লালফৌজকে শিক্ষা দিতে নতুন অস্ত্র ভারতীয় সেনার , শত্রুর সন্ধান দিতে ময়দানে নামল তিব্বতি সারমেয় বাহিনী

লাদাখে সীমান্ত উত্তেজনার মাঝে চিনকে পরাস্ত করতে বার বার উঠে আসছে স্পেশ্যাল ফ্রন্টিয়ার ফোর্স বা এসএফএফের কথা। তিব্বতি বংশোদ্ভূতদের নিয়ে গঠিত ভারতের এই বিশেষ বাহিনী। তবে এবার কেবল তিব্বতি সেনা নয়, লাদাখে শত্রুর সন্ধান দিতে পাহাড়ি কুকুরদেরও প্রশিক্ষণ দিতে শুরু করল ভারতীয় সেনা।

Asianet News Bangla | Published : Sep 10, 2020 4:02 AM IST
111
লালফৌজকে শিক্ষা দিতে নতুন অস্ত্র ভারতীয় সেনার , শত্রুর সন্ধান দিতে ময়দানে নামল তিব্বতি সারমেয় বাহিনী

ঠিক যেমনভাবে সেনা কুকুরদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়, লাদাখের কয়েকটি প্রজাতির কুকুরকে তেমনভাবেই প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। সীমান্তে উত্তপ্ত পরিস্থিতিতে তারাও ভারতীয় সেনাবাহিনীর শক্তি হয়েই কাজ করবে। 

211

সীমান্তে ভারত ও চীন  পরিস্থিতি উত্তপ্ত। এরই মধ্যে ভারতীয় সেনা  নিজেদের প্রতিরক্ষা ও শত্রুর সন্ধান দেওয়ার জন্য প্রশিক্ষণ দিতে শুরু করবে টিবেটিয়ান ম্যাস্টিভ, বাখারওয়ালের মত ভয়ঙ্কর শিকারী কুকুরদের।

311

এই কুকুরগুলি অত্যন্ত সুদক্ষ শিকারী হয়ে থাকে। একই সাথে বরফ ঘেরা পাহাড়ি এলাকায় এরা অবিশ্বাস্য রকমের গতিতে চলাফেরা করতে পারে৷ ভয়ঙ্কর আক্রমণাত্মক এই কুকুরগুলির দৃষ্টিশক্তি ও ঘ্রাণশক্তিও প্রখর৷ একদিকে বাখারওয়াল প্রজাতির কুকুরেরা যেমন ভালো গার্ড ডগ হতে পারে। তেমনই টিবেটিয়ান ম্যাস্টিভ হয়ে উঠতে পারে নেকড়ের চেয়েও বেশী ভয়ংকর৷ পাশাপাশি, পাহাড়ি এলাকার কুকুর হওয়ায় হিমাঙ্কের নীচের তাপমাত্রায় এদের অসুবিধা হবে না৷
 

411

বাখারওয়াল প্রজাতির কুকুর সাধারণত পীরপঞ্জল রেঞ্জেই পাওয়া যায়। পাহাড়ি বাখারওয়াল ও গুজ্জর সম্প্রদায়ের মানুষরা এই জাতীয় কুকুর পালন করেন। দুর্গম পাহাড়ি এলাকায় পাহারা দেওয়ার কাজে, শিকার ধরা বা অন্যান্য কাজে এই কুকুরকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। এরা দুরন্ত শিকারি, ঘ্রাণ শক্তি খুবই বেশি। তার থেকেও বড় কথা পাহাড়ি খাঁজ বা উপত্যকাতেও তাদের গতি প্রশংসনীয়। এই প্রজাতির কুকুরকে অনেকসময়ই সেনা ছাউনি পাহারার কাজে লাগান জওয়ানরা।

511

ভারতীয় সেনা সূত্র জানাচ্ছে, প্যাংগং হ্রদের উত্তর ও দক্ষিণে যেভাবে জমি দখলের চেষ্টা চালাচ্ছে চিন, তাতে এক মুহূর্তের জন্য অসর্তকতাও বিপদ ডেকে আনতে পারে। কালা টপ, হেলমেট পাহাড়ের নীচে যুদ্ধট্যাঙ্ক সাজিয়ে বসে গেছে তারা। চুসুল, মলডোর কাছেও লাল ফৌজের তৎপরতা লক্ষ্য করা গেছে। এমন পরিস্থিতিতে শত্রু সেনার অবস্থান জানার জন্য পাহাড়ি কুকুরের দক্ষতাকে কাজে লাগানো যেতে পারে। বাখারওয়াল প্রজাতির কুকুরা এত দ্রুত ট্রেনিং নিতে পারে যে সেনা অভিযানেও তাদের কাজে লাগানো যায়।

