শনিবার কলকাতা ডার্বিতে গোলের জন্য তাঁর দিকেই তাকিয়ে ইস্টবেঙ্গলের সদস্য-সমর্থকরা। ম্যাচের আগের দিন কী বললেন লাল-হলুদের তারকা স্ট্রাইকার ক্লেটন সিলভা?
ডুরান্ড কাপে এটিকে মোহনবাগানের কাছে সুমিত পাসির আত্মঘাতী গোলে হেরে যায় ইস্টবেঙ্গল। এবার আইএসএল-এ কী হবে? ঘুরে দাঁড়াতে পারবে লাল-হলুদ ব্রিগেড। গত ম্যাচে নর্থ-ইস্ট ইউনাইটেড এফসি-র বিরুদ্ধে ৩-১ গোলে জয় এসেছে। এটাই চলতি আইএসএল মরসুমে ইস্টবেঙ্গলের প্রথম জয়। এবার কি পরপর ২ ম্যাচ জিতে নতুন ইতিহাস গড়তে পারবে লাল-হলুদ শিবির? ম্যাচের আগের দিন অবশ্য নিজেদের পিছিয়েই রাখলেন ইস্টবেঙ্গলের অন্যতম ভরসা ক্লেটন সিলভা। তাঁর দাবি, “যদি জিজ্ঞাসা করেন, ১০ জনের মধ্যে ৮ জনই এটিকে মোহনবাগান জিতবে। শনিবার আমরা জিতলে সবাই অবাক হয়ে যাবে। যেখানেই দেখা হচ্ছে, সমর্থকরা সবাই বলছে, ডার্বি জিততে হবে। এতেই এই ম্যাচের গুরুত্ব বোঝা যায়।” ক্লেটন আরও বললেন, “আমরা কীভাবে খেলব, কীভাবে সাফল্য পাওয়ার পরিকল্পনা করছি, সে ব্যাপারে সব রহস্য ফাঁস করে দেব না। আমি গোল করি বা অন্য কেউ, সেটা গুরুত্বপূর্ণ নয়। দল গোল পেলে এবং জিতলেই হল।”
ম্যাচের আগের দিন ইস্টবেঙ্গলের কোচ স্টিফেন কনস্টানটাইন বললেন, “কলকাতা ডার্বি ভারতীয় ফুটবলের সবচেয়ে বড় ম্যাচ। এটা বিশেষ ম্যাচ। সেই কারণে আমি যখন প্রথমবার কলকাতা ডার্বি দেখতে গিয়েছিলাম, তখন জাতীয় দলের কোচ ছিলাম। সেই ম্যাচে গ্যালারিতে এত বেশি দর্শক ছিলেন, আমি বসার জায়গা পাইনি। দাঁড়িয়েই ম্যাচ দেখতে হয়েছিল। এটা বিশ্বের অন্যতম সেরা ডার্বি। আর্সেনাল-টটেনহ্যাম, রেঞ্জার্স-সেল্টিক, এসি মিলান-ইন্টার মিলানের মতো ডার্বির সঙ্গে কলকাতা ডার্বির তুলনা করা যায়। এটা আমাদের ডার্বি। এটা এশিয়ার সেরা ডার্বি। এই ডার্বি খেলার সুযোগ পেলে ভাল লাগত। কোচ হিসেবে এটা আমার দ্বিতীয় ডার্বি। আমি প্রথম ডার্বি জয়ের স্বাদ পেতে চাই।”
স্টিফেন আরও বললেন, “সবাই ডার্বি জিততে চায়। আমরাও যেমন ১ পয়েন্টের লক্ষ্যে মাঠে নামব না, তেমনই ওরাও ৩ পয়েন্টই চায়। রাস্তা, সুপারমার্কেটের বাইরেও যদি এই ম্যাচটা হয়, তাহলেও সেটা ডার্বিই হবে। কবে, কোথায় খেলা হচ্ছে সেটা গুরুত্বপূর্ণ নয়। ডার্বি সবসময় গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচ। কবে ডার্বি হবে, সেটা আমাদের হাতে নেই। তবে যখনই হোক না কেন, আমাদের তৈরি থাকতে হবে। এবারের ডার্বির জন্য আমরা তৈরি। আমরা যেমন ৩ ম্যাচেই গোল হজম করেছি, তেমনই এটিকে মোহনবাগানও গোল খেয়েছে। কাজেই সেটা নিয়ে মাথা ঘামানোর দরকার নেই। সব ডার্বিই আলাদা। আমরা ভালভাবে প্রস্তুতি নিয়েছি। এবার দেখা যাক কী হয়।”
অনূর্ধ্ব-২০ এশিয়ান কাপের যোগ্যতা অর্জন পর্বে জাতীয় দলের হয়ে খেলে আসা হিমাংশু জ্যাংড়াকে কি শনিবার ডার্বিতে প্রথম একাদশে দেখা যাবে? লাল-হলুদ কোচ সেই সম্ভাবনা খারিজ করে দিয়ে বললেন, “”“হিমাংশু জ্যাংড়া প্রতিশ্রুতিমান ভারতীয় ফুটবলার। ওর ১৮ বছর বয়স। এই বয়সে বিদেশে ২০০-৩০০ ম্যাচ খেলে ফেলে ফুটবলাররা। এখানে এই বয়সের ফুটবলারদের তরুণ বলা হয়। ও ভাল ফুটবলার, কিন্তু ওর অভিজ্ঞতা সেভাবে নেই। ওকে তৈরি হতে হবে। আমাদের তরুণ ফুটবলারদের এটাই সমস্যা। আইএসএল বা আই লিগে প্রথম একাদশে না থাকলে ওদের খেলানো মুশকিল।”
ক্লেটন সিলভার প্রশংসা করে স্টিফেন বললেন, “ক্লেটন সিলভার অভিজ্ঞতা আছে। ও খেলাটা ভাল বোঝে। ও ডার্বিতে আমাদের অধিনায়ক হিসেবে থাকছে। ও মাঠে এবং মাঠের বাইরে দলের নেতা। ডার্বিতে অধিনায়ক হওয়া সম্মানের ব্যাপার।”
সমর্থকদের উদ্দেশে লাল-হলুদ কোচের আহ্বান, “সমর্থকদের বলব, স্টেডিয়ামে আসুন, গ্যালারি থেকে আওয়াজ তুলুন। ম্যাচ উপভোগ করুন। ইস্টবেঙ্গলকে গত ২ মরসুমের তুলনায় ভাল জায়গায় থাকতে হবে। আমার কাজ সেটা নিশ্চিত করা। ফলে আমার কাছে এটা বড় চ্যালেঞ্জ। আশা করি ইস্টবেঙ্গলকে লিগ টেবলে উপরের দিকে নিয়ে যেতে পারব।”
আরও পড়ুন-