ঘরে ছেলে ঢোকানো থেকে রোজভ্যালি কাণ্ডে জেল, বিতর্কের আরেক নাম তাপস পাল

 

  • আশির দশকে বাংলার সিনেমার অন্যতম অভিনেতা
  • রাজনীতিতে তাপস পালের কেরিয়ার ছিল ঈর্ষণীয়
  • সাংসদ থাকাকালীন বিতর্কের সূচনা 
  • সেই বিতর্ক থেকেই দলের সঙ্গে দূরত্ব তৈরি

Asianet News Bangla | Published : Feb 18, 2020 3:32 AM IST / Updated: Feb 19 2020, 08:58 PM IST

চলে গেলেন বাংলা সিনেমার অন্যতম অভিনেতা তাপস পাল। দীর্ঘদিন ধরেই স্নায়ুর রোগে ভুগছিলেন আশি ও নব্বইয়ের দশকে টলিউডের এই তারকা অভিনেতা। দাদার কীর্তি থেকে সাহেব, গুরুদক্ষিণা একাধিক ছবিতে তাপস পালের অভিনয় দর্শকদের মন ছুঁয়ে গিয়েছিল। তবে কেবল অভিনয়েই থেমে ছিলেন না তাপস পাল। রাজনীতিতেও তাঁর কেরিয়ার ছিল ঈর্ষণীয়। যদিও বিতর্ক কখনও পিছু ছাড়েনি বাংলা সিনেমা জগতের অন্যতম এই তারকা অভিনেতাকে।

আশি ও নব্বইয়ের দশকে বাংলা সিনেমাপ্রেমীদের কাছে অতি পরিচিত নাম ছিল তাপস পাস। অভিনয়ে থাকতে থাকতেই ২০০১ সালে রাজনীতিতে পা রাখেন অভিনেতা। যোগ দেন তৃণমূল কংগ্রেসে। প্রথমদিকে তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আস্থাভাজন ছিলেন তাপস।  ২০০১ ও ২০০৬ সালে তৃণমূলের টিকিটে বিধানসভা নির্বাচনেও জেতেন। এরপর একেবারে সাংসদ। ২০০৯ ও ২০১৪ সালে পরপর দু'বার কৃষ্ণনগর লোকসভা থেকে সাংসদও নির্বাচিন হন। কিন্তু তারপরেই আস্তে আস্তে অস্তিমিত হতে শুরু করে অভিনেতার রাজনৈতিক কেরিয়ার।

আরও পড়ুন: 'দাদার কীর্তি' থেকে মাধুরী দীক্ষিতের বিপরীতে অভিনয়, তাপসের কেরিয়ার ছিল উত্থান-পতনে ঘেরা

২০১৪ সালের জুনে সংবাদমাধ্যমের সামনে আসে একটি ভিডিও। যাতে দেখা যায় নিজের নির্বাচনি কেন্দ্রে নদিয়ার চৌমাথা এলাকায় হুমকি দিচ্ছেন তৎকালীন সাংসদ। তাঁকে বলতে শোনা যায়, ঘরে ছেলে ঢুকিয়ে রেপ করিয়ে দেবেন। বাড়ি ঘর জ্বালিয়ে দেওয়ারও হুমকি দেন তিনি। এই ঘটনা থেকেই একদা তৃমমূল নেত্রীর ঘনিষ্ঠ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে দূরত্ব বাড়তে শুরু করে তাপস পালের। এমনকি তাপস পালের বক্তব্যের জন্য জনসমক্ষে ক্ষমাও চান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

এখানেই অবশ্য থেমে থাকেনি তাপস পালকে নিয়ে বিতর্ক। ২০১৬ সালে রোজভ্যালি কাণ্ডে গ্রেফতার হতে হয় তৎকালীন তৃণমূল কংগ্রেসের অভিনেতা সাংসদ তাপস পালকে। ২০১৬ সালের ৩০ ডিসেম্বর তাঁকে গ্রেফতার করেছিল সিবিআই। সেদিন তাপস পালকে সল্টলেকের সিবিআই দফতরে জেরা করেন গোয়েন্দারা। স্ত্রী নন্দিনী পালের সঙ্গে সিবিআই দফতরে গিয়েছিলেন তাপস। কিন্তু আর বাড়ি ফেরা হয়নি। জেরায় নথির সঙ্গে বক্তব্যের অসঙ্গতি মেলায় গ্রেফতার হতে হয় তাপস পালকে।

আরও পড়ুন: একমাত্র মেয়ের সঙ্গে আর হল না শেষ দেখা, বিমানবন্দর থেকেই ফিরতে হয়েছিল তাপস পালকে

রোজভ্যালির থেকে একাধিকবার তাপস পাল টাকা নিয়েছিলেন বলে প্রমাণ রয়েছে, দাবি করে সিবিআই। তাঁর স্ত্রীও ওই সংস্থা থেকে একাধিকবার টাকা নিয়েছিলেন বলেও অভিযোগ উঠেছিল।  সংস্থার সঙ্গে সরাসরি যুক্ত ছিলেন তাপস পাল এবং তাঁর স্ত্রী। গ্রেফতারির পর ওড়িশায় নিয়ে যাওয়া হয় তাপস পালকে। প্রথমে জেলে থাকলেও পরে গুরুতর অসুস্থ হয়ে ওড়িশার একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন তাপস। 

গ্রেফতারির ১৩ মাস পর ১ কোটি টাকার বন্ডে মুক্তি পেয়েছিলেন তাপস পাল। কিন্তু ততদিনে দলের থেকে ব্রাত্য হয়ে গিয়েছেন অভিনেতা। গত লোকসভা নির্বাচনে তাঁকে তৃণমূলের পক্ষ থেকে আর টিকিট দেওয়া হয়নি। 


 

Share this article
click me!