নকশাল দূর্গ ঝাড়গ্রাম এখন বিজেপির ঘাঁটি, কীভাবে জমি তৈরি করে দিয়েছে আরএসএস, দেখুন

বুধবারই ঝাড়গ্রামে সভা করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দাবি করেছেন, উন্নয়নের জোয়ারে ঝাড়গ্রাম আজ 'জঙ্গল-সুন্দরী'। কিনতু, সত্যিই কি তাই? জেলার মানুষ অবশ্য বলছেন, ২০১৮ সাল থেকেই অনেক পরিবর্তনের সাক্ষী ঝাড়গ্রামের রাজনৈতিক রঙটা আবার বদলাতে শুরু করেছে।

 

amartya lahiri | Published : Mar 17, 2021 12:13 PM IST

16
নকশাল দূর্গ ঝাড়গ্রাম এখন বিজেপির ঘাঁটি, কীভাবে জমি তৈরি করে দিয়েছে আরএসএস, দেখুন

বলরামপুরে শুরু

২০১৮ সালের পঞ্চায়েত নির্বাচনে রাজ্য জুড়ে তৃণমূল কংগ্রেসের ব্যাপক সন্ত্রাসের মধ্যেও ঝাড়গ্রামে তৃণমূলকে জোর ধাক্কা দিয়েছিল বিজেপি। মনে রাখতে হবে, রাজ্যে তখনও এখনকার মতো গেরুয়া হাওয়া বইতে শুরু করেনি। বলরামপুর পঞ্চায়েত সমিতির ২০টি আসনের মধ্যে ১৮টিতে জয়লাভ করেছিল বিজেপি। সেইসঙ্গে দখল করেছিল ৭টি গ্রাম পঞ্চায়েত এবং ২টি জেলা পরিষদ আসনও।

26

এক বছর পর আরও বড় ধাক্কা

২০১৯ লোকসভা ভোটে আরও বড় ধাক্কা খেতে হয়েছিল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দলকে। ঝাড়গ্রাম লোকসভা আসনে জয়ী হন বিজেপির কুনার হেমব্রম। বিধানসভা ভোটেও সেই সাফল্য ধরে রাখতে চায় বিজেপি। ঝাড়গ্রাম বিধানসভা কেন্দ্র থেকে প্রার্থী করা হয়েছে কুনারকে। রাজনাথ সিং, অমিত শাহ, জেপি নাড্ডার মতো বিজেপির শীর্ষ নেতারা এখানে প্রচার করছেন।

 

36

তবে কি কোনও উন্নয়নই করেনি তৃণমূল

স্থানীয় মানুষ তা বলছেন না। তাঁরা মেনে নিচ্ছেন তৃণমূল সরকার এই অঞ্চলে অনেক কাজ করেছে। উন্নয়ন দেখেছে ঝাড়গ্রামবাসী। পর্যটনের ক্ষেত্রে উন্নয়ন হয়েছে। ঝাড়গ্রাম রাজবাড়ি আজ একটি জনপ্রিয় হেরিটেজ হোটেল। নতুন হাসপাতাল হয়েছে, স্টেডিয়াম হয়েছে। কণক-দুর্গা মন্দিরে উন্নয়নের জন্য অর্থ বরাদ্দ করা হয়েছে। লালগড় গোপীবল্লভপুরে হোম স্টে তৈরি করা হচ্ছে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজেই এদিনের সভায় তালিকা তুলে দিয়েছেন।

46

তাহলে কেন মমতা বিমুখ মানুষ

আসলে উন্নয়নের সঙ্গে সঙ্গে মানুষের উচ্চাকাঙ্খাও বাড়ে। ঝাড়গ্রামের মানুষ চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিচ্ছেন, পানীয় জলের সমস্যা এখানকার অন্যতম  প্রধান সমস্যা। কিনতু, এখনও তা মেটেনি। শিক্ষার জন্য ভালো স্কুলের অভাব রয়েছে। আর তার থেকেও বড় কথা, অভাব রয়েছে কর্মসংস্থানের। এলাকার যুব সম্প্রদায় সাফ জানাচ্ছেন যারা আমাদের চাকরি দেবে, আমরা তাদের দলে। তবে এই সব অভাব অভিযোগের থেকেও জঙ্গলমহলের অন্তবর্তী এই জেলায় বিজেপির উত্থানের পিছনে বড় কারণ হল, রাষ্ট্রীয় স্বয়ং সেবক সংঘ বা আরএসএস। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দল যেখানে পৌঁছতে পারেনি, সেখানে পৌঁছে গিয়েছে আরএসএস এবং তাদের হাত ধরে বিজেপি।

56

নিঃশব্দ বিপ্লব

এই এলাকার মানুষের স্বাস্থ্য, শিক্ষা এবং নৈতিক উন্নয়নের লক্ষ্যে ২০১৪ সালেই কাজ শুরু করে দিয়েছিলেন আরএসএসের স্বয়ংসেবকরা। পানীয় জল, শৌচাগারের মতো মৌলিক সমস্যাগুলি নিয়ে তারা কাজ করতে থাকে। এই এলাকায় প্রচুর নলকূপ বসিয়ে গিয়েছে আরএসএস-এর লোকেরা। সেই সঙ্গে স্থাপন করা হয়েছিল বেশ কিছু প্রাথমিক শিক্ষাকেন্দ্র এবং বেশ কয়েকটি হরি সভা। ক্রমে ছাত্রদের থাকার হস্টেল, কোচিং সেন্টার থেকে শুরু করে স্থানীয় কৃষকদের কৃষি সংক্রান্ত পরামর্শ দেওয়া পর্যন্ত - এলাকার দৈনন্দিন কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে গিয়েছিলেন আরএসএসের স্বয়ংসেবকরা। আর তাদের হাত ধরেই আস্তে আস্তে প্রবেশ করা শুরু করেছিল বিজেপি। সেখান থেকে আজ এই জায়গায় এসে পৌঁছেছে গেরুয়া শিবির।

66

আরও এক পরিবর্তন

এই জেলা একসময় পরিচিত ছিল নকশাল দুর্গ হিসাবে। তারপর দীর্ঘদিন নির্বাচনে জয়ী হয়েছে বামেরা। তাারপর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আমলে কিছু উন্নয়নও দেখলেও, তারসঙ্গে স্থানীয় নেতাদের দুর্নীতিরও সাক্ষী হয়েছে। এবার আরএসএস-এর হাত ধরে ঝাডগ্রাম প্রস্তুত বিজেপিকে বরণ করতে। অবশ্য শর্ত একটাই, চাকরি চাই, কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র চাই, প্রযুক্তিগত প্রশিক্ষণ কেন্দ্র চাই, শিক্ষা চাই, মাথা উঁচু করে চলার উপায় চাই। ঝাড়গ্রামের কৃষি পরিবারের একাংশ ষেমন আধুনিক কৃষি সরঞ্জাম, প্রশিক্ষণ চাইছেন, আরেক অংশ আবার চাইছেন, চাষ নয়, কল কারখানায় কাজ করবেন তাঁরা।
পরিবর্তন নিয়ে আশাবাদী বিজেপি।

Share this Photo Gallery
click me!
Recommended Photos