611

এক সেনা আধিকারিক বলছেন, স্থানীয় বাখারওয়াল কুকুররা খুব ভাল গার্ড-ডগ হয়। সেনা ক্যাম্প পাহারা দেওয়া, রাতের বেলা শত্রু সেনার গতিবিধি আঁচ করলে তা জানান দেওয়া এমনকি প্রয়োজনে হামলাও করতে পারে তারা। তিব্বতি ম্যাস্টিফ বিশেষ করে ব্ল্যাক ম্যাস্টিফকেও প্রশিক্ষণ দিয়ে সেনা অভিযানের কাজে লাগানো যায়। প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ম্যাস্টিফ জাতীয় কুকুরকে সঠিক ট্রেনিং দিলে তারা নেকড়ের থেকেও বেশি আক্রমণাত্মক হতে পারে। তাছাড়া ঘন লোমে ঢাকা এই কুকুর পাহাড়ি এলাকার দুর্গম পরিবেশেও মানিয়ে নিতে পারে।

711

সেনা সূত্রে আরো মনে করা হচ্ছে, এই কুকুরেরা যেমন শত্রুপক্ষের লুকিয়ে রাখা মাইনের সন্ধান দিতে পারবে। তেমনই কোনো কারনে পাহাড়ে ধস নামলে বরফে চাপা পড়া সেনাদের খুব তাড়াতাড়ি খুঁজে  দিতে পারে। এর আগেও বরফে চাপা পড়া সেনাদের খুঁজতে সাহায্য করেছে কুকুরেরা। 

811

সেনাবাহিনীর আরও অনেক কাজেই লাগানো যেতে পারে পাহাড়ি কুকুরদের। সেনা আধিকারিকরা বলছেন, শীতের লাদাখে বরফের ধস নেমে অনেকসময়েই সেনা ছাউনি ভাসিয়ে নিয়ে যায়। বরফের মধ্যে চাপা পড়ে যান জওয়ানরা। সেই সময় উদ্ধারকাজে বিশেষ সাহায্য করে পাহাড়ি কুকুররা। বাখারওয়াল প্রজাতির কুকুরকে অ্যাভাল্যাঞ্চ রেসকিউ অপারেশন -এর কাজে লাগানো যায়। ২০-৩০ ফুট গভীরে বরফের স্তরে দেহ চাপা পড়ে থাকলেও তার খোঁজ দিতে পারে এই কুকুররা। একইভাবে ল্যাব্রাডর ও জার্মান শেফার্ড প্রজাতির কুকুররাও লাদাখের চরম আবহাওয়ার পরিবেশেও মানিয়ে নিতে পারে। এরাও দুর্দান্ত শিকারি, ঘ্রাণ শক্তিও তারিফ করার মতো।

911

অতীত থেকে শিক্ষা নিয়েছে ভারত৷ যে কোনো সময় লাল ফৌজ সমস্ত নিয়মের শৃঙ্খল ভেঙে সেনা ঘাঁটিতে হামলা করতে পারে। তাই সব সময় সতর্ক থাকতে চায় ভারতীয় সেনা৷ একাজে মানুষের চেয়েও কুকুর অনেক বেশি পারদর্শী। অন্যদিকে পাহাড়ি উপত্যকায় ঘাপটি মেরে বসে থাকা চীনা সেনার অবস্থান ও প্রয়োজনে তাদের আক্রমণ করতেও কুকুরের চেয়ে বিশ্বস্ত আর কোনো প্রাণী নেই। তাই এবার সেনায় যোগ হচ্ছে এই ভয়ঙ্কর কুকুরদের প্রজাতি।

1011

সেনা আধিকারিকরা বলছেন, ক্যাম্প পাহারা, ইনফ্যান্ট্রি পেট্রলিং, লুকিয়ে রাখা মাইন ও বিস্ফোরকের খোঁজ দেওয়া, উদ্ধার কাজ ইত্যাদি বিভিন্ন অপারেশনে সেনা কুকুরদের দক্ষতা আগেও প্রমাণিত হয়েছে। লাদাখে লাল সেনার মুখোমুখি অবস্থানে এখন ভারতীয় কম্যান্ডোদের এই জাতীয় কুকুরদেরই প্রয়োজন।

1111


স্থানীয় লাদাখি কুকুরদের ইতিমধ্যেই প্রশিক্ষম দিতে শুরু করেছে সেনাবাহিনীর আর্মি ডগ ইউনিট। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বাখারওয়াল, তিব্বতি ম্যাস্টিফ ছাড়াও, জার্মান শেফার্ড, বিমাচলি হাউন্ড, রাজাপালায়াম, কান্নি, চিপ্পিপারাই জাতীয় কুকুরদেরও ট্রেনিং দেওয়া হচ্ছে। এই প্রজাতির কুকুরা খুব ভাল স্নিফার ডগও। পাহাড়ি খাঁজে কোথাও মাইন পোঁতা থাকলে তার সন্ধান দিতে পারবে এই কুকুররা।

Share this Photo Gallery
click me!

Latest Videos