করোনাভাইরাস হটস্পট, হৃৎস্পন্দন বাড়িয়ে দিচ্ছে ভারতের এই ৬ শহর
ভারতে ক্রমে নভেল করোনাভাইরাস-এর দাপট বাড়ছে। ২১ দিনের লকডাউন চলছে। কিন্তু কোনওভাবেই এই রোগকে নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না। লকডাউন-এর সময়সীমা বাড়ানোর দাবি উঠেছে। হয়তো শেষ পর্যন্ত তা বাড়ানোও হবে। তবে ভারত-কে সত্যি সত্যি চিন্তায় ফেলে দিচ্ছে ৬ বড় শহর। কীভাবে এই শহরগুলিতে করোনার দাপট সামলানো যাবে, ভাবলেই হৃৎস্পন্দন বেড়ে যাচ্ছে প্রশাসনিক কর্তাদের -
amartya lahiri | Published : Apr 9, 2020 5:12 PM IST / Updated: Apr 09 2020, 10:45 PM IST
ভারতের যে রাজ্যে এখন করোনাভাইরাস সংক্রমণ সবচেয়ে দ্রুত হারে ছড়াচ্ছে সেই রাজ্য হল মধ্যপ্রদেশ। আর এই রাজ্যের মধ্যে সবচেয়ে খারাপ অবস্থা ইন্দোর-এর। বুধ থেকে বৃহস্পতিবারের মধ্যে ইন্দোরে ৪০ জন করোনার পজিটিভ রোগীর সন্ধান পাওয়া গিয়েছে। এরফলে ইন্দোরে মোট করোনা রোগীর সংখ্যা পৌঁছেছে ২১৩-য়। আর এখন পর্যন্ত, ইন্দোরে এই রোগে মৃত্যু হয়েছে ২২ জনের। এদিন ভারতের প্রথম ডাক্তারের মৃত্যুর খবরও এসেছে ইন্দোর থেকেই। ইন্দোরের এই পরিস্থিতির পিছনে সরকারের দেরিতে পদক্ষেপকেই দায়ী করা হয়েছে। এদিনই ইন্দোর শহর পুরোপুরি সিল করে দেওয়া হয়েছে।
ইন্দোরের পর মধ্যপ্রদেশে সবচেয়ে খারাপ অবস্থা রাজধানী ভোপাল-এর। এখানে ৯৪ জন করোনা রোগী পাওয়া গিয়েছে। ক্রমবর্ধমান করোনা হুমকির প্রেক্ষিতে নবগঠিত মধ্য়প্রদেশ সরকার কঠোর সিদ্ধান্তও নিয়েছে। ভোপালের সিএমএইচ-কে ব্যর্থতার দায়ে সরানো হয়েছে। বলা হচ্ছে যে তিনি পরিস্থিতি সামাল দিতে পারেননি। স্বাস্থ্য বিভাগ আক্রান্ত সমস্ত কর্মচারীর যোগাযোগের ইতিহাস খতিয়ে দেখছে।
মধ্যপ্রদেশের ইন্দোর, ভোপাল ছাড়া যে শহরটিকে সিল করা হয়েছে, সেটি হল উজ্জয়িন। করোনাভাইরাসে এই শহরে এখনও পর্যন্ত ৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। আর আক্রান্তের সংখ্যা ১৫। এই শহরে এখন লোক চলাচল সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। তারমধ্য়ে উজ্জয়িন শহরে স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মীদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করার অভিযোগও উঠছে।
ক্রমশ সিওয়ান শহর বিহারের উহান হয়ে উঠছে। শুধু বৃহস্পতিবারই এই শহরে ১০ জন করোনা পজিটিভ রোগীর সন্ধান মিলেছে। সবমিলিয়ে বিহারে এখন মোট ৫১ জন করোনা রোগী আছেন, যার মধ্যে ২০ জনই সিওয়ান-এর বাসিন্দা। প্রদেশে করোনার শিকারের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫০-এ। সমস্যা হয়েছে ওমান থেকে ফিরে আসা এক রোগীকে নিয়ে। তাঁর থেকেই এই জেলা সদর শহরে ব্যাপক সংক্রমণের ভয় দেখা যাচ্ছে। এদিনের ১০ রোগীর মধ্যে ৫ জনই ওই ওমান থেকে আসা রোগীর সম্পর্কিত। তাদের মধ্যে ৫০ ও ২০ বছর বয়সী দুই মহিলা, ৩০ বছরের একজন পুরুষ এবং ১২ ও ১০ বছরের দুটি শিশু। সবচেয়ে সবচেয়ে বড় কথা সরকারি নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ খুব বড় হয়ে দেখা দিয়েছে।
ভারতে করোনার প্রাদুর্ভাব সবচেয়ে বেশি মহারাষ্ট্রে। রাজ্যের মধ্যে সবচেয়ে খারাপ অবস্থা প্রধান শহর মুম্বই-এর। বৃহস্পতিবার রাত পর্যন্ত এই শহরে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ৮৫৭, মৃত্যু হয়েছে ৫ জনের। সবচেয়ে উদ্বেগজনক গত ৪ এপ্রিল থেকে মহারাষ্ট্রে প্রতিদিন শতাধিক নতুন রোগীর সন্ধান মিলেছে, যার বেশিরভাগই মুম্বইয়ের বাসিন্দা। ভয় ধরাচ্ছে ধারাভি। গোটা ধারাভি এলাকাই এই মুহূর্তে সম্পূর্ণ সিল করে দেওয়া হয়েছে।
মুম্বইয়ের পরই মহারাষ্ট্রে সবচেয়ে খারাপ অবস্থায় আছে পুনে। বৃহস্পতিবার রাত পর্যন্ত এই শহরে ২০০ জন করোনা আক্রান্ত। আর গোটা মহারাষ্ট্রে সংখ্যাটা ১৩৪৬। অর্থাৎ, শুধু মুম্বই ও পুনে শহরেই মহারাষ্ট্রের প্রায় ৮০ শতাংশ করোনা রোগী আছেন। বিশেষত এই দুই শহরের জন্য়ই মহারাষ্ট্র রাজ্যে নিশ্চিতভাবে লকডাউনের সময় বাড়বে।