ঐন্দ্রিলা শর্মার শারীরিক অবস্থা মোটেও ভালো নয়। কিন্তু, এক কঠিন পরিস্থিতিতে বারবার তাঁকে নিয়ে যেভাবে মিথ্যা খবর রটছে এবং মিডিয়ার একাংশ যে দায়িত্ব জ্ঞানহীনতার প্রমাণ রাখছে তাতে প্রশ্ন উঠছে।
কেমন আছেন ঐন্দ্রিলা? এই প্রশ্ন বারবার তোলপাড় হচ্ছে সোশ্যাল মিডিয়া থেকে বাংলা বিনোদন জগত। সকলেই পেতে চান ঐন্দ্রিলার সুস্থতার খবর। কিন্তু, বাংলা বিনোদন জগতের এই তরুণ অভিনেত্রীর শারীরিক অবস্থা যে মোটেও ভালো নয় তা পরিস্কার করে দিয়েছে খোদ তাঁর পরিবার। এমনকি, ঐন্দ্রিলার প্রেমিক এবং সর্বক্ষণের সঙ্গী সব্যসাচী চোধুরীও সোশ্যাল মিডিয়ায় জানিয়েছেন সঙ্কটের কথা। আশা যে আছে তাও বলেছেন তিনি। অথচ, এমন এক কঠিন সময়ে এমন এক স্পর্শকাতর বিষয়ে বারবার মিথ্যা খবরে বিভ্রান্তিতে পড়ছেন সকলে। মিডিয়ার একাংশের বিরুদ্ধে এখন ঐন্দ্রিলার শারীরিক অবস্থা নিয়ে মিথ্যা খবর রটানোর অভিযোগ উঠেছে। শনিবার সন্ধ্যায় খবর চাউড় হয় ঐন্দ্রিলা ফের হৃদরোগে আক্রান্ত হয়েছেন। অবস্থা সঙ্কটে। হাসপাতাল সূত্রে সাফ জানানো হয়েছে, এটা মিথ্যা খবর। অভিনেত্রী যথেষ্টই সঙ্কটে রয়েছেন ঠিকই। কিন্তু তা বলে নতুন করে কোনও হার্ট অ্যাটাকের ঘটনা ঘটেনি।
শনিবার বিকেলে হাসপাতাল সূত্রে ঐন্দ্রিলার শারীরিক অবস্থার একটা আপডেট মেলে। যেখানে অভিনেত্রীকে পুরোপুরি ভেন্টিলেশনে রাখার কথা উল্লেখ করা হয়েছে। শারীরিক অবস্থা সঙ্কটেই রয়েছে বলেও জানানো হয়। নতুন করে শারীরিক অবস্থার কোনও উন্নতি বা অবনিত হয়নি বলেও তাতে উল্লেখ করা হয়েছিল। ১৬ দিনের বেশি সময় ধরে হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন ঐন্দ্রিলা। নিত্যদিনই তাঁর শারীরিক পরিস্থিতি উদ্বেগ ছড়িয়েছে। সেই উদ্বেগের প্রহর কতটা আতঙ্কে ভরা তা সব্যসাচী চোধুরী নিজের ফেসবুক পেজেও লিখেছেন। খোলাখুলিভাবেই তিনি জানিয়েছেন দুই বারের ক্যানসার জায়ী ঐন্দ্রিলা এই মুহূর্তে হাসপাতালের বেডে কীভাবে লড়াই করছেন। এমনকি, দুই দিন আগে যখন ঐন্দ্রিলার শারীরিক অবস্থা চরমে উঠেছিল। সেই সময় নিউরো সার্জেন কি বলেছিলেন সে কথাও ফেসবুক পোস্টে উল্লেখ করেছেন সব্যসাচী। তাঁরা দিনরাত ঐন্দ্রিলাকে সামনে দেখছেন, এমন পরিস্থিতি তাঁদের পক্ষেও মেনে নেওয়া অসম্ভব হচ্ছে। ঐন্দ্রিলা যে ভিতরে ভিতরে জীবনের আলোয় ফেরার চেষ্টা চালাচ্ছেন তা মাঝে মাঝেই পরিলক্ষিত হচ্ছে। আর সেই কারণেই আশার আলোও নিভেও ফের জ্বলে উঠছে। এই জ্বলে ওঠা জীবন শিখা-ই আশা বাড়িয়েছে সব্যসাচীর এবং ঐন্দ্রিলার পরিবারের। তাই সর্ব মন শক্তি দিয়ে ঐন্দ্রিলার জন্য প্রার্থনার আহ্বানও জানিয়েছেন সব্যসাচী।
এহেন এক পরিস্থিতি স্বাভাবিকভাবেই খুব দুরুহ হয়ে ওঠে রোগীর আত্মীয়-পরিজন এবং প্রিয়জনদের কাছে। সেখানে দায়িত্ব-কর্তব্যহীনের মত বারবার মিথ্যা খবরের ছলছাতুরি কেন- সেই প্রশ্ন তুলেছেন অনেকে। আর এর জন্য মিডিয়ার একাংশের দিকেও অভিযোগের আঙুল রয়েছে। ডিজিটাল কমিউনিকেশনের যুগে সংবাদমাধ্যমের খবরের সত্যতা নিয়ে বারবার প্রশ্ন উঠে যাচ্ছে। খবর পরিবেশনের ঠেলায় বহু সময় চেক-রিচেক না করেই তা পরিবেশিত হচ্ছে বলেও অভিযোগ। বর্তমান সময়ে তথ্য আদান-প্রদান খুব একটা কঠিন কাজ কিছু নয়। কিন্তু, ব্রেকিং নিউজের চক্করে একটা স্পর্শকাতর বিষয়ে মিথ্যা খবরের প্রয়োজন কেন? সেই প্রশ্ন কিন্তু এড়িয়ে যাওয়া যাচ্ছে না।
আরও পড়ুন-
ঐন্দ্রিলা সম্পূর্ণ ভেন্টিলেশন-নির্ভর, গ্লাসগো কোমা সেলের মাত্রা ৫-এরও কম, জানাল হাসপাতাল
‘বিশ্বাস, ইচ্ছাশক্তি মিললে তবেই অলৌকিক ঘটবে, শুধু প্রার্থনায় নয়’, প্রার্থনা বিতর্কে অকপট অনিন্দ্যপুলক
‘ওঁর সঙ্গে সারা দিন নির্দ্বিধায় চিকিৎসা নিয়ে আলোচনা করি’, অরিজিৎ সিংয়ের কাছে কৃতজ্ঞ সব্যসাচী