
মঙ্গলবার রাত থেকে পরপর হৃদরোগে আক্রান্ত হয়েছেন ঐন্দ্রিলা শর্মা। বুধবার হাওড়া বেসরকারি হাসপাতালের চিকিৎসক দল এ কথা জানাতেই বিষণ্ণ বাংলা। তা হলে কি মৃত্যুর কাছে ভালবাসা পরাজিত? সব্যসাচী চৌধুরী জিতবেন না? কোনও ভাবেই কি অলৌকিক কিছু ঘটবে না? শহরজুড়ে, রাজ্যজুড়ে চলছে প্রার্থনা। ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত, অরিন্দম শীল, সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায়, রিমঝিম গুপ্ত এবং সমস্ত প্রযোজনা সংস্থা বুধবার সারা দিন ধরে ঐন্দ্রিলার সুস্থতা চেয়ে আন্তরিক শুভ কামনা জানিয়েছেন। তারই শুভ প্রভাব কি ছুঁয়ে গেল অভিনেত্রীকে? হাসপাতাল এবং ঘনিষ্ঠ সূত্রে খবর, কখনও ভাল কখনও মন্দ ঐন্দ্রিলা। তার মধ্যেও সামান্য স্বস্তি, গতকাল রাত থেকে হওয়া পরপর হৃদরোগের ধাক্কা একটু সামলেছেন। চিকিৎসকেরা তাই আশা ছাড়ছেন না।
তা হলে কি তুলনায় ভাল ঐন্দ্রিলা? এশিয়ানেট নিউজ বাংলা প্রশ্ন রেখেছিল হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে। খবর, ঐন্দ্রিলা সম্বন্ধে এখনই কোনও মন্তব্য করতে নারাজ চিকিৎসক দল। তাঁরা কড়া পর্যবেক্ষণে রেখেছেন ‘জিয়ন কাঠি’র নায়িকাকে। এখনও তিনি ভেন্টিলেশনেই রয়েছে। জ্বর আসছে যাচ্ছে। পুরোপুরি ছেড়ে যায়নি। সংক্রমণও রয়েছে। নতুন অ্যান্টিবায়োটিক কোর্স পুরোদমে চলছে। গত সপ্তাহে যে স্থিতিশীল অবস্থায় পৌঁছেছিলেন, সেই অবস্থা গত কয়েক দিন ধরেই নেই। বিশেষ করে মঙ্গলবার রাতে অবস্থার যথেষ্ট অবনতিই ঘটেছিল। সোমবারে ফেসবুকে ঐন্দ্রিলাকে নিয়ে পোস্ট দেন সব্যসাচী। তাঁর বক্তব্যে স্পষ্ট হতাশা ফুটে ওঠে। তিনি দৈবশক্তি এবং অলৌকিকত্বের উপরে নির্ভর করতে বলেন সবাইকে। ঘনিষ্ঠ সূত্রে খবর, ভেন্টিলেশন লাগোয়া একটি ঘরে নিজেকে বন্দি করে নিয়েছেন সব্যসাচী। সেখান থেকে এক মুহূর্তের জন্য নড়ছেন না। এত দিন তাঁকে আগলে রাখতেন অভিনেতা এবং হোঁদল রেস্তরাঁর তিন কর্ণধারের অন্যতম সৌরভ দাস। তিনি সোমবার রাতে ব্যাংককের উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছেন। মঙ্গলবার থেকে ‘বিবাহ অভিযান ২’-এর শ্যুট শুরু হয়েছে তাঁর। খবর, তিনি চলে যাওয়াতে অনেকটাই অসহায় বোধ করছেন সব্যসাচী।
সব্যসাচী-ঐন্দ্রিলার জন্য মনখারাপ সৌরভেরও। এশিয়ানেট নিউজ বাংলাকে মঙ্গলবার হোয়াটসঅ্যাপ বার্তায় জানিয়েছেন, তিনি বাইরে শ্যুটে গিয়েছেন। মন পড়ে রয়েছে কলকাতায়। এই ক’দিনেই সব্যসাচী তাঁর বন্ধু কম ভাই বেশি। এই অবস্থায় তাঁকে একা ছেড়ে আসতে মন সায় দেয়নি। কিন্তু তিনিও নিরুপায়। একই সঙ্গে ঐন্দ্রিলার অবস্থা দেখে ভেঙে পড়েছেন তিনিও। বলেছেন, ‘আমরা প্রচুর লড়েছি। হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে অসম্ভব লড়ছে মেয়েটা। এ বার পুরোটাই ঈশ্বরের উপরে ছেড়ে দিচ্ছি। আপনারা সবাই মন থেকে প্রার্থনা জানান। যদি তাতে কোনও অলৌকিক ঘটনা ঘটে।’ সোমবার সব্যসাচীর পোস্ট পড়ে মানসিক ভাবে ধ্বস্ত যুগলের অনুরাগী মহল। টলিউডের সমস্ত তারকা ঐন্দ্রিলার জন্য প্রার্থনা শুরু করেছেন। মুম্বই থেকে শুভকামনা জানিয়েছেন পরমব্রত চট্টোপাধ্যায়। বিক্রম চট্টোপাধ্যায় তাঁর সমস্ত শক্তি দিয়ে দিতে চেয়েছেন ঐন্দ্রিলাকে। তাঁর একটাই চাওয়া, ঐন্দ্রিলা যেন বাড়ি ফিরে আসেন। আবার উঠে দাঁড়ান। বিদীপ্তা চক্রবর্তী অভিনেত্রীকে নিজের ‘মেয়ে’ বলে সম্বোধন করেছেন। মন থেকে আশীর্বাদ করে বলেছেন, ‘সমস্ত বাধা কাটিয়ে খুব তাড়াতাড়ি বাড়ি ফিরে এস। মন থেকে চাইছি।’
আরও পড়ুন
‘সিরিজে সব্যসাচীও ছিলেন, ঐন্দ্রিলা কিন্তু আমার সঙ্গে প্রেমের দৃশ্যে সাবলীল’! স্মৃতি উজাড় নায়কের
পরপর হৃদরোগ! ঐন্দ্রিলার শরীরে এখনও ১ শতাংশ প্রাণের সাড়া রয়েছে, বলছেন চিকিৎসকের দল
সব্যসাচীর পর এবার কি মানসিকভাবে ভেঙে পড়লেন সৌরভ, ঐন্দ্রিলার জন্য প্রার্থনা করতে বললেন অভিনেতা বন্ধু