ফেরা হল না বাড়িতে তার আগেই চির ঘুমের দেশের চলে গেলেন জনপ্রিয় সঙ্গীত শিল্পী কেকে ওরফে কৃষ্ণকুমার কৃষ্ণকুমার কুন্নাথ। সঙ্গীত শিল্পীর অকাল প্রয়াণে শোকস্তব্ধ সঙ্গীত থেকে গোটা বিনোদন মহল। তবে প্লে ব্যাক সিংগিং আর লাইভ কনসার্ট এই দুইয়ের মধ্যে রয়েছে এক বিস্তর ফারাক। শারীরিক এবং মানসিকভাবে কতটা শক্তির প্রয়োজন হয় এই ধরণের লাইভ অনুষ্ঠান করতে গিয়ে? এবার সেই কথাই জানালেন সঙ্গীত শিল্পী জোজো।
কলকাতায় পরপর দু দিনের কনসার্টে নজরুল মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন বলিউডের জনপ্রিয় গায়ক কেকে। সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে কেকের কলকাতা কনসার্টের কথা আগেই ছড়িয়ে পড়েছিল শহর জুড়ে। আর পছন্দের গায়ককে এতটা কাছ থেকে দেখার বা তাঁর লাইভ অনুষ্ঠান সামনে থেকে অনুভব করার সুযোগটা হারাতে চান নি অসংখ্য মানুষ। সেই কারণে মঙ্গলবার উপচে পড়া ভিড় পরিলক্ষিত হয়েছিল নজরুল মঞ্চে। যেখানে নজরুল মঞ্চের ভিতরে ২৪৮৩ জনের জায়গা রয়েছে সেখানে নজরুল মঞ্চের স্টাফরা জানিয়েছেন যে লোক হয়েছিল না কি প্রায় ৬ থেকে ৭ হাজার। ফলে ভিড় সামাল দিতে রীতিমত নাকানি চোবানি খেতে হয় তাঁদের।
সূত্রের খবর, অনুষ্ঠানের মাঝে অসুস্থ বোধ করেন কেকে। সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে একাধিক ভিডিও। এমনই একটি ভিডিওয় দেখা যাচ্ছে মঞ্চে দাঁড়িয়ে দরদর করে ঘামছেন কে কে। তোয়ালেতে মুখ মুছছেন শিল্পী, বারবার জল ও খাচ্ছেন। একেই জ্যৈষ্ঠ মাসের গরমের দাবদাহ তার উপরে কম পরিধিতে বেশি মানুষের ভিড় সব মিলিয়ে যেন এক দমবন্ধকর পরিবেশ তৈরি হয়েছিল সেখানে। এমন কি এও জানা গেছে যে একইসঙ্গে অডিটোরিয়ামের এসি ও না কি কাজ করছিল না বলে জানান কেকে।
এই রূপ লাইভ পারফর্ম করা ঠিক কতটা চ্যালেঞ্জিং সেই প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে সঙ্গীত শিল্পী জোজো জানান, 'আমি যখন কেকে- র কনসার্টের ফুটেজগুলো দেখছিলাম তখন একটা কোথায় আমার মনে হচ্ছিল আমরা যখন পারফর্ম করতে যাই তখন পরিবেশ সবসময় অনুকূল থাকে না, অনেক সময় অতিরিক্ত ভিড় বা বদ্ধ জায়গার জন্য একটা প্রতিকূল পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। কেকে- র মতো পারফর্মাররা যারা পুরো শরীর দিয়ে পারফর্ম করেন তখন কিন্তু শারীরিকভাবে কিন্তু একজন পারফর্মারের খুব কষ্ট হয়, কিন্তু আমরা মানুষের ভালোবাসার সম্মান রেখে নিজেদের ওই কষ্টটাকে সামনে আসতে দিই না, অনেক সময় জল খেতে ভুলে যাই বা ঘাম মুছতে ভুলে যাই। এগুলো শরীরের উপর গভীর প্রভাব ফেলে।'
এরপর জোজো আরও বলেন যে, 'দর্শকদের ভালোবাসা মাথায় রেখেই একজন শিল্পী নিজের শরীর না দিলেও গানের পর গান গেয়ে যান। অনেক সময়ই হয় যে দর্শকরা শিল্পীকে ছাড়তে চান না, তখন শিল্পীরাও অনুরাগীদের ভালোবাসাটাকে ছাড়তে চান না, সেটার জন্য হয় তো অনেকটাই ক্ষতি হয় যায়। কিন্তু পরপর যখন শো চলে, যেমন কেকে ও কিন্তু কলকাতায় সোমবার এবং মঙ্গলবার পরপর দুটি শো করেছেন, টানা ১৫ দিন ধরে তাঁর শো চলছিল। এইরকমভাবে যখন শো চলে তখন কিন্তু শরীরের অনেকটাই ক্ষতি হয়ে যেগুলোর দিকে আমরা খেয়াল রাখি না।'