এক বোনের কন্ঠে মিলল অপর বোনের স্যাক্সোফোনের সুর, সুদূর সানফ্রান্সিসকো থেকে রবীন্দ্রজয়ন্তির শ্রদ্ধার্ঘ

  • ২৫-এ বৈশাখে কন্ঠের সঙ্গে মিলল স্যাক্সোফোনের সুর
  • দুই বোনের এমন প্রয়াসে এক অনন্য শ্রদ্ধাঞ্জলি রবীন্দ্রজয়ন্তীতে
  • সুদূর সানফ্রান্সিসকো থেকে অনুষ্কা ও আকাঙ্খার নিবেদন 
  • রবীন্দ্র জয়ন্তী দুই বাঙালি কন্যার কাহিনি যা মন ভালো করে দেয়

এক বোন গাইছে এসো হে বৈশাখ, এসো হে। আর কথার ফাঁকে ফাঁকে সুরের মুর্চ্ছনায় বুদ করছে অপর বোনের স্যাক্সোফোনের মাতাল করা সুর। অনুষ্কা ও আকাঙ্খা। দুই বোন- একজন ২০, অন্য জন ১৭-র কোঠায়। এভাবেই দুই বোন একে অপরের সঙ্গতে ইতিমধ্যেই বনে গিয়েছেন ইন্টারনেট সেনসেশন। সাত-সমুদ্র তেরো নদী পেরিয়ে আমেরিকার সান-ফ্রান্সিসকো শহরে ব্যানার্জি বিটস-এর দুই বোন এখন পরিচিত নাম। আর এহেন অনুষ্কা ও আকাঙ্খা- এবার সুরের পালায় ডানা মেলেছে রবীন্দ্রসঙ্গীত। 

Latest Videos

বাঙালি কন্যে বলে কথা। তাই সুরের সঙ্গে ভালোবাসাটা সহজাত। এমনটাই জানিয়েছেন অনুষ্কা ও আকাঙ্খার মা সোমালি বন্দ্যোাপাধ্যায়। বিদেশ-বিঁভুইয়ে বেড়ে ওঠার সঙ্গে সঙ্গে নিজেদের বাঙালি ও ভারতীয় সংস্কৃতিকেও সযয়ত্নে লালন-পালন করেছেন দুই বোন। যার ফলে আজ তাঁরা গান বাঁধছেন রবীন্দ্রনাথকে নিয়ে, কখনও অতিতে বাংলার কালজয়ী সব গানের সম্ভার নিয়ে হাজির হচ্ছেন অনুষ্কা ও আকাঙ্খা। সেই সঙ্গে সুরের এই বালুকাবেলায় থাকছে হিন্দি গানও। বাদ পড়ছে না পাশ্চাত্য সঙ্গীতে পপুলার ইংলিশ হিটস-ও। বলতে গেলে বাংলার সঙ্গে হিন্দি-কে মিলিয়ে নিয়ে ইংরাজি গানের এমন সম্ভারে শ্রোতাদের ঋগ্ধ করার কাজটা বেশ সুন্দর করে গড়ে তুলেছেন অনুষ্কা ও আকাঙ্খা। দুই জনেরই আপাতত লক্ষ্য নিজস্ব কন্ঠে এবং স্যাক্সোফোনের সুরে এক বিশুদ্ধ ভালোলাগাকে সঙ্গীতপ্রেমীদের সামনে তুলে ধরা।  

অনুষ্কা এই মুহূর্তে কলেজে ব্যাচেলরস অফ অ্যাকাউন্টিং-এর ছাত্রী। পড়াশোনার এই বিপুল চাপেও সামলে নিয়ে চলছেন ব্যানার্জি বিটস-এর কাজকর্মকে। ছোট থেকেই খালি গলায় গান করার চেষ্টা করতে দেখে অনুষ্কাকে হিন্দুস্তানি ক্লাসিক্যাল-এর তালিম দেওয়াতে শুরু করেন সোমালি। আস্তে অনুষ্কা হিন্দুস্তানি ক্লাসিক্যালের তালিমে গুরু হিসাবে পান মহেশ কালে থেকে শুরু করে সুভা চাকি, সুমিতা চক্র়বর্তী ও অলকা ভাটনাগরকে। এর পাশাপাশি পাশ্চাত্য সঙ্গীতের তালিম নেন স্যালি মোটে-র কাছে। ইতিমধ্যেই সান্টা ক্লারা ক্যালিফোর্নিয়ায় নর্থ-আকমেরিকা বাঙালি কনফারেন্স বা এনএবিসি ২০১৭-তে-ও পারফর্ম করেছেন অনুষ্কা। ২০১৮ ও ২০১৯-এ স্যাকরামেন্টো ক্যালিফোর্নিয়া তরঙ্গিনী প্রতিযোগিতাতেও দুই দুবারের চ্যাম্পিয়ন তিনি। এছাড়াও ফ্রিমোন্ট ক্যালিফোর্নিয়ায় গ্লোব অ্যাওয়ার্ড ফেস্টিভ্যালেও জয়ী হয়েছেন তিনি। 

দিদি অনুষ্কার পথ ধরেই ছোট থেকে সঙ্গীতের প্রতি অগাধ প্রেম জন্মে যায় অনুষ্কারও। মাত্র সতেরো বছর বয়সেই তিনি স্যাক্সোফোনে এক আলাদা পরিচিতি তৈরি করেছেন আমেরিকায় বসবাসকারী বাঙালিদের মধ্যে। দিদি অনুষ্কার মতোই আকাঙ্খাও হিন্দুস্তানি ক্লাসিক্যালে তালিম নিয়েছেন মহেশ কালে থেকে শুরু করে সুভা চাকি, সুমিতা চক্র়বর্তী ও অলকা ভাটনাগরদের কাছ থেকে। ক্যালিফোর্নিয়ার ফ্রিমোন্টে গ্লোবাল অ্যাওয়ার্ডেও স্যাক্সোফোনের সুরে সকলকে মাত করেছেন আকাঙ্খা। ২০১৬ ও ২০২১-এ স্যাক্সোফোনে ক্যালিফোর্নিয়া স্টেট মিউজিক অ্যাওয়ার্ড-ও জয়ী হয়েছেন তিনি। হিন্দুস্তালি সঙ্গীতে তালিম নেওয়ার পাশাপাশি স্কুলের জ্যাজ-এর প্রশিক্ষণে আগ্রহী হয়ে পড়েছিলেন আকাঙ্খা। আস্তে আস্তে স্কুল ব্যান্ডে স্যাক্সোফোনে এক জনপ্রিয় মুখ হয়ে উঠেছিলেন তিনি। ২০১৯-এ আসে এক বড় সাফল্য। চিকাগো-তে সম্মানীয় মিডওয়েস্ট মিউজিক্যাল কনফারেন্সে স্যাক্সোসোফোনে নিজস্ব অনুষ্ঠান করেন আকাঙ্খা। যা তাঁকে একটা অন্য উচ্চতায় নিয়ে যায়। স্যাক্সোফোনের সুরের জাদুতে নানা ধরনের সঙ্গীতকে তুলে আনেন আকাঙ্খা। তাঁর একটি হিন্দি গান ফেসবুকে ইতিমধ্যেই ৩ মিলিয়ন ভিউস এবং ১ লক্ষ লাইকের সংখ্যার মাইলস্টোন পার করে ফেলেছে। 

অনুষ্কা ও আকাঙ্খার মা সোমালি-র মতে, বিদেশে থাকলে এবং সেখানে বড় হলেই যে নিজের সংস্কৃতিকে ভুলে যেতে হবে- এমনটা তিনি এবং তাঁর স্বামী কোনওদিনই চাননি। তাই মেয়েদের বিদেশে বেড়ে ওঠার সঙ্গে সঙ্গে একস্ট্রা ক্যারিকুলার অ্যাক্টিভিটিজের পাঠে সংস্কৃতি চর্চাকে ওতপ্রোতভাবে জুড়ে দিয়েছিলেন  সোমালি। তাঁর এই সিদ্ধান্তেই আজ আমেরিকার বুকে সঙ্গীতের আঙিনায় এক সম্ভাবনময় নাম হয়ে উঠতে পেরেছেন অনুষ্কা ও আকাঙ্খা। সম্ভাবনা তৈরি করেছে অনুষ্কা ও আকাঙ্খার তৈরি করা ইউটিউব চ্যানেল ব্যানার্জি বিটস-ও। যেখানে শুধু ইংরাজি পুপলার হিটস-ই নয় বাংলা থেকে হিন্দি গানও ঠাঁই পাচ্ছে অনুষ্কা ও আকাঙ্খার সঙ্গীত পরিবেশনে। 

Share this article
click me!

Latest Videos

Daily Horoscope: ২৬ ডিসেম্বর বৃহস্পতিবার এই ব্যক্তিদের দিনটি ভালো যাবে, জেনে নিন আজকের রাশিফল
২৬-এ Mamata Banerjee-কে বিদায়! মমতাকে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বানানোর শপথ Suvendu Adhikari-র
Narendra Modi : বড়দিনের অনুষ্ঠানে মাতলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, সকলকে জানালেন শুভেচ্ছা
Suvendu Adhikari Live : কোলাঘাটের মঞ্চে বিস্ফোরক ভাষণ শুভেন্দু অধিকারীর, সরাসরি | Bangla News
বড়দিনের সন্ধ্যায় কলকাতার পার্ক স্ট্রিটে জনজোয়ার | Park Street Christmas | Kolkata News