হিংসা-কে লবডঙ্কা, অশান্ত দিল্লিতে হিন্দু বোনের বিয়ে দিলেন তাঁর মুসলিম ভাইরাই
গত চারদিন ধরে উত্করপূর্ব দিল্লিতে যেসব জায়গায় ভয়াবহ আকার ধারণ করেছিল হিংসা, তারমধ্যে অন্যতনম চাঁদবাগ এলাকা। সেখানরকারই এক মুসলিম অধ্য়ুষিত পাড়ায় বাড়ি হিন্দু বাড়ির মেয়ে সাবিত্রী প্রসাদের। হিংসা যেদিন চরম আকার ধারণ করেছিল, সেই মঙ্গলবারই তাঁর বিয়ে ছিল। এই অশান্ত পরিবেশে বিয়ের মতো শুভানুষ্ঠান প্রায় বন্ধ হতে বসেছিল। হল না, তাঁদের মুসলিম প্রতিবেশীদের জন্যই -
amartya lahiri | Published : Feb 28, 2020 10:38 AM IST / Updated: Feb 28 2020, 04:10 PM IST
বিয়ে হওয়ার কথা ছিল গত মঙ্গলবার। সোমবার থেকেই বিভিন্ন জায়গা থেকে ঝামেলার খবর পাচ্ছিলেন সাবিত্রী প্রশাদের পরিবার। কিন্তু তাও ২৩ বছরে সাবিত্রী সাজগোজ বন্ধ রাখেনি। গায়ে হলুদ মেখে চান করা, হাতে মেহেন্দি পরা সবই চালু রেখেছিল। ভেবেছিল, পরের দিন আবহাওয়া ঠান্ডা হয়ে যাবে।
ঠান্ডা হওয়া তো দূর, মঙ্গলবার চাঁদ বাগ এলাকার পরিস্থিতি একেবারে অগ্নিগর্ভ হয়ে ওঠে। তাঁরা বাড়িরর ছাদে গিয়ে দেখেছিলেন চারিদিকে শুধু ধোয়া আর আগুন। ওই অবস্থায় সাবিত্রীর বাবা ভোদয় প্রসাদ বিয়ে স্তগিত রাখার সিদ্ধান্ত নেনষ পাত্রের বাড়িতে ফোন করে জানিয়ে দেন, এই পরিস্থিতি তাঁদের বাড়ি বিয়ে করতে আসাটা ঝুঁকির হয়ে যাবে। সাবিত্রীর চোখে জল চলে এসেছিল।
সাবিত্রীর কান্না দেখে ভোদয়ের পাশে এসে দাঁড়ান তাঁর মুসলিম প্রতিবেশীরা। তাঁরাই বরাভয় দেন তাঁকে। তাতেই পরের দিন অর্থাৎ বুধবার ছোট অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে আইনত বিয়েটা সেড়ে ফেলার সিদ্ধান্ত নেন ভোদয় শর্মা। পাত্রপক্ষও রাজি হয়ে যায়। আর মুসলিম প্রতিবেশীদের উপস্থিতিতেই হয় সাবিত্রীর বিয়ে। বিবাহের পর আবেগ জড়জড় সাবিত্রী জানান, তাঁর মুসলিম ভাইরাই তাঁর বিবাহ দিয়েছেন।
বিবাহের পরও সমস্যা ছিল নবদম্পতির শ্বশুড়বাড়ি যাওয়া। সেই ক্ষেত্রেও মুসলিম প্রতিবেশীরাই এগিয়ে আসেন। তাঁরাই সঙ্গে গিয়ে উপদ্রুত এলাকা পার করে দেন সাবিত্রী ও তাঁর স্বামীকে।
ভোদয় শর্মা জানিয়েছেন, বহুদিন ধরে তাঁরা এই মুসলিম অধ্যূষিত এলাকায় বসবাস করছেন। কোনওদিন কারোর সঙ্গে কারোর ঝামেলা হয়নি। বাড়ি ঘর বাঙচুর যাররা করছে, যারা শত্রুতার পরিবেশ তৈরি করছে তারা সকলেই বহিরাগত বলেই দাবি করেছেন তিনি।