চিনে মহামারির আতঙ্ক তৈরি করা বিউবনিক প্লেগ কতটা মারাত্মক হতে পারে, জানুন এর উৎস ও উপসর্গ

Published : Jul 06, 2020, 05:34 PM ISTUpdated : Jul 06, 2020, 05:39 PM IST

বিশ্ব জুড়ে করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েই চলেছে। তার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে মৃতের সংখ্যাও। কোনওভাবেই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হচ্ছে না। আর এই অবস্থাতেই আরও এক মহামারীর আশঙ্কা করোনার উৎসস্থল চিনে। এবার নতুন আতঙ্কের নাম বিউবনিক প্লেগ। বছর কয়েক আগেও এই রোগকে মহামারীর আকার ধারণ করতে দেখা গিয়েছিল। ইতিমধ্যে  বায়ানুর শহরে ক্রমেই বাড়ছে বিউবনিক প্লেগে আক্রান্তের সংখ্যা। পরিস্থিতি সামল দিতে শহরে জারি করতে হয়েছে তৃতীয় মাত্রার সতর্কতা।

PREV
114
চিনে মহামারির আতঙ্ক তৈরি করা  বিউবনিক প্লেগ কতটা মারাত্মক হতে পারে, জানুন এর  উৎস ও উপসর্গ


প্লেগের তিনটি ধরনের একটি হলো বিউবনিক প্লেগ।  বিউবনিক প্লেগকে মধ্য যুগে বলা হত ব্ল্যাক ডেথ। অত্যন্ত ছোঁয়াচে এই রোগ। 

214

বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য, বন্য ইঁদুর এবং ইঁদুরজাতীয় প্রাণীর শরীরে এক ধরনের পোকা জন্মায়। সেই পোকার মাধ্যমেই বিউবনিক প্লেগের ব্যাকটেরিয়া সংক্রমিত হয়। দ্রুত এই ব্যাকটেরিয়া এক জনের শরীর থেকে অন্যের শরীরে ছড়ানোর সম্ভাবনা থাকে।
 

314

আক্রান্ত মাছি কামড়ালেও এই রোগ হতে পারে। এর মাধ্যমে প্লেগ ব্যাসিলাস, ওয়াই পেসটিস শরীরে ঢুকে যায় আর লসিকা নালী দিয়ে বাহিত হয়ে চলে যায় লসিকা গ্রন্থিতে, সেখানে নিজের ক্লোন তৈরি করে। লসিকা গ্রন্থি তখন ফুলে যায়, শুরু হয় ব্যথা। একে বলা হয় বিউবো।

414

এই রোগের অ্যাডভান্সড স্টেজে লসিকায় ঘা হয়ে যায়, ভরে যায় পুঁজে। তবে মানুষ থেকে মানুষে এই রোগের সংক্রমণ বিশেষ দেখা যায় না।

514

 বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা(হু)-র দাবি, সঠিক সময়ে চিকিৎসা না করালে, আক্রান্ত হওয়ার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে কোনও প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তির এই রোগে মৃত্যু হতে পারে। 

614

সাধারণ অ্যান্টিবায়োটিক প্লেগ সারাতে পারে, তবে রোগ দেখা দেওয়ার প্রায় সঙ্গে সঙ্গে তা দিতে হবে। কারণ এই রোগ ছড়িয়ে পড়ে অত্যন্ত দ্রুত বেগে।

714

আচমকা ধুম জ্বর উঠে যাওয়া এই রোগের লক্ষণ। মাথায় ও গোটা শরীরে যন্ত্রণা হতে পারে, দুর্বলতা থাকতে পারে। বমি হতে পারে, থাকতে পারে বমি বমি ভাব। এছাড়া লসিকা গ্রন্থি ফুলে যেতে পারে, শুরু হতে পারে ব্যথা। এই রোগে আক্রান্ত হলে তাঁর আশেপাশে চিকিৎসকদের পিপিই কিট পরে যেতে হয়।

814

নিউমোনিক প্লেগের লক্ষণ দ্রুত দেখা দেয়, এমনকী সংক্রমণের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে। শ্বাস সংক্রান্ত সমস্যা শুরু হয়, দম নিতে কষ্ট হয়, দেখা দেয় কাশি। থুতুতে রক্ত উঠতে পারে। মৃতদেহ থেকেও ছড়াতে পারে প্লেগ। যাঁরা দেহ সৎকারের ব্যবস্থা করছেন তাঁদের আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। মৃতদেহের তরলে তখনও অবস্থিত ব্যাকটিরিয়া ছড়াতে পারে রোগ।

914

চতুর্দশ শতকে ইউরোপের এক তৃতীয়াংশ মানুষের এই ব্ল্যাক ডেথ বা বিউবোনিক প্লেগে প্রাণ যায়।

1014

এই রোগ তিনবার অতিমারীর আকার নিয়েছে, মারা গিয়েছেন কোটি কোটি মানুষ।

1114

বিউবোনিক প্লেগের জন্মও দক্ষিণ পশ্চিম চিনের ইউনানে। ইউনান থেকে আফিং কারবারীদের মাধ্যমে ১৮৯৪-এ এই রোগ ছড়িয়ে যায় বিশ্বে, শুরু হয় তৃতীয় প্লেগ অতিমারী। কিন্তু তারপর থেকে বিউবোনিক প্লেগে আক্রান্তের সংখ্যা কমে আসে।

1214

গত বছর মারমটের কাঁচা মাংস খেয়ে ইনার মঙ্গোলিয়ার বায়ান-উলগি প্রদেশে এক দম্পতি বিউবোনিক প্লেগে আক্রান্ত হন। তড়িঘড়ি চিকিৎসা শুরু হলেও তাঁদের বাঁচানো যায়নি। তাই নতুন করে বিউবোনিক প্লেগের খবরে খবরে আতঙ্ক ছড়িয়েছে সেখানে। 

1314

 তবে শুধুমাত্র বিউবোনিক প্লেগই নয়, শূকরের মাংস থেকে ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাস ছড়িয়ে তা মহামারির আকার নিতে পারে বলে গত সপ্তাহেই সতর্কতা জারি করেছেন চিনা গবেষকরা।

1414

চিনের  কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় ও  ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন সেন্টারের তরফে জানানো হয়, শূকরের মাংস থেকে জেনোটাইপ-৪(জি৪) ভাইরাসের মাধ্যমে মানবশরীরে ইনফ্লুয়েঞ্জা প্রবেশ করতে পারে। তাই সব মিলিয়ে চিনে করোনার পর ফের  পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার নিতে পারে বলে আশঙ্কা বিশেষজ্ঞদের।  

click me!

Recommended Stories