চেষ্টা তো তাঁরা কম করেননি। স্কুল শিক্ষকদের প্রাইভেট টিউশনি বন্ধ করতে এবার রাজ্যপাল জগদীপ ধানখড়ের দ্বারস্থ হতে চলেছেন গৃহশিক্ষকরা। সোমবার রাজভবনে যাবেন গৃহশিক্ষকদের সংগঠনের প্রতিনিধিরা।
সরকারি স্কুলের যাঁরা শিক্ষকতা করেন, নিয়ম অনুসারে তাঁরা প্রাইভেট টিউশনি বা কোচিং করে ছাত্রছাত্রীদের পড়াতে পারেন না। কিন্তু সেই নিয়ম আর মানছে কে! বরং টিউশনির বাজারে স্কুলের শিক্ষকদেরই কদর বেশি। কিন্তু স্কুলশিক্ষকদের প্রাইভেট টিউশনি করার ফলে ক্লাসে যেমন পঠনপাঠন ব্যাহত হচ্ছে, তেমনি রুজি-রুটি টান পড়েছে গৃহশিক্ষকদেরও। প্রাইভেট টিচার ওয়েলফেলার অ্যাসোসিয়েশনের উলুবেড়িয়া মহকুমার সভাপতি শেখ জাহির হোসেন দাবি, শিক্ষকদের একাংশ এখন আর ক্লাসে পড়াতে আগ্রহই দেখাচ্ছেন না। স্কুলকে ব্যবসাক্ষেত্রে পরিণত করে ফেলেছেন তাঁরা। স্কুলের পড়ুয়াদের বাড়িতে পড়িয়ে মাসে ৭ থেকে ৮ লক্ষ টাকা রোজগার করছেন স্কুল শিক্ষকরা। ফলে যেসব বেকার যুবক-যুবতী গৃহশিক্ষকতা করে জীবিকা নির্বাহ করেন, তাঁরা ভীষণভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে।
কিন্তু পড়ুয়ারাই বা কেন শুধু স্কুলশিক্ষকদের কাছেই পড়তে চাইছে? গৃহশিক্ষকদের দাবি, পড়ুয়াদের স্কুলশিক্ষকরা বোঝাচ্ছেন যে , তাঁদের কাছে পড়লেই পরীক্ষায় বেশি নম্বর পাওয়া যাবে। কারণ, প্রোজেক্ট ও প্র্যাকটিক্যাল-সহ বিভিন্ন বিষয়ের নম্বর সংশ্লিষ্ট স্কুলের শিক্ষক বা শিক্ষিকার হাতেই থাকে। শুধু তাই নয়, যেসব পড়ুয়া স্কুলের শিক্ষকদের কাছে প্রাইভেট টিউশনি পড়ছে না, পরীক্ষায় তাদের নম্বরও কমিয়ে দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ। কিন্তু ঘটনা হল, শিক্ষা দপ্তর থেকে রীতিমতো সার্কুলা জারি করে স্কুল শিক্ষকদের প্রাইভেট টিউশনি বা কোচিং করে পড়ুয়াদের পড়ানোর উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে দীর্ঘদিন ধরেই স্কুলশিক্ষকদের প্রাইভেট টিউশনি বন্ধ করার লক্ষ্যে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন গৃহশিক্ষকরা। বস্তুত প্রাইভেট টিউশনি করেন, এমন স্কুলশিক্ষকদের তালিকা জমা দিয়ে তাঁদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ারও দরবার করেছেন আন্দোলনকারীরা। কিন্তু কাজের কিছুই হয়নি বলে অভিযোগ। এবার আর অন্য কোথাও নয়, সরাসরি রাজ্যপাল জগদীপ ধানখড়েরই দ্বারস্থ হওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন গৃহশিক্ষকরা।