এক সাক্ষাতকারে বাপ্পি লাহিড়ি বলেছিলেন তাঁর গলার প্রথম সোনার চেনটি তাঁর মা তাঁকে উপহার দিয়েছিলেন। দ্বিতীয় চেনটি তাঁর স্ত্রী উপহার দিয়েছিলেন।
দ্য ডিস্কো কিং (the disco king)। এক ডাকে চিনত আট থেকে আশি। তিনি বাপ্পি লাহিড়ি (Bappi Lahiri)। ১৯৮০-৯০ দশকে গোটা ভারতকে (India) নাচিয়ে দিয়েছিলেন তিনি। মুখে মুখে ঘুরত ডিস্কো ডান্সারের (Disco Dancer) গান। বলিউডে গানে পপ যোগ করে নয়া ঘরানা তৈরি করেছিলেন বাপ্পি লাহিড়ি। তবে তাঁর জার্নির শুরু কোথায়, মুম্বইতে এসে মাটি শক্ত করার কাজটা আদৌ সহজ ছিল না তাঁর কাছে। এক পলকে এই বাঙালি সন্তানের মুম্বই জয়ের কয়েক ঝলক রইল আপনাদের জন্য।
বিখ্যাত সংগীতশিল্পী ও গায়ক বাপ্পি লাহিড়ি ছোটবেলা থেকেই গানের জন্য প্রস্তুতি নিতে শুরু করেন। তিন বছর বয়সে তিনি তবলা বাজানো শেখা শুরু করেন। কিশোর কুমার ছিলেন তাঁর মামা এবং বাপ্পীকে সংগীত জগতে আনার কৃতিত্ব তাঁরই। বাপ্পি লাহিড়ীর বয়স যখন ১৯ বছর, তিনি কলকাতা থেকে মুম্বই আসেন।
১৯৭৩ সালে 'নিনহা শিকারী' চলচ্চিত্রে সঙ্গীত রচনার কাজ পান। তিনি তার বাবা ও মায়ের কাছ থেকে সঙ্গীত শিখেছিলেন এবং এর আগে বাংলা চলচ্চিত্রে গান গেয়েছিলেন। তার বাবা অপরেশ লাহিড়ী ছিলেন একজন সঙ্গীতশিল্পী এবং মা ছিলেন একজন বাঁশি শিল্পী। বাপ্পি লাহিড়ি ১৯৭৫ সালের ছবি জখমি থেকে স্বীকৃতি পান। এই ছবিতে তিনি রাফি ও কিশোর কুমারের সঙ্গে গান গেয়েছেন।
বাপ্পি লাহিড়ী হলেন ভারতীয় সঙ্গীত জগতের একমাত্র মানুষ যাকে মাইকেল জ্যাকসন তার প্রথম শোতে আমন্ত্রণ জানিয়ে ছিলেন। ১৯৯৬ সালে মুম্বইয়ে এই লাইভ শো হয়েছিল। হিন্দি সঙ্গীতে পপের মিশ্রণ আনার কৃতিত্ব তাঁর। এ কারণে তিনি অনেক সমালোচনাও সহ্য করেছিলেন।
সঙ্গীত জগতে বড় ধাক্কা, প্রয়াত কিংবদন্তী সঙ্গীতশিল্পী বাপ্পি লাহিড়ি
বাপ্পি লাহিড়ি রাজনীতিতেও নিজের ভাগ্য পরীক্ষা করতে গিয়েছিলেন। ২০১৪ সালে, তিনি বিজেপির টিকিটে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন কিন্তু পরাজিত হন। ১৯৫২ সালের ২৭ নভেম্বর কলকাতায় জন্ম নেওয়া বাপ্পি লাহিড়ি সারাক্ষণ সোনায় মোড়া থাকতেন। তিনি বিশ্বাস করতেন যে সোনা তার জন্য খুব লাকি। তাকে সারাক্ষণ লক্ষাধিক টাকার গয়না পরে থাকতে দেখা যেত। এক সাক্ষাতকারে বাপ্পি লাহিড়ি বলেছিলেন তাঁর গলার প্রথম সোনার চেনটি তাঁর মা তাঁকে উপহার দিয়েছিলেন। দ্বিতীয় চেনটি তাঁর স্ত্রী উপহার দিয়েছিলেন।
১৯৮৬ সালে তিনি ৩৩টি ছবিতে ১৮০টি গান গেয়েছিলেন বাপ্পি লাহিড়ি। এই রেকর্ড গিনেস বুক অফ ওয়ার্ল্ড রেকর্ডেও তোলা হয়েছিল। তিনি লাইফটাইম অ্যাচিভমেন্ট সম্মানেও ভূষিত হন।