কলকাতায় হেঁটে আসা মানুষটা ফিরবেন নির্লিপ্ত হয়ে। যার গানে ভাঙা মনে প্রাণের সঞ্চার হত আজ তাঁর শরীর থেকেই অনেক দূরে চলে গিয়েছে প্রাণ, এই বাস্তবতা এখন ও মেনে নিতে পারছেন না কেকে- র অনুরাগীরা। বুধবার রবীন্দ্রসদনে কেকে- র শেষ শ্রদ্ধায় এসে হাজির হয়েছিলেন কেকে- ভক্তরাও। প্রিয় শিল্পীর অকাল প্রয়াণে চোখ ভিজলো তাঁদেরও।
তিলোত্তমায় এসেছিলেন কেকে, এই সুযোগ এই খবর পেয়েও কি সত্যিই নিজেকে ধরে রাখা যায়? একবার চাক্ষুস লাইভ কেকে- র লাইভ কনসার্ট অনুভব করতে চেয়েছিলেন ভক্তরা, তারই ফলপ্রকাশ বিপুল জনসমাগম। সূত্রের খবর লাইভ পারফর্ম করতে করতেই দরদর করে ঘামছিলেন কে কে। তোয়ালে দিয়ে ঘাম মোছার পাশাপাশি মাঝেমধ্যেই জল খাচ্ছিলেন। প্রায় ২ ঘণ্টার অনুষ্ঠান শেষ হওয়ার পর বোঝাই যাচ্ছিল কে কে-র কষ্ট হচ্ছে। তবে এতটুকু বুঝতে না দিয়ে দর্শকদের দিকে হাত নাড়তে নাড়তে নেমে যান মঞ্চ থেকে, জানিয়েছেন সেদিন মঞ্চে উপস্থিত থাকা শো- এর সঞ্চালক।
কলকাতাবাসী আনন্দ দিতে এসে চিরবিদায় নিয়েছেন কেকে। সঙ্গীত শিল্পীর এই আকস্মিক প্রয়াণে তাঁকে শেষ শ্রদ্ধা জানাতে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় কেকে-কেও গান স্যালুট দেওয়া হয় রবীন্দ্র সদনে। অনুষ্ঠানের সময় উপস্থিত ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রথম দমদম বিমানবন্দরে গান স্যালুট দেওয়ার কথা বললেও পরে মুখ্যমন্ত্রী জানান রবীন্দ্র সদনেই গান স্যালুট দেওয়া হবে কেকে-কে, কারণ সমস্ত বিখ্যাত শিল্পীজনদের এই রবীন্দ্র সদনেই শেষ সম্মান জানানো হয় তাই কেকে- র ক্ষেত্রেও তার অন্যথা হবে না। রাজ্যের সাংস্কৃতিক বিভাগের সদস্যরা ছাড়াও এদিন উপস্থিত ছিলেন কেকে- র অসংখ্য ভক্তগণ। প্রিয় গায়ককে হারিয়ে অনুরাগীদের একটাই প্রার্থনা ঘুমের দেশে গিয়ে ভালো থাকুন কেকে।
মুম্বই থেকে তাঁর পরিবারের সদস্যরা সকালেই কলকাতায় এসে উপস্থিত হয়েছিলেন। এদিন তাঁর পরিবারের সামনেই রবীন্দ্র সদনে তাঁকে শেষ সম্মান জানানো হয়। বর্তমানে কলকাতা থেকে মুম্বইয়ের পথে কেকে- র মরদেহ। কলকাতা থেকে বিকেল ৫.১৫- র ফ্লাইটে কলকাতা থেকে মুম্বইতে নিয়ে আসা হবে কেকে- কে। শেষবারের মতো নিজের মুম্বইয়ের আবাসনে পৌঁছবেন কেকে। এরপর বৃহস্পতিবার মুম্বইয়ে শেষকৃত্য সম্পন্ন হবে কে কে-র। মুম্বইয়ের ভারাসোভা শ্মশানে হবে কে কে-র শেষকৃত্য।
কেকে- র ময়নাতদন্তের রিপোর্টে কোনওরকম অস্বাভাবিক কিছু পরিলক্ষিত হয় নি, তবে হৃদযন্ত্রজনিত সমস্যা ছিল বলে জানা গেছে কেকে- র। কথায় বলে শিল্পীরা মৃত্যু হলেও শিল্পের মৃত্যু কখনও হয় না। মঙ্গলবার কেকে- র কনসার্টের পর আজ নজরুল মঞ্চে শুধুই নিস্তব্ধতা, সেখানে এখনও পড়ে রয়েছে গানের প্লে লিস্ট। গতকাল গুরুদাস কলেজের অনুষ্ঠানে ২০টি গান গেয়েছিলেন কে কে যা এখন কেবলই স্মৃতির আবডালে মোড়া মুহূর্ত ছাড়া আর কিছুই নয়।