দেশের যে রাজ্যটিকে বলা হয় টাইগার স্টেট, বেশির ভাগ বাঘের মৃত্যু সেখানেই হয়েছে। বাঘের সর্বোচ্চ মৃত্যুর ঘটনা সামনে এসেছে। টাইগার রাজ্য মধ্যপ্রদেশে বাঘেদের অবস্থা সবচেয়ে খারাপ।
সরকারি পরিসংখ্যানে বাঘ বেঁচে আছে কিন্তু বাস্তবে কোথায়? এই প্রশ্ন এখন আরও বড় হয়ে উঠেছে, কারণ ভারতের জঙ্গলে বিগ ক্যাট পরিবারের সবচেয়ে বড় এবং শক্তিশালী বিড়ালের পক্ষে টিকে থাকা দিনের পর দিন কঠিন হয়ে পড়েছে। সরকার যে বাঘের সংখ্যা বাড়ছে বলে দাবি করছে, তাতে বাস্তব ছবি হল একের পর এক বাঘ মারা যাচ্ছে। পরিস্থিতি এতটাই খারাপ হয়েছে যে গত ৩৯ দিনে (পয়লা জানুয়ারি থেকে ৮ফেব্রুয়ারি, ২০২৩) ২৪টি বাঘ মারা গেছে। জাতীয় বাঘ সংরক্ষণ কর্তৃপক্ষের দেওয়া তথ্যে এখবর জানা গেছে।
দেশের যে রাজ্যটিকে বলা হয় টাইগার স্টেট, বেশির ভাগ বাঘের মৃত্যু সেখানেই হয়েছে। বাঘের সর্বোচ্চ মৃত্যুর ঘটনা সামনে এসেছে। টাইগার রাজ্য মধ্যপ্রদেশে বাঘেদের অবস্থা সবচেয়ে খারাপ। এখানে ৯টি বাঘ মারা গেছে। দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে রাজস্থান যেখানে তিনটি বাঘ মারা গেছে। কর্ণাটক এবং উত্তরাখণ্ডে দুটি মৃত্যুর রেকর্ড করা হয়েছে, এবং আসাম এবং কেরালায় একটি করে বাঘ মারা গেছে।
কেন প্রতিটি বাঘ গুরুত্বপূর্ণ
খাদ্য শৃঙ্খলের শীর্ষে বাঘ আসে। বাঘ না থাকলে হরিণের মতো নিরামিষ প্রাণীর সংখ্যা বাড়বে। তাদের জনসংখ্যা বাড়লে বন শেষ হয়ে যাবে। বনাঞ্চল শেষ হলে পুরো বাস্তুতন্ত্রের ভিত নড়ে যাবে। তাই যে বনে বাঘ থাকে তাকে সুস্থ বন বলা হয়।
প্রতিটি বাঘ কেন আমাদের জন্য এত গুরুত্বপূর্ণ তা বোঝার জন্য, একটি বাঘের জীবনচক্র বোঝা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। একটি বাঘ সাধারণত তিন থেকে চারটি শাবকের জন্ম দেয়। যার মধ্যে ৮০ শতাংশ শিশু বড় হওয়ার আগেই মারা যায়। এমনকি যদি একটি শিশু বেঁচে থাকে, তবে বাঘটি দুই বছরের বেশি বয়স পর্যন্ত সঙ্গম করে না। আরেকটি বিষয়, বন্য অঞ্চলে বাঘের গড় বয়স ১২ থেকে ১৫ বছর। তার মানে যদি সে তার সারা জীবন বেঁচে থাকে তবে সে জঙ্গলে আর থাকতে পারবে না। এখন হিসেব করলে বুঝবেন বাঘ কেন এত গুরুত্বপূর্ণ।
তাহলে কীভাবে বাড়ছে চিতাবাঘের সংখ্যা?
চিতাবাঘও বাঘের মতো একটি বড় বিড়াল, কিন্তু তাদের জনসংখ্যা দ্রুত বাড়ছে। তাই এ বিষয়েও একটি বিষয় জানা জরুরি। চিতাবাঘ একটি বা দুটি শাবকের জন্ম দেয় এবং চিতাবাঘের বাচ্চাটি প্রায় এক বছর বয়সে মায়ের থেকে আলাদা হয়ে যায়, যখন বাঘের শাবকটি কমপক্ষে দুই বছর মায়ের সঙ্গে থাকে। চিতাবাঘের জনসংখ্যা বৃদ্ধির আরেকটি বিশেষ বিষয় হল যে সমস্ত এলাকায় বাঘ আছে সেখান থেকে চিতাবাঘ দূরে থাকে। মানে চিতাবাঘ বনের আশেপাশে মানুষের বাসস্থানের আশেপাশে থাকতে পছন্দ করে। যেখানে সে কুকুর, গবাদি পশু এমনকি ইঁদুর খেয়ে পেট চালায়। কিন্তু বাঘের বড় শিকারের প্রয়োজন হয়।