাই পরিবারে। এটাও আমাদের কাছে পরম প্রাপ্তি।"
আরও পড়ুন- পুজোয় প্যান্ডেল হপিং সেরে ফেলুন সপ্তমীর মধ্যে, অষ্টমী থেকে ফের বৃষ্টির পূর্বাভাস কলকাতায়
পুজোর কয়েকটা দিন বাড়ির সব কাজ ভুলে যান এই এলাকার বাসিন্দারা। মেতে থাকেন পুজোর আনন্দে। একসঙ্গে পুজোর জোগার করেন তাঁরা। সবজি কাটা থেকে পুজোর আয়োজন করা সবই একসঙ্গে করেন এই এলাকার মহিলারা। তাঁদের সাহায্য করেন পূরবী বেগম ,নূরজাহান বেগমরা। তাঁদের কথায়, "পুজার দিনগুলিতে যা আনন্দ হয় তাকে ঘিরেই আমরা গোটা বছর মেতে থাকি। পুজো শেষ হয়ে যাওয়ার পরই ফের আগামী বছরের অপেক্ষায় দিন গুনব।"