২৬ বছরের হয়েছিলেন মেয়র, এখন খুন হওয়ার অপেক্ষায় - ছবিতে ছবিতে চিনে নিন দুর্ধর্ষ আফগান যুবতীকে

'আমার প্রিয় জন্মভূমি, জানি তুমি কষ্ট পাচ্ছ এবং দুঃখে আছো। আমি জানি এটা তোমার জন্য কঠিন সময়, কারণ আগন্তুকরা তোমাকে পুড়িয়ে মেরে তোমাকে ধ্বংস করতে চায়। কিন্তু তোমার প্রকৃত সন্তান, যারা তোমাকে গড়ে তুলতে চাইছে, তারা কিন্তু পূর্ণ সাহসের সঙ্গে তোমাকে এই খারাপ দিনগুলো থেকে বের করে আনার চেষ্টা করছে।' যেদিন এই টুইটটি করেছিলেন জারিফা গাফারি সেদিন ১৫ অগাস্ট, ভারতের স্বাধীনতা দিবসের দিনই আফগানিস্তান পরাধীন হয়েছিল তালিবানদের হাতে। আর এখন তিনি অপেক্ষা করছেন তালিবানদের মুখোমুখি হওয়ার। 
 

Asianet News Bangla | Published : Aug 17, 2021 5:32 PM IST / Updated: Aug 18 2021, 03:11 PM IST
110
২৬ বছরের হয়েছিলেন মেয়র, এখন খুন হওয়ার অপেক্ষায় - ছবিতে ছবিতে চিনে নিন দুর্ধর্ষ আফগান যুবতীকে

কে এই জারিফা গাফারি?  তিনি আফগানিস্তানের সর্বকনিষ্ঠ এবং সর্বপ্রথম মহিলা মেয়র। শুধু তাই নয়, মহিলাদের ক্ষমতায়নের জন্য তিনি সর্বদা লড়াই করে এসেছেন।
 

210

এখনও তাঁর বয়স ৩০ পার করেনি, ২৯। আর ২০১৮ সালে যখন প্রথম তিনি ময়দান ওয়ারদক প্রদেশের মেয়র হয়েছিলেন, তখন তাঁর বয়স ছিল মাত্র ২৬ বছর। এর পাশাপাশি তিনি নিজের একটি রেডিও শো চালান এবং অর্থনৈতিকভাবে নারীদের ক্ষমতায়নের জন্য একটি এনজিও প্রতিষ্ঠা করেছেন।
 

310

তালিবানরা তাঁর মতো বলিষ্ঠ ক্ষমতাবান মহিলাদের কোনওদিনই পছন্দ করত না। ফলে, খ্য়াতি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গেই তিনি শীঘ্রই তালেবানদের প্রধান লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হয়েছিলেন। তিন-তিনবার তার প্রাণনাশের চেষ্টা হয়েছে, তবে তিনি বরাত জোরে বেঁচে গিয়েছেন। 
 

410

তাঁর বাবার ভাগ্য অবশ্য ততটা প্রসন্ন ছিল না। জারিফাকে না মারতে পেরে তালিবানরা নিশানা করেচিল তাঁর বাবাকে। ২০২০ সালে তাঁকে গুলি করে ঝাঁঝড়া করে দিয়েছিল ইসলামি চরমপন্থী গোষ্ঠীটি। 
 

510

কাবুলের শীর্ষস্থানীয় আমলা এবং রাজনীতিবিদরা প্রায় সকলেই বর্তমানে তালিবানদের হাত থেকে বাঁচতে দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন। কিন্তু জারিফার কোথাও যাওয়ার জায়গা নেই। তিনি কাবুলেই থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। 
 

610

তিনি জানেন তালিবানদের হাতে দেশের পতন অনিবার্য। তবু, সম্প্রতি দেশের তরুণ সমাজদের প্রতি দারুণ আস্থা প্রদর্শন করেছেন তিনি। তাঁর আশা দেশের অগ্রগতি ও জাতির অধিকারের জন্য তারা লড়াই চালিয়ে যাবে।
 

710

২০২০ সালের মার্চ মাসে জারিফাকে মার্কিন বহিদেশ দফতর সাহসী নারী হিসাবে সম্মানিত করেছিল। সেই সময় ট্রাম্প প্রশাসন তালিবানদের সঙ্গে শান্তিচুক্তির কথা চালাচ্ছে। এই অনিশ্চিত ভবিষ্যতের মধ্যে আফগানিস্তানে মহিলাদের অধিকার রক্ষার জন্য তিনি তৎকালীন মার্কিন বিদেশমন্ত্রী মাইক পম্পেওর কাছে ব্যক্তিগতভাবে আবেদন করেছিলেন।

810

কিন্তু কার্যক্ষেত্রে সেইদিকে কোনো মনোযোদগই দেয়নি আমেরিকা। তালিবানদের সরকারী মুখপাত্র জাবিবুল্লাহ মুজাহিদ অবশ্য জানিয়েছেন মহিলা এবং এর আগে সরকার পক্ষের হয়ে যারা লড়েছেন, সবার জীবন রক্ষা করা হবে। এমনকী, কাবুল দখলের পর, মঙ্গলবার প্রথম সাংবাদিক সম্মেলনেও তালিবানরা মহিলাদের কাজে অংশ নেওয়ার অনুমতি দেওয়া হবে বলে জানিয়েছে। 
 

910

তবে তা একেবারেই কথার কথা বলে মনে করছেন মানবাধিকার কর্মীরা। কারণ একইসঙ্গে তালিবানরা জানিয়েছে, ইসলামি আইন নারীদের যে যে কাজের অনুমতি দেয়, তাই করতে পারবে তারা। সেইসঙ্গে, ইতিমধ্যেই যেসব এলাকা পুরোপুরি তালিবানদের দখলে রয়েছে, সেখানে প্রতিশোধমূলক হত্যাকাণ্ড এবং বিশেষ করে মহিলাদের উপর নৃশংস কৌশল প্রয়োগ, হিংসার  প্রমাণ পাওয়া গিয়েছে।
 

1010

কাবুলের পতনের পর জারিফা বলেছেন, তিনি তালিবানদের আসার অপেক্ষায় বসে আছেন। তাঁকে বা তাঁর পরিবারকে সাহায্য করার কেউ নেই। শুধু তিনি আর তাঁর স্বামী আছেন। তিনি জানেন তালিবানরা তাঁর মতো মানুষের জন্যই আসবে এবং তাঁকে হত্যাও করবে। তাও পরিবারকে ছেড়ে কোথাও যাবেন না তিনি। কোথায়ই বা যাবেন, প্রশ্ন ছুঁড়ে দিয়েছেন তিনি।
 

Share this Photo Gallery
click me!

Latest Videos