তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের বান্ধবী অর্পিতার বাড়ি থেকে ২০ কোটি টাকা উদ্ধারের পর বীরভূমে তাঁর আরেক বান্ধবী মোনালিসা দাসের নামে প্রচুর সম্পত্তি ও বাড়ি উদ্ধার। কে এই মোনালিসা? কেন তাঁর নামে এত সম্পত্তি করে দিয়েছিলেন পার্থ?
Sahely Sen | Published : Jul 24, 2022 6:35 AM IST / Updated: Jul 25 2022, 07:00 PM IST
বঙ্গে আর্থিক তছরুপের মামলায় শুক্রবার রাজ্য জুড়ে তল্লাশি চালিয়েছে ইডি। রাজ্যের মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের সম্পত্তির খোঁজ করতে গিয়ে উঠে আসে তাঁর বান্ধবী অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের নাম। অর্পিতার বাড়ি থেকে ২০ কোটি টাকা নগদে উদ্ধার করেন ইডি আধিকারিকরা। কিন্তু, এখানেই চমকের শেষ নয়। সন্ধে গড়াতেই আরও পর্দা ফাঁস করেন ইডি আধিকারিকরা।
শোনা যায়, পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের আরও এক বান্ধবী রয়েছেন বীরভূমে, যাঁর নামে শান্তিনিকেতনে রয়েছে প্রায় ১০টি ফ্ল্যাট।
আসানসোল থেকে বীরভূমে অধ্যাপনার কাজ করতে আসা পার্থর এই বান্ধবীর খোঁজ আগেই মিডিয়ার সামনে প্রকাশ করেছিলেন বিজেপির প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। এই বান্ধবীর বাংলাদেশের যোগ রয়েছে বলেও দাবি করেছিলেন তিনি।
দিলীপ ঘোষের দাবি বেশ খানিকটা সত্যিই হয়ে যায়। গতকাল সন্ধ্যায় ইডি মারফৎ জানা যায়, পার্থর বীরভূমের সেই বান্ধবীর নাম মোনালিসা দাস।
ফুলডাঙা ও প্রান্তিক এলাকায় অবস্থিত এই বাড়িগুলির সবকটিই দেখা করতেন মোনালিসা নিজে, তবে বাড়িগুলো অবশ্য মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের বাড়ি বলেই জানতেন এলাকার বাসিন্দারা।
পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে বেশ কয়েকবার এই বাড়িগুলিতে দেখা গেছে বলেও জানিয়েছেন ফুলডাঙা ও প্রান্তিক এলাকার মানুষজন।
অলকানন্দা, তিতলি, অপা ইত্যাদি বিভিন্ন নামের সৌখিন এই বাড়িগুলিতে অধিকাংশ সময়েই তালা মারা থাকত বলে স্থানীয় বাসিন্দাদের বক্তব্য।
২০১৪ সালে আসানসোলে কাজী নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপিকা হিসেবে কাজে যোগ দেন মোনালিসা। ওই বিশ্ববিদ্যালয়ে বর্তমানে বাংলা বিভাগের বিভাগীয় প্রধান তিনি।
সূত্রের খবর, অধ্যাপিকা হিসেবে মোনালিসার নিয়োগ নিয়েও উঠেছিল প্রশ্ন। প্রভাব খাটিয়ে তিনি চাকরি পেয়েছিলেন বলে অভিযোগ। তাঁর নিয়োগের পিছনেও নাকি পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের বিশেষ ভূমিকা ছিল।
তিনি গত ৫ বছর ধরে আসানসোলের এসবিআই গড়াই রোডে বিবেকানন্দ পল্লিতে থাকেন। যে বাড়িতে তিনি ভাড়া থাকতেন সেটির মালিক জানিয়েছেন যে তিনি নিয়মিত আসতেন না। মাসে ৩ দিন বা ৪ দিন আসতেন।
২ সপ্তাহ আগে ভাড়া বাড়িতে তিনি এসেছিলেন। তারপর আর আসেননি। বিশ্ববিদ্যালয়েও তিনি নিয়মিত আসতেন না। প্রয়োজন পড়লে যেতেন। তারপর আবার কলকাতায় ফিরে যেতেন।
যদিও, পার্থ চট্টোপাধ্য়ায়ের সঙ্গে বর্তমানে তাঁর সম্পর্ক কেমন, তা এখনও স্পষ্ট নয়। তবে, একজন অধ্যাপিকার নামে এতগুলি ফ্ল্যাট কী ভাবে হল? এর পিছনে পার্থর কোনও ভূমিকা রয়েছে কি না, থাকলে সেই ভূমিকা কতটা জোরাল, সেই রহস্যের জট খোলাই ইডির লক্ষ্য।