নিক্কি যাদব হত্যাকাণ্ডে হাতে এসেছে সিসিটিভি ফুটেজ। যাতে স্পষ্ট হত্যে মূল অভিযুক্ত সাহিলও হত্যাকারী। বিয়ের দিন সকালেই হত্যাকরে নিক্কিকে।
রাতের অন্ধকারে নয়, দিনের আলোতেই নিজের প্রেমিকা তথা সহবাসসঙ্গীকে শ্বাসরোধ করে হত্যাকরেছিল সাহিল গেহলট। নিক্কি যাদব হত্যাকাণ্ডের জেরায় তেমনই জানিয়েছেন মূল অভিযুক্ত। সাহিