সংক্ষিপ্ত
কয়েক দিনের ভারী বৃষ্টিতে জলমগ্ন ঘাটাল। তারপর উপর আবার ডিভিসি জল ছাড়ায় পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়ে যায়। বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে সেখানে। রাস্তার কোনও দেখা পাওয়া যাচ্ছে না। সব জায়গাতেই কোমর জল। এখন সেখানকার মানুষের একমাত্র ভরসা নৌকা।
পূর্বদিকে সামান্য ভোরের আলো ফোটার সঙ্গে সঙ্গেই বেজে ওঠে অ্যালার্ম। তখনই ঘুম থেকে উঠে পড়েন অনেকেই। এরপর প্রায় সব বাড়ি থেকেই ভেসে আসে বীরেন্দ্র কৃষ্ণ ভদ্রের (Birendra Krishna Bhadra) গলায়, 'আশ্বিনের শারদপ্রাতে বেজে উঠেছে আলোক মঞ্জীর; ধরণীর বহিরাকাশে অন্তরিত মেঘমালা; প্রকৃতির অন্তরাকাশে জাগরিত জ্যোতির্ময়ী জগন্মাতার আগমন বার্তা।' মহালয়া শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই শুরু হয় তর্পণের (Tarpan) জন্য তোড়জোর। বেশিরভাগ বাঙালির মহালয়ার (Mahalaya) দিনটা শুরু হয় খানিকটা এভাবেই। আজ মহালয়া উপলক্ষ্যে রাজ্যের প্রায় সব জায়গাতেই এই ছবি ধরা পড়েছিল। গঙ্গার (Ganges) ঘাটগুলিতে উপচে পড়েছিল ভিড়। রাজ্যের বাকি জায়গার পাশাপাশি এই ছবি ধরা পড়েছে পশ্চিম মেদিনীপুরের (West Medinipur District) ঘাটালেও। কিন্তু, ছবিটা একটু হলেও যেন অন্যরকম।
আরও পড়ুন, Mahalaya: আজ মহালয়া, ভোর রাত থেকেই শুরু তর্পণ, কড়া নিরাপত্তা বাংলার ঘাটগুলিতে
কয়েক দিনের ভারী বৃষ্টিতে (Heavy Rain) জলমগ্ন (Water logged) ঘাটাল। তারপর উপর আবার ডিভিসি জল ছাড়ায় পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়ে যায়। বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে সেখানে। রাস্তার কোনও দেখা পাওয়া যাচ্ছে না। সব জায়গাতেই কোমর জল। এখন সেখানকার মানুষের একমাত্র ভরসা নৌকা। বন্যা পরিস্থিতির সৌজন্যে এখন দুয়ারে শিলাবতী নদী পৌঁছে গিয়েছে। বাড়ির উঠানেই প্রবেশ করেছে গঙ্গা। বাড়ির সামনে দিয়েই ২৪ ঘণ্টা বয়ে যাচ্ছে জল।
আরও পড়ুন- পুজোয় প্যান্ডেল হপিং সেরে ফেলুন সপ্তমীর মধ্যে, অষ্টমী থেকে ফের বৃষ্টির পূর্বাভাস কলকাতায়
তাই আর আলাদা করে নদীতে গিয়ে তর্পণ করার প্রয়োজন পড়েনি সেখানকার বাসিন্দাদের। বাড়ির সামনে রাস্তাতে বেরিয়ে কোমর জলে দাঁড়িয়েই তর্পণ করেন তাঁরা। বন্যা পরিস্থিতির জেরে সেখানে তর্পণের ছবিটাই পাল্টে গিয়েছে। অন্য বছর ঘাটালের শিলাবতী নদীতে (Shilabati River) তর্পণ করতেন বাসিন্দারা। সকাল থেকেই সেই নদীর ধারে ভিড় লক্ষ্য করা যেত। কিন্তু, এবছর পাল্টে গিয়েছে ছবিটা। প্লাবিত ঘাটালের বিস্তীর্ণ এলাকা। তাই প্রতি বছর নদীতে গিয়ে যেভাবে তর্পণ করেন সেভাবেই এবার বাড়ির সামনের জমা জলে দাঁড়িয়ে তর্পণ করলেন তাঁরা।
আরও পড়ুন-শিকেয় কোভিড বিধি, মহালয়ায় মা দুর্গার চক্ষুদান দেখতে ভিড় উপচে পড়ল কুমোরটুলিতে
কিছু মানুষকে আবার রেডিওতে মহালয়া শুনতেও দেখা গিয়েছে। অন্য সময় সাধারণত অনেকেই চায়ের দোকানে বসে রেডিও শোনেন। কিন্তু, এখন গোটা এলাকা জলমগ্ন হওয়ায় তার কোনও সম্ভাবনা নেই। তাই নৌকার উপর বসেই তাঁদের হাতে রেডিও নিয়ে মহালয়া শুনতে দেখা গিয়েছে। আসলে প্লাবিত ঘাটালের বিস্তৃর্ণ এলাকা। বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন। টিভির কেবল লাইনও বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। তাই মহালয়ার দিন ভোরে নৌকায় করে ঘুরতে ঘুরতে মহালয়া শুনলেন অনেকেই। আর এভাবেই প্লাবিত ঘাটালের চারিপাশ থেকেই মহালয়ার ভোরে ভেসে এল বীরেন্দ্র কৃষ্ণ ভদ্রের গলা। প্লাবিত এলাকা ঘাটাল থেকে আজ সকালে উঠে এল এই ছবি।