সংক্ষিপ্ত
শনিবার এবারের আইএসএল-এ প্রথম কলকাতা ডার্বি। তার আগে সমর্থকদের কী বার্তা দিলেন এটিকে মোহনবাগানের ডিফেন্ডার শুভাশিস বসু এবং আক্রমণের অন্যতম ভরসা লিস্টন কোলাসো।
আইএসএল-এর ইতিহাসে শনিবারই প্রথম কলকাতায় ভরা স্টেডিয়ামে এটিকে মোহনবাগান ও ইস্টবেঙ্গলের লড়াই হতে চলেছে। এর আগে গত দুই মরসুমে কলকাতা ডার্বি হয়েছে গোয়ায় দর্শকশূন্য স্টেডিয়ামে। চারটি ম্যাচই জিতেছে সবুজ-মেরুন শিবির। এবার কি সমর্থকদের সামনে টানা পাঁচবার কলকাতা ডার্বি জিতবে এটিকে মোহনবাগান? সমর্থকরা আত্মবিশ্বাসী। দলও অ্যাওয়ে ম্যাচে কেরালা ব্লাস্টার্সকে ৫-২ গোলে হারিয়ে উজ্জীবিত। দলের প্রস্তুতি সারা। এবার মাঠে নেমে নিজেদের সেরা খেলাটা খেলতে হবে। হুগো বুমোস, জনি কাউকো, দিমিত্রি পেট্রাটোসরা যদি গত ম্যাচের মতো পারফরম্যান্স দেখাতে পারেন, তাহলে ডার্বি জয় বিশেষ সমস্যার হবে না। এগিয়ে থেকেই মাঠে নামছে সবুজ-মেরুন শিবির। তবে ডার্বি সবসময় ৫০-৫০। তাই ইস্টবেঙ্গলকে হাল্কাভাবে নিলে হবে না। বাগান কোচ হুয়ান ফেরান্দোকে সতর্ক থাকতেই হবে। দল যাতে গোলের সুযোগ কাজে লাগাতে পারে এবং নিজেদের গোলমুখ সুরক্ষিত রাখতে পারে, সেটা নিশ্চিত করাই এটিকে মোহনবাগান কোচের প্রধান লক্ষ্য।
বিবেকানন্দ যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনে প্রথমবার আইএসএল-এ কলকাতা ডার্বি খেলতে নামার আগে সবুজ-মেরুন রক্ষণভাগে অন্যতম ভরসা শুভাশিস বসু বলেছেন, “কেরালা ব্লাস্টার্সের সঙ্গে অ্যাওয়ে ম্যাচে ওদের এত সমর্থকের সামনে আমরা জিতেছি। এতে দলের মনোবল বেড়েছে এবং আত্মবিশ্বাসও বেড়েছে। এটা আমাদের অনেক সাহায্য করবে। ড্রেসিংরুমের পরিবেশ বদলে গিয়েছে। ডার্বি নিয়ে সবার মধ্যেই ইতিবাচক ভাবনা দেখা যাচ্ছে। এর আগে আমরা সবক'টা ডার্বি জিতে এসেছি। আশা করি এই ডার্বিটাও জিতব।”
ডার্বি প্রসঙ্গে এই ডিফেন্ডার আরও বলেছেন, “বাঙালি হিসেবে ডার্বি আমার কাছে স্পেশাল। ছোটবেলায় যখন ফুটবল খেলা শুরু করি, তখন ইস্টবেঙ্গল-মোহনবাগান ডার্বি দেখতাম আর ভাবতাম একদিন ডার্বি খেলব। এখন আমি ডার্বি খেলছি। এটা আমার কাছে বড় প্রাপ্তি। আমি ডার্বিকে স্মরণীয় করে রাখার চেষ্টা করব। সেই কারণে ডার্বিতে নিজের সেরাটা দেওয়ার চেষ্টা করব। ডার্বি জিতে সমর্থকদের উপহার দিতে চাই। আইএসএল-এ সব টিমই ভাল পারফর্ম করছে। ইস্টবেঙ্গল টিমও ভাল পারফর্ম করছে। গত ম্যাচ জিতেওছে। আমরা কোচের পরিকল্পনা অনুযায়ী খেলব। যে দুর্বলতাগুলি আছে, সেগুলি কাটিয়ে ওঠার চেষ্টা করব। যে জায়গাগুলিতে উন্নতি করা দরকার, সেই জায়গাগুলিতে উন্নতি করতে হবে। গত ম্যাচে আমরা গোলের অনেক সুযোগ তৈরি করেছিলাম এবং একে অপরকে সাহায্য করেছিলাম। আশা করি পরের ম্যাচেও এভাবেই খেলব। গোলের সুযোগ তৈরি করতে হবে এবং সেই সুযোগ কাজে লাগাতে হবে। তাহলে আমাদের ভাল ফল করতে সুবিধা হবে। কলকাতা লিগের হোক, ডুরান্ড কাপের হোক বা আইএসএল-এর, ডার্বিতে আলাদা কিছু নেই। সব বাঙালি এই ম্যাচের দিকে তাকিয়ে থাকে। সারা ভারতের এই ম্যাচে নজর থাকে। আমরা এই ম্যাচ জিতে ৩ পয়েন্ট পাওয়ার চেষ্টা করব। সমর্থকদের বলব, আপনারা আমাদের পাশে থাকুন। আমরা ট্রফি জিতে একসঙ্গে সেলিব্রেট করব।”
নিজেদের দল প্রসঙ্গে শুভাশিস বলেছেন, “এই মরসুমে আমাদের রক্ষণে নতুন বিদেশি এসেছে। সব দুটো ম্যাচ হয়েছে। আমি ডিফেন্ডার হিসেবে সবসময় গোল না খাওয়ার চেষ্টা করব। যত বেশি ম্যাচ গোল না খেয়ে শেষ করতে পারব, তত ভাল হবে আমাদের। তবে আমরা আক্রমণের উপর বেশি জোর দিই। তাই সবসময় দলকে সাহায্য করার চেষ্টা করব। ম্যাচ জিতে ৩ পয়েন্ট আনতে হবে আমাদের। পরের ম্যাচেও আমরা গোল না খেয়ে জেতার চেষ্টা করব। ম্যাচ জেতাই আসল কথা।”
ডার্বির আগে এটিকে মোহনবাগানের আক্রমণভাগের অন্যতম ভরসা লিস্টন কোলাসো বলেছেন, “আমরা প্রথম ম্যাচে হেরে গিয়েছিলাম। তাই দ্বিতীয় ম্যাচ জেতা জরুরি ছিল। আমরা ভাল জয় পেয়েছি। এই জয় গুরুত্বপূর্ণ ছিল। আমরা ডার্বিতে নিজের সেরাটা দেওয়ার চেষ্টা করব। আমি ইস্টবেঙ্গলের গত দুটো ম্যাচ দেখেছি। ওরা উন্নতি করছে। আমাদের জন্য এই ম্যাচটা কঠিন হবে। আমরা ডার্বির জন্য তৈরি হচ্ছি। সবাই জানে এটা কত বড় ম্যাচ। খেলোয়াড় হিসেবে আমি সব ম্যাচই জেতার চেষ্টা করি। এই ম্যাচও জেতার চেষ্টা করব। দল ও সমর্থকদের জন্য এই ম্যাচ জিততেই হবে। আমি গোল করি বা অন্য কেউ, দলের গোল পাওয়াই আসল। আমি সব ম্যাচেই গোল করার চেষ্টা করি। আশা করি ডার্বিতেও গোল করতে পারব। ডুরান্ড কাপে দর্শকদের সামনে ডার্বি খেলেছি। এবার আইএসএল-এও খেলব। আশা করি স্টেডিয়ামে অসাধারণ পরিবেশ থাকবে। আমি মাঠে নামার জন্য মুখিয়ে আছি। প্রচুর সমর্থক স্টেডিয়ামে থাকবে। এটা আমাকে ভাল খেলতে অনুপ্রাণিত করে। আশা করি সমর্থকদের জয় উপহার দিতে পারব।”
আরও পড়ুন-
ডার্বির আলাদা গুরুত্ব, আশা করি ৩ পয়েন্ট পাব, আত্মবিশ্বাসী ইস্টবেঙ্গল কোচ
লক্ষ্য টানা ৫ ডার্বি জয়, ক্লোজড-ডোর অনুশীলনে সবুজ-মেরুন