আমেরিকাকে চটিয়ে রাশিয়া পাড়ি দিচ্ছে ভারতীয় সেনা, কী পদক্ষেপ নেবেন প্রেসিডেন্ট বাইডেন

মার্কিন নিষেধাজ্ঞার ঝুঁকিতে গুটিয়ে যাচ্ছে না ভারত। চলতি বছরই রাশিয়া থেকে ভারতে এসে পৌঁছবে এস-৪০০ বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা (S-400 Air Defence System)।

সেগুলির পরিচালনার প্রশিক্ষণের জন্য শীঘ্রই রাশিয়া পাড়ি দিচ্ছেন ভারতীয় সেনা (Indian Army)-র বিশেষজ্ঞদের একটি দল।

মঙ্গলবার, এই দলটির সম্মানে নয়াদিল্লির রুশ দূতাবাসের একটি অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়। সেখানে ভারতে নিযুক্ত রুশ রাষ্ট্রদূত নিকোলে কুদাসেভ (Nikolay Kudashev) জানান, এই ঘটনা ভারত ও রাশিয়ার 'কৌশলগত অংশীদারিত্বের নতুন পর্ব'এর সূচনা করবে।

২০১৮ সালের অক্টোবরে রাশিয়ার থেকে পাঁচটি এস-৪০০ সিস্টেম ক্রয়ের জন্য ৫.৪ বিলিয়ন ডলারের চুক্তি স্বাক্ষর করেছিল ভারত। ২০২১ সালেই এই প্রতিরক্ষা সিস্টেম সরবরাহ শুরু হওয়ার কথা। আগামী পাঁচ বছরের মধ্যে চুক্তি মতো সবকটি প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ভারতে পৌঁছে যাবে বলে জানিয়েছে রাশিয়া।

গত মাসেই কুদাশেভ বলেছিলেন, এস-৪০০ বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা সহ সামরিক হার্ডওয়্যারের জন্য রাশিয়ার সঙ্গে ভারতের চলমান চুক্তিগুলির কাজ 'ভালভাবে এগিয়ে চলেছে'। এদিন তিনি জানিয়েছেন, 'আন্তর্জাতিক আইন এবং রাষ্ট্রসংঘের সনদ'এর ভিত্তিতে, রাশিয়ার 'দ্বিপাক্ষিক এবং বহুপাক্ষিক প্রতিশ্রুতি'র অংশ হিসাবেই এই পাঁচটি এস-৪০০ সিস্টেম সরবরাহ করা হচ্ছে ভারত-কে। এই চুক্তি রুশ-ভারত সামরিক এবং সামরিক-প্রযুক্তিগত সহযোগিতার অন্যতম প্রধান প্রকল্প, বলেও জানান তিনি।

তবে রাশিয়ার থেকে ভারতের সামরিক সরঞ্জাম কেনার বিষয়ে আপত্তি জানিয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। সেই দেশের বিদায়ী ট্রাম্প প্রশাসন এর আগে রাশিয়ার থেকে এই বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা কেনার জন্য তাদের ন্যাটো (NATO)-সঙ্গী তুরস্ক-এর উপর নিষেধাজ্ঞা চাপিয়েছিল। এই বিষয়ে তাদের কাউন্টারিং আমেরিকাস অ্যাডভারসারিস থ্রু স্যাংশন অ্যাক্ট বা কাটসা (CAATSA) আইন রয়েছে।

এর আগে আমেরিকার কাছে এই আইন থেকে ভারতকে মকুফ করার আবেদন করা হয়েছিল। কিন্তু, ট্রাম্প প্রশাসন স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে, তার কোনও সম্ভাবনা নেই। নবাগত বাইডেন প্রশাসন কী করে, সেদিকেই তাকিয়ে রয়েছে ভারত। তার মধ্যেই চলছে এস-৪০০ চুক্তি এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার কাজ।

ভারত সাফ জানিয়ে দিয়েছে, এই চুক্তি আমাদের স্বাধীন বিদেশ নীতির অংশ। জাতীয় সুরক্ষা স্বার্থের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখেই এই প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রের অধিগ্রহণের বিষয়গুলি ঠিক করা হয়। বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র অনুরাগ শ্রীবাস্তব (Anurag Srivastava) বলেছেন, বিশ্বব্যাপী ভারত এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে যেমন একটি কৌশলগত অংশীদারিত্ব রয়েছে, রাশিয়ার সঙ্গেও ভারতের একটি বিশেষ এবং সুবিধাজনক কৌশলগত অংশীদারিত্ব রয়েছে। ভারত সর্বদাই একটি স্বাধীন বিদেশ নীতি অনুসরণ করেছে। আমেরিকাকে তা বুঝতে হবে।