এ বার সৌরভ দাসের কথাতেও স্পষ্ট আশাভঙ্গের সুর। তা হলে কি ভালবাসাকে হারিয়ে জিতে গেল ঈশ্বরের আস্ফালন?
‘ক্রমশ অতলে তলিয়ে যাচ্ছে ঐন্দ্রিলা’, ব্যাংকক থেকে বৃহস্পতিবার এশিয়ানেট নিউজ বাংলাকে এক কথায় যাবতীয় পরিস্থিতি জানালেন সৌরভ দাস। বুধবার রাত ২টোয় সব্যসাচী চৌধুরীর পোস্ট। তার কিছু ক্ষণের মধ্যেই ফেসবুকে দ্বিতীয় পোস্টটি আসে সৌরভের থেকে। অভিনেতা ব্যাংককে ‘বিবাহ অভিযান ২’-এর শ্যুটে ব্যস্ত। সেখান থেকেই তাঁর মিনতি, ‘বেঁচে আছে এখনও। মেরে ফেলো না ওকে। পায়ে পড়ছি...!’ হাসপাতাল সূত্রে খবর, হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার পরেই ফের ভেন্টিলেশনে নিয়ে যাওয়া হয় ঐন্দ্রিলাকে। সেখানেই এখনও রয়েছেন তিনি।
বুধবার রাতে ফেসবুকে সুনামি। মাঝরাতে খবর ছড়িয়ে ঐন্দ্রিলা শর্মা নেই। চোখের নিমেষে সেই পোস্ট আগুনের ফুলকির মতো ছড়িয়ে পড়েছে। এবং দেখতে দেখতে দাবানল। বাংলার চোখ থেকে ঘুম উধাও। পোশাকশিল্পী থেকে শুরু করে অভিনেতা-অভিনেত্রী হয় আম জনতা— ফেসবুকেই ভেঙে পড়েছেন। রাত তখন দুটো। সব্যসাচী চৌধুরী বাধ্য হয়ে কলম ধরেছেন। তাঁর কাতর মিনতি, ‘আর একটু থাকতে দাও ওকে… এ সব লেখার অনেক সময় পাবে।’ সেই পোস্ট ধুলোপড়ার মতো কাজে দিয়েছে। নিমেষে থমথমে পরিবেশ। সবাই শোকার্ত তখনও। কিন্তু সেই শোক অনেকটাই সংযত। নতুন করে আশায় বুক বেঁধেছেন সবাই। অনেকেই ফেসবুকে দুঃখপ্রকাশ করেছেন। ক্ষমা চেয়েছেন সব্যসাচীর কাছে। সরিয়ে নিয়েছেন তাঁদের পোস্ট।
এই বিষয়টিও চোখ এড়ায়নি সৌরভের। তিনি বৃহস্পতিবার বেলায় বিষয়টি নিয়ে ফের তোপ দেগেছেন সামাজিক পাতায়। এ বার তাঁর পোস্ট, ‘নিশ্চিত, Video বানিয়েও রাখা হয়েছে? এবং আপনি তাঁকে কতটা ভালোবাসতেন বা শেষ যখন তার সঙ্গে দেখা হয়েছিল সেই আবেগময় পোস্ট? সামাজিক প্রতিবন্ধীর দল!’ এ দিকে, গত সপ্তাহে যে স্থিতিশীল অবস্থায় পৌঁছেছিলেন, সেই অবস্থা গত কয়েক দিন ধরেই নেই ঐন্দ্রিলার। বিশেষ করে মঙ্গলবার রাতে অবস্থার যথেষ্ট অবনতিই ঘটেছিল। সোমবারে ফেসবুকে ঐন্দ্রিলাকে নিয়ে পোস্ট দেন সব্যসাচী। তাঁর বক্তব্যে স্পষ্ট হতাশা ফুটে ওঠে। তিনি দৈবশক্তি এবং অলৌকিকত্বের উপরে নির্ভর করতে বলেন সবাইকে। ঘনিষ্ঠ সূত্রে খবর, ভেন্টিলেশন লাগোয়া একটি ঘরে নিজেকে বন্দি করে নিয়েছেন সব্যসাচী। সেখান থেকে এক মুহূর্তের জন্য নড়ছেন না। এত দিন তাঁকে আগলে রাখতেন অভিনেতা এবং ‘হোঁদল’ রেস্তরাঁর তিন কর্ণধারের অন্যতম সৌরভ দাস। তিনি সোমবার রাতে ব্যাংককের উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছেন। মঙ্গলবার থেকে ‘বিবাহ অভিযান ২’-এর শ্যুট শুরু হয়েছে তাঁর। খবর, তিনি চলে যাওয়াতে অনেকটাই অসহায় বোধ করছেন সব্যসাচী।
সব্যসাচী-ঐন্দ্রিলার জন্য মনখারাপ সৌরভেরও। এশিয়ানেট নিউজ বাংলাকে মঙ্গলবার হোয়াটসঅ্যাপ বার্তায় জানিয়েছেন, তিনি বাইরে শ্যুটে গিয়েছেন। মন পড়ে রয়েছে কলকাতায়। এই ক’দিনেই সব্যসাচী তাঁর বন্ধু কম ভাই বেশি। এই অবস্থায় তাঁকে একা ছেড়ে আসতে মন সায় দেয়নি। কিন্তু তিনিও নিরুপায়। একই সঙ্গে ঐন্দ্রিলার অবস্থা দেখে ভেঙে পড়েছেন তিনিও। বলেছেন, ‘আমরা প্রচুর লড়েছি। হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে অসম্ভব লড়ছে মেয়েটা। এ বার পুরোটাই ঈশ্বরের উপরে ছেড়ে দিচ্ছি। আপনারা সবাই মন থেকে প্রার্থনা জানান। যদি তাতে কোনও অলৌকিক ঘটনা ঘটে।’ এ বার তাঁর কথাতেও স্পষ্ট আশাভঙ্গের সুর। তা হলে কি ভালবাসাকে হারিয়ে জিতে গেল ঈশ্বরের আস্ফালন?
আরও পড়ুন
কখনও ভাল কখনও মন্দ ঐন্দ্রিলা, পরপর হৃদরোগের ধাক্কা কিছুটা সামলেছেন অভিনেত্রী?
‘যার কাছে প্রার্থনা তিনি ফেসবুক করেন?’ সব্যসাচী-ঐন্দ্রিলাকে বিঁধলেন ঋত্বিক!
‘সিরিজে সব্যসাচীও ছিলেন, ঐন্দ্রিলা কিন্তু আমার সঙ্গে প্রেমের দৃশ্যে সাবলীল’! স্মৃতি উজাড় নায়কের