করোনা ভ্যাকসিন নিয়ে জাতীয়তাবাদের যুদ্ধ, কী এই নয়া বিপদ যা নিয়ে সতর্ক করল হু

বিশ্বজুড়ে শুরু হয়েছে 'ভ্যাকসিন জাতীয়তাবাদ'-এর লড়াই। উদ্বিগ্ন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। হু-প্রধান এই লড়াই বন্ধ করার আহ্বান জানিয়েছেন। তবে টিকা-জাতীয়তাবাদ নতুন কিছু নয়। জেনে নেওয়া যাক 'ভ্যাকসিন জাতীয়তাবাদ' কী এবং কেন এটি বন্ধ করা দরকার।

 

amartya lahiri | Published : Aug 20, 2020 10:41 AM IST / Updated: Aug 23 2020, 09:10 AM IST

16
করোনা ভ্যাকসিন নিয়ে জাতীয়তাবাদের যুদ্ধ, কী এই নয়া বিপদ যা নিয়ে সতর্ক করল হু

করোনাভাইরাস মহামারীর মধ্যে, বিপদ বাড়াচ্ছে 'ভ্যাকসিন জাতীয়তাবাদ'। সম্প্রতি এই নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বা হু। এই অবস্থায় হু-এর প্রধান টেদ্রস অ্যাধানম এই জাকতীয়তাবাদের লড়াই বন্ধ করার প্রয়োজনীয়তার উপর জোর দিয়েছেন।

 

26

যখন কোনও দেশ শুধুমাত্র সেই দেশের নাগরিকদের জন্য কোনও টিকার ডোজগুলি সংরক্ষণ করার চেষ্টা করে, তখন তাকে 'ভ্যাকসিন জাতীয়তাবাদ' বলা হয়। এই পরিস্থিতি তখনই ঘটে যখন অন্য দেশে উপলব্ধ হওয়ার আগেই অর্থের জোরে কোনও দেশ তাদের দেশীয় বাজার এবং নাগরিকদের জন্য ভ্যাকসিন সংগ্রহের চেষ্টা করে। এই জন্য, সংশ্লিষ্ট দেশের সরকার ভ্যাকসিন প্রস্তুতকারকের সঙ্গে একটি প্রাক-ক্রয় চুক্তি করে থাকে।

 

36

গোটা বিশ্ব এখন করোনাভাইরাসের মোকাবিলা করছে। অনেক দেশে সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ে করোনাভাইরাসের টিকা তৈরির চেষ্টা চলছে, তবে এখনও তা তৈরি করা যায়নি। কোনও কোনও ভ্যাকসিন প্রার্থীর মানবদেহে চূড়ান্ত পর্যায়ের পরীক্ষা চলছে, কোনও কোনওটি রয়েছে একেবারে প্রাথমিক পর্যায়ে। তবে ইতিমধ্যেই আমেরিকা, ব্রিটেন, জাপান, ফ্রান্স, জার্মানির মতো ধনী দেশগুলি বিভিন্ন ভ্যাকসিন প্রস্তুতকারকদের সঙ্গে প্রাক-ক্রয় চুক্তি করে ফেলেছে। সবার আগে টিকা পাওয়ার জন্য তারা কোটি কোটি টাকা ব্যয় করেছে।

 

46

এই ধরণের প্রাক-ক্রয় চুক্তিগুলি করোনাভাইরাস ভ্যাকসিনকে তৃতীয় বিশ্বের দেশের সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে নিয়ে যেতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। মোটামুটিভাবে, বর্তমানে বিশ্বের মোট জনসংখ্যা ৮০০ কোটি। এই ৮০০ কোটি মানুষের বেশিরভাগই গরীব দেশের নাগরিক। এরমধ্যে এই ধরনের অগ্রিম চুক্তির ফলে ভ্যাকসিনগুলির দাম এতটাই চড়া হয়ে যেতে পারে, যে দরিদ্র দেশের নাগরিকদের সেই টিকা সংগ্রহ সামর্থ্যে নাও কুলোতে পারে।

 

56

তবে 'ভ্যাকসিন জাতীয়তাবাদ' বিশ্ব যে নতুন দেখছে, তা নয়। ২০০৯ সালে এইচ১এন১ ফ্লু বা সোয়াইন ফ্লু মহামারির সময় একইভাবে সবার আগে ভ্যাকসিন সংগ্রহ করেছিল বিশ্বের ধনী দেশগুলিই। অস্ট্রেলিয়া প্রথম দেশ হিসাবে এই ভাইরাসের টিকা তৈরিতে সফল হয়েছিল। তারা প্রথমেই ভ্যাকসিনের রফতানি নানা ধরণের নিয়ন্ত্রণ আরোপ করেছিল। অন্যদিকে, ধনী দেশগুলি বেশ কয়েকটি ফার্মা সংস্থার সঙ্গে ভ্যাকসিন নিয়ে প্রাক-ক্রয় চুক্তি থাকার ফলে টিকার ডোজগুলি সবার আগে নিতে পেরেছিল। শুধুমাত্র আমেরিকাই ৬ লক্ষ ভ্যাকসিন ডোজের জন্য চুক্তি স্বাক্ষর করেছিল।

 

66

এই অবস্থায় 'ভ্যাকসিন জাতীয়তাবাদ'-এর কারণে করোনাভাইরাস সংক্রমণ আরও গুরুতর আকার নিতে পারে বলে সতর্ক করেছে হু। তেদ্রোস অ্যাধানাম সতর্ক করে বলেছেন ভ্যাকসিন জাতীয়তাবাদ-এর ফলে বিশ্বের গরীব দেশগুলি, যেখানে জনসংখ্যা ও জনঘনত্ব - দুইই বেশি, সেইসব দেশে হয়তো সবার শেষে গিয়ে পৌঁছবে টিকা। ফলে মহামারিটিও ততদিন পর্যন্ত চলতেই থাকবে, তাই করোনার ঝুঁকিও থেকে যাবে। তাই এই বিশ্বব্যাপী মহামারি রোধে, ভ্যাকসিনকে কখনই জাতীয়তাবাদের সঙ্গে যুক্ত করা উচিত নয়। সকলের নাগালের মধ্যে রাখতে হবে ভ্যাকসিনগুলিকে।

Share this Photo Gallery
click me!
Recommended Photos