প্রাচিনতম মহানগর ধোলাভিরা ইউনেস্কোর (UNESCO) ওয়ার্ল্ড হেরিটেড সাইটের তকমা পেল। এটি হরপ্পা সভ্যতার প্রমান বহন করে চলছে। গুজরাটের এই ধোলাবিরাকে বিশ্ব ঐতিত্যের তালিকায় স্থান দেওয়া হয়েছে বলে সংস্থার পক্ষ থেকে মঙ্গলবার জানান হয়েছে।
গুজরাটের কচ্ছেররাণ উপত্যকার কাছে অবস্থিত হরপ্পা সভ্যতার সাক্ষ বহনকারী প্রাচিনতন মহাশহর ধোলাবিরা। তেলাঙ্গনার রুদ্রেশ্বর মন্দিরের পর এটিও ইউনেস্কোর (UNESCO ) ওয়ার্ল্ড হেরিটেজের তকমা পেয়েছে। এই নিয়ে গুজরাটের চারটি পর্যটন কেন্দ্র এই তকমা পেল।
210
ভারতে হরপ্পা সভ্যতার মাত্র দুটি নিদর্শন রয়েছে। দুটি প্রাচিনতম শহরগুলির মধ্য একটি হল ধোলাবিলা। আজ থেকে প্রায় ৪ হাজার বছর আগে সিন্ধু সভ্যতার আমলে এই শহরের পত্তন হয়েছিল বলেও দাবি করেন ঐতিহাসিকরা।
310
ধোলাবিরা আজ ধ্বংসাবশের মাত্র। কিন্তু পর্যটক আর ঐতিহাসিকদের কাছে এই গুরুত্ব অপরিসীম। প্রাচিন এই জরাজীর্ণ শহরেই সিন্ধু সভ্যতার সাতটি পর্বের সন্ধান পাওয়া যায় বলেও জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। খ্রিষ্টপূর্ণ ২৯০০ থেকে খ্রিষ্টপূর্ব ১৫০০ অব্দ পর্যন্ত হরপ্পা সংস্কৃতির সবকটি চিহ্ন এই শহরে রয়েছে।
410
এটি আবিষ্কা করা হয়েছিল ১৯৬৭ সালে। স্থানীয়দের কাছে কোটাডা (যার অর্থ দুর্গ) নামে পরিচিত ছিল ধোলাবিরা। ৬৭ সালে ভারতীয় প্রত্নতাত্ত্বিকরা এই ভগ্নাবশেসের সন্ধান পেয়েছিলেন। ৯০ সাল থেকে পরিকল্পিতভাবে খননকার্য শুরু হয়েছিল।
510
এই কেন্দ্র থেকে পোড়ামাটির একাধিক জিনিপত্র পাওয়া গিয়েছিল। পাশাপাশি সোনা, তামার গয়নাও পেয়েছিলেন বিশেষজ্ঞরা। সিল, ফিশ হুক, পশুর মূর্তির, একাধিক বাসনপত্র, কলসিও পাওয়া গিয়েছিল। বেশ কিছু জিনিস বিদেশ থেকে আমদানি করা হয়েছিল।
610
ধোলাবিরায় খনন কার্য চালিয়ে প্রত্নতাত্ত্বিকতা ১০টি পাথরের শিলালিপি পেয়েছিলেন। সেগুলি সিন্ধুবাসীদের বলেও দাবি করা হয়েছে। তবে লিপিগুলি এখনও পর্যন্ত পাঠোদ্ধার সম্ভব হয়নি। ধোলাবিরা যে উন্নতমানের শহর ছিল তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না।
710
সিন্ধু আমলের অন্যান্য কেন্দ্রগুলির থেকে এটি অনেকটাই এগিয়ে ছিল। কারণ প্রাচিন এই সভ্যতায় জল সংরক্ষণের নিদর্শন পাওয়া গেছে। ত্রিস্তরীয় প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ছিল। বৃষ্টির জল ভূগর্ভস্থ জলাশয়ে ধরে রাখার মত উন্নয় ব্যবস্থা ছিল এই শহরে। দেওয়ারগুলি ছিল ইটের তৈরি।
810
এই এলাকায় কোনও নদী ছিল না। তাই জলের অভাব মেটাতে শহরে মোট ৯টি জলাশয় তৈরি করা হয়েছিল। সেখানেই বৃষ্টির জল ধরে রাখার ব্যবস্থা করা হয়েছিল। যা আজই চমক দেয় ঐতিহাসিকদের।
910
ধোলাবিরা কিছুদিন আগে পর্যন্ত পরিত্যক্ত ছিল। গুজরাট ট্যুরিজিমের অফিশিয়াল সাইটে বলা হয়েছে এই এলাকার বসতি স্থাপনকারীরা নিজেদের উদ্যোগে জীবনকে সহজ করার ব্যবস্থা করেছিল। তাদের কঠোর পরিশ্রম আরও সভ্যতার ঐতিহ্য বহন করে চলেছে। এই এলাকায় মরুভূমি ছিল বলেও প্রমাণ পাওয়া যায়।
1010
এটি সেই সময় কচ্ছের রানের কাঁচ মরুভূমিতে অবস্থিত ছিল। অভয়ারণ্য বেট দ্বীপের মধ্যেই ছিল এই উন্নতমানের সভ্যতা। এই শহরে দুটি স্টেডিয়াম ছিল বলেও দাবি করেন ঐতিহাসিকরা। একটি আয়োতন ঠছিল ১.৬৫,০০০ বর্গফুট।