গ্লোবাল ক্লাইমেট স্ট্রাইক, কলকাতা থেকে নিউইয়র্কে চলছে ধর্মঘট, অভিনব প্রতিবাদ দিল্লিতে
ভেঙে গেল দেশ-মহাদেশের বাধা। বিশ্বব্যপী কোটি কোটি মানুষ সামিল প্ল্যাকার্ড হাতে স্লোগান দিতে দিতে সামিল হলেন ধর্মঘটে। পৃথিবীর ইতিহাসে এইরকম আন্দোলন দেখা যায়নি। এটা পৃথিবী বাঁচানোর লড়াই। মানুষের হাতে যেভাবে বিশ্বউষ্ণায়ন চলছে তার বিরুদ্ধে সারা পৃথিবীর মানুষের সতঃস্ফূর্ত প্রতিবাদ। আগামী সপ্তাহেই রাষ্ট্রসংঘের সাধারণ পরিষদের বৈঠক শুরু হচ্ছে। তার আগেই জলবায়ু পরিবর্তনের বিপদ নিয়ে গর্দজে উঠলেন পরিবেশ আন্দোলনকারীরা।
ডুবছি না আমরা লড়ছি - এই আন্দোলন শুরু হয়েছিল প্রশান্ত মহাসাগরীয় দেশ কিরিবাতি, সলোমন আইল্যান্ড, ভানুয়াতু-তে। সমুদ্রের জলস্তর যেভাবে বাড়ছে তাতে আগামীদিনে এই সবকটি রাষ্ট্রই সমুদ্রের তলায় তলিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। আন্দোলনকারীরা শুক্রবার প্ল্যাকার্ড তুলে ধরে বললেন, 'আমরা ডুবছি না, লড়ছি'।
আজ স্কুল বন্ধ - সমুদ্রের জল ক্রমশ উষ্ণ হচ্ছে। যার প্রভাবে অস্ট্রেলিয়ার গ্রেট বেরিয়ার রিফ-এর অর্ধেকই প্রায় নষ্ট হয়ে গিয়েছে। এই দেশে প্রায় ৩ লক্ষ ৫০ হাজার মানুষ এই জলবায়ু ধর্মঘটে সামিল হলেন। স্কুলের ছাত্র-ছাত্রীদের স্কুলে না গিয়ে এই আন্দোলনে যোগ দিতে উৎসাহ দেওয়া হয়।
অস্ট্রেলিয়া থেকে এশিয়া - থাইল্যান্ড, জাপান, চিন -সহ বিভিন্ন দেশেই স্কুল শিশু থেকে পরিবেশ আন্দোলনকারীরা জলবায়ু ধর্মঘটে অংশ নেন।
দিল্লিতে শব মিছিল - ভারতের দিল্লিতে পরিবেশ আন্দোলনকারীরা এক অভিনব উপায়ে প্রতিবাদ জানান। আন্দোলনকারীদের দেখা যায় প্ল্যাকার্ড, ব্যানার হাতেই মাটিতে মরার মতো শুয়ে থাকতে।পরিবেশ সংরক্ষণের জন্য এখনই ব্যবস্থা না নিলে যে আগামী প্রজন্মের হাল এরকমই হবে তাই বোঝাতে চেয়েছেন তাঁরা।
কলকাতায় আন্দোলন - পিছিয়ে থাকেনি আমাদের শহর কলকাতাও। কলকাতার ব্যস্ত রাস্তাতেও স্কুলের শিক্ষার্থীদের এই আন্দোলনে অংশ নিতে দেখা যায়। তাদের সংগঠিত করেছিল পশ্চিমবঙ্গ বিজ্ঞান মঞ্চ।
আফ্রিকা - এরপর আন্দোলন ছড়ায় আফ্রিকা মহাদেশে। আফ্রিকার অধিকাংশ দেশে ৪০ শতাংশের বেশি মানুষ বিশ্ব উষ্ণায়ন, জলবায়ু পরিবর্তন সম্পর্কে সচেতনই নন। কেপটাউনে ডিসট্রিক্ট সিক্স থেকে পার্লামেন্ট পর্যন্ত মিছিল করেন পরিবেশ কর্মীরা। ঘানাতেও বড় মিছিল হয়।
আন্দোলনে সামিল ইউরোপও - ইউরোপের ইংল্যান্ড, জার্মানি, বেলজিয়াম, ফ্রান্স প্রায় সব দেশেই দেখা গিয়েছে হাজার হাজার মানুষ মিছিল করেছেন আগামীর পৃথিবীকে সুরক্ষিত করার লক্ষ্যে। বার্লিনে বরফের চাঁইয়ের উপর গলায় ফাঁস দিয়ে দাঁড়িয়ে প্রতিবাদীরা বুঝিয়োছেন, হাতে সময় কতটা কম।
প্লাস্টিকে ঢেকেছে জগত জননী - অবশেষে আমেরিকা মহাদেশে পৌঁছায় এই আন্দোলন। মেক্সিকোর রাজধানী মেক্সিকো সিটিতে জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুদ্ধে হাজার হাজার মানুষ মিছিলে সামিল হন। এক মহিলাকে দেখা যায়, সারা গায়ে পৃথিবীর মতো রঙ করে তারপর প্লাস্টিকের লেবেলে মুড়ে প্লাস্টিক ব্যবহারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে।
লাতিন আমেরিকা - লাতিন আমেরিকার চিলি, কলম্বিয়া, এল সালভাদোর-সহ সব দেশেই জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুদ্ধে সরকারি তরফে পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি করে মিছিল হয়েছে।
গর্জে উঠল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র - সবচেয়ে বড় প্রতিবাদ দেখা গিয়েছে অবশ্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে। প্রায় সব শহরেই হাজার হাজার মানুষ প্রতিবাদে সামিল হয়েছেন।
মূল মিছিলের নেতৃত্বে গ্রেটা - আর এই আন্দোলনের প্রধান মুখ গ্রেটা থুনবার্গ নেতৃত্ব দেন সবচেয়ে বড় মিছিলটিতে। সুইডেনের ১৬ বছরের এই তরুণী ২০১৬ সাল থেকেই স্কুল না গিয়ে বিশ্ব উষ্ণায়ন নিয়ে কাজ করা শুরু করেছিলেন। তাঁর অনুপ্রেরণাতেই সারা বিশ্বে ছড়িয়ে গিয়েছে এই আন্দোলন। নিউইয়র্কের ম্যান হাটনেই রাষ্ট্রসংঘের সদর দফতর। সেখানে গ্রেটার নেতৃত্বে হাজার হাজার তরুণ তরুণী প্রতিবাদ মিছিলে অংশ নেন।