ভারতীয় মহিলা ফুটবল দলের নির্ভরযোগ্য ফুটবলার তিনি। নীল সাদা জার্সিতে জাতীয় মহিলা ফুটবল দলের মাঝমাঠের দায়িত্ব সামলাচ্ছেন প্রায় ৬ বছর ধরে। খেলার মাঠে প্রাণপণ লড়াই করে দেশের নাম উজ্জ্বল করা তার জীবনের স্বপ্ন। কিন্তু বর্তমানে দেশ জুড়ে চলছে মারণ করোনা ভাইরাসের দাপট। পরিস্থিতি সামাল দিতে চলছে চতুর্থ দফার লকডাউন। এই পরিস্থিতি শুধু নীল-সাদা জার্সি ও খেলার মাঠটারই বদল হয়েছে, তার পরিবর্তে গায়ে তুলে নিয়েছেন খাকি পোষাক। খেলার মাঠের পরিবর্তে রাস্তায় নেমে দিচ্ছেন এমার্জেন্সি ডিউটি। কিন্তু দেশের হয়ে লড়াইটা জারি রেখেছেন ফুটবলার ইন্দুমতি কাথিরেশন।
আরও পড়ুনঃক্রমশ দূরত্ব বাড়ছে বার্সা কোচ ও মেসির, অস্বস্তি বাড়ছে ক্লাব কর্তৃপক্ষের
ইন্দুমতি তামিলনাড়ুপুলিসের সাব ইন্সপেক্টর। চেন্নাইয়ের আন্নানগর এলাকায় ডিউটি দিচ্ছেন তিনি। খেলার মাঠের মতই সদা জাগ্রত প্রহরীর মতই লকডাউনে সেই মেয়েই সামলাচ্ছেন বাড়ির বাইরে বেরিয়ে পড়া মানুষকে। দেখছেন তাঁরা মুখাবরণ পরে বেরিয়েছেন কী না। রাস্তায় ঠায় দাঁড়িয়ে পরীক্ষা করছেন রাস্তায় বেরনো গাড়ির কাগজপত্র। কখনও করোনাভাইরাস আক্রান্ত রোগীর জন্য ডেকে দিচ্ছেন অ্যাম্বুল্যান্স। মুখাবরণ, হাতে গ্লাভস পরে নতুন চেহারায় রাস্তায় নেমে এই কাজ করতে পেরে নিজেকে গর্বিতই মনে করছেন ইন্দুমতী কাথিরেশন। ভারতীয় দলের ফুটবলার বলেছেন,'দুটো কাজই তো দেশের জন্য। ফুটবল মাঠে দেশকে জেতাতে নামি। আর এখানে সরকারি নিয়ম মেনে মানুষ যাতে চলেন, নিজেরা সুস্থ থাকেন, করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে জেতেন, সেই কাজে সাহায্য করছি। এই পরিস্থিতিতেই সকলেই পরিবারের সঙ্গে সময় কাটাচ্ছে। কিন্তু আমার মনে হয়েছে এই সময় দেশের পাশে দাঁড়ানো উচিৎ। নীল-সাদা জার্সির মতই খাকি উর্দিতে দেশের সেবা করতে পেরে আমি গর্বিত।'
আরও পড়ুনঃ'ভয়ঙ্কর সুন্দর মুহূর্ত',মৃত্যুকে উপেক্ষা করেই সঙ্গমে মত্ত যুগল,কিন্তু কেন এই কেরামতি
ফুটবলার হিসেবেও ইন্দুমতি কাথিরেশন যথেষ্ট সাফল্য পেয়েছেন। ২০১৪ সালে জাতীয় দলের জার্সিতে অভিষেক হয় তার। দেশের হয়ে এখনও ৩৪ ম্যাচ খেলেছেন ইন্দুমতি। গোল করেছেন ১২টি। ২০১৬ সালে এশিয়ান গেমসে সোনা জেতা ভারতীয় মহিলা দলেরও সদস্য ছিলেন তিনি। গত বছর মেয়েদের সাফ ফুটবল চ্যাম্পিয়নশিপে মিডফিল্ড জেনারেল হয়ে সামলেছেন প্রতিপক্ষকে। হয়েছেন যুগ্ম সর্বোচ্চ গোলদাতা। এছাড়াও ২০১৮-১৯ মরসুমে ইন্ডিয়ান উইমেন্স লিগ চ্যাম্পিয়ন সেতু এফসি দলকেও নেতৃত্ব দিয়েছিলেন ইন্দুমতি। ফুটবল মাঠের পাশাপাশি দেশের বিপদের দিনে খাকি উর্দি গায়ে ইন্দুমতির ভূমিকাকে কুর্ণিশ জানিয়েছে ভারতীয় ক্রীড়া মহল।