সত্যি কি কোভ্যাক্সিনে রয়েছে বাছুরের সিরাম, জানুন কোভিড টিকা নিয়ে কী বলছে স্বাস্থ্য মন্ত্রক

  • কোভ্যাক্সিনে রেয়েছে বাছুরের সিরাম 
  • সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হচ্ছে পোস্ট 
  • সাফাই দিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার 
  • স্বাস্থ্য মন্ত্রক জানিয়েছে কোষ তৈরির জন্য ব্যবহার করা হয় সিরাম 
     

Saborni Mitra | Published : Jun 16, 2021 10:01 AM IST / Updated: Jun 16 2021, 03:35 PM IST

কোভ্যাক্সিনে রয়েছে সদ্যোজাত বাছুরের সিরাম। বেশ কয়েক দিন ধরেই এই তথ্য ঘুরে বেড়াচ্ছিল সোশ্যাল মিডিয়ায়। তোলপাড় হচ্ছিল নেটদুনিয়া। মূলত কংগ্রেস নেতা গৌরব পান্ধিও টুইট করে দাবি করেছিলেন যে ভারত বায়োটেকের তৈরি কোভ্যাক্সিনে রয়েছে ২০ দিনের বাছুরের সিরাম।  তারপরই বুধবার কেন্দ্রীয় সরকার এই মর্মে সাফাই দিয়েছে। আর স্পষ্ট করে জানিয়ে দিয়েছে চূড়ান্ত কোভ্যাক্সিনে সদ্যোজাত বাছুরের সিরাম থাকে না। আর চূড়ান্ত টিকা উৎপাদনেও বাছুরের সিরাম ব্যবহার করা হয় না। 

করোনাক্লান্ত দেশে শিশুদের জন্য স্বস্তি, কোভিডের দুটি তরঙ্গে ১২ শতাংশ সংক্রমিত হয়েছে এর

কোভ্যাক্সিনের রয়েছে বাছুরের সিরাম
১৫ জুন, কংগ্রেস নেতা গৌরব পান্ধি টুইটারে একটি পোস্ট করেছিলেন। সেখানে তিনি দাবি করেছিলেন ভারত বায়োটেকের বিকাশ করা কোভ্যাক্সিনে রয়েছে ২০দিনের সদ্যোজাত বাছুরের সিরাম। একটি আরটিআই-এর প্রতিক্রিয়ায় মোদী সরকার স্বীকার করে নিয়েছে যে কোভ্যাক্সিনে নবজাতক বাছুরের সিরাম থাকে। জন্মের মাত্র ২০ দিনের মধ্যেই বাছুরের শরীর থেকে সেই সিরাম সংগ্রহ করা হয়। এই তথ্য আগেই প্রকাশ পাওয়া উচিৎ ছিল। তাঁর আরও অভিযোগ কেন্দ্রীয় সরকার এই তথ্য গোপন করেছে। দেশের মানুষের ভাবাবেগকে আঘাত করেছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি। পান্ধি হলেন কংগ্রেসের সোশ্যাল মিডিয়া বা ডিজিটাল যোগাযোগের গুরুত্বপূর্ণ নেতা। টুইটারে তারই স্ক্রিন শটও দিয়েছেন তিনি। ।

সত্যি কি ভোট সন্ত্রাসে অগ্নিগর্ভ বাংলা, Fact Check-এ ভাইরাল হওয়া সন্ত্রাসের ছবি ...

আরটিআইএ প্রাপ্ত তথ্যের দিকে আলোকপাত
প্রথমত ভ্যাকসিন উৎপাদন প্রক্রিয়াতে সদ্যোজাত বাছুরের সিরাম ব্যবহার করা হয়। এটাই প্রথম নয়। এরআগেও একই পদ্ধতিতে দেশে টিকা তৈরি হয়েছে, যেখানে বাছুরের সিরাম ব্যবহার করা হয়েছে। দ্বিতীয়ত ভারত বায়োটেক বা ভারত সরকার কখনই এই তথ্য গোপন করেনি। 

ভারত সরকারে বিবৃতি
কোভ্যাক্সিনে বাছুরের সিরাম ব্যবহার করা হয়েছে- এই মর্মে  স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রকের পক্ষ থেকে একটি বিবৃতি জারি করা হয়। সেখানে বাছুরের সিরাম ব্যবহারের অভিযোগ করা হয়েছে। পাশাপাশি সোশ্যাল মিডিয়া যে তথ্য তুলে ধরা হয়েছে তা সম্পূর্ণ ভুল ভাবে উপস্থাপনা করা হয়েছে বলও দাবি করা হয়েছে। 

কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে জানান হয়েছে সদ্যোজাত বাছুরের সিরাম কেবল ভেরো কোষের প্রস্তুতি আর বৃদ্ধির জন্য ব্যবহার করা হয়। বিভিন্ন ধরনের বোভাইন ও অন্যান্য প্রাণির সিরাম হল মনোন্নত উৎপাদন যা ভেরো কোষের বৃদ্ধির জন্য গোটা বিশ্বেই ব্যবহার করা হয়। ভেরো কোষগুলি  ভ্যাকসিন তৈরিতে সাহায্য করে। এই কৌশলটি কয়েক দশক ধরে পোলিও রাবিস আর ইনফ্লুয়েঞ্জার টিকা তৈরির জন্য ব্যবহার করা হচ্ছে। কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে আরও জানান হয়েছে ভেরো কোষের বৃদ্ধির পর তা জল আর রাসায়নিক দিয়ে ধুয়ে ফেলা হয়। যা প্রযুক্তিগতভাবে বাফার নামে পরিচিত। এই ভেরো কোষগুলিও করোনাভাইরাসকে সংক্রমিত করতে সক্ষম হয়। ভাইরাস প্রক্রিয়ায় তৈরির জন্য ভেরো কোষগুলি সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়ে যায়। আর সেই নিহত ভাইরাসটি চূড়ান্ত কোভ্যাক্সিন তৈরির প্রক্রিয়ায় ব্যবহার করা হয়। আর সেই কারণেই চূড়ান্ত ভ্যাক্সিনে কখনও বাছুরের সিরাম থাকে না বা ব্যবহার করা হয়নি।  

মুম্বইয়ে ঘূর্ণীঝড় তাউতের ভাইরাল ভিডিও, সত্যি কি মুম্বই না মদিনা, কী বলছে ফ্যাক্টচেক ...
নবজাতক বাছুরের সিরাম 
সদ্যোজাত বাছুর হতে হবে। বাছুরটি স্বাস্থ্যকর হতে হবে। আর ২০ দিনের কম বয়সী হতে হবে। তবে বাছুর জবাই না করেই সিরাম উৎপাদনের জন্য প্রয়োজনীয় রক্ত জীবিত প্রাণির থেকেও সংগ্রহ করা যায়। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড, মেক্সিকো, কোস্টারিকা সদ্যোজাত বাছুরের সিরাম তৈরি করে। বিশেরভাগ ভ্যাকসিন নির্মাতা সংস্থাই সংশ্লিষ্ট দেশগুলির থেকে সিরাম সংগ্রহ করে। ভারতে এজাতীয় সিরাম তৈরি হয় না। 

কোভ্যাক্সিনে ব্যবহৃত সিরাম
২০২০২ সালে সংস্থার পক্ষ থেকে একটি গবেষণা পত্র প্রকাশ করা হয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে ভোরে সেল বা কোষ তৈরি জন্য সিরাম ব্যবহার করা হয়েছে। উল্লেখ্য ভ্যাকসিন উৎপাদনের সময় ভেরো কোষগুলি পরীক্ষাগারেই বৈজ্ঞানীরা তৈরি করেন। এবং সেগুলি কোভিড১৯এর সংস্পষ্টে আসে। তারপরই দেখা যায় তা অ্যান্টিবডি তৈরি করতে সক্ষম হয়েছে। উল্লেখ্য পরীক্ষাগারে ভেরো কোষের উৎপাদন বাড়ানোর জন্যেই বাছুরের সিরাম ব্যবহার করা হয়। দিল্লির জওহরলাল নেহেরু বিশ্ববিদ্যালয়ের আনবিক মেডিসিনের অধ্যাপক আনন্দ রঙ্গনাথন জানিয়েছেন বাছুরের সিরাম কেবলমাত্র ভাইরসকে আরও বাড়ানোর জন্য কোষের বৃদ্ধিতে ব্যবহার করা হয়। কোভ্যাক্সিনে বাছুরের সিরাম থাকে না। 

তাই বলা যেতেই পারে ভ্যাকসিনে নবজাতক বাছুরের সিরাম রয়েছে  বলে যে দাবি করা হচ্ছে তা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। বাছুরের সিরাম শুধুমাত্র কোষ তৈরির জন্য ব্যবহার করা হয়েছে। চূড়ান্ত ভ্যাকসিমে বাছুরের সিরাম থাকে না। 

Share this article
click me!

Latest Videos

ঘটনাকে চাপছে কারা! কার ভয়ে মুখ খুলছে না সঞ্জয়! ভালো করে দেখুন | RG Kar Case | Kolkata Doctor News
৫০০০ টাকা ধার শোধ করতে না পারায় যা ঘটল! দুপক্ষই থানার দ্বারস্থ | Berhampore News Today | Bangla News
Sukanta Majumdar live: কালনায় সদস্যতা অভিযানে সুকান্ত, কী বার্তা, দেখুন সরাসরি
'কুকুরের লেজ যেমন সোজা হয়না তেমনই মমতার পুলিশকে পরিবর্তন করা যায় না' বিস্ফোরক মন্তব্য শুভেন্দুর
'পুলিশ তৃণমূলের কাউকে টাচ করতেই ভয় পায়' কেন! জানালেন শুভেন্দু | Suvendu Adhikari | BJP vs TMC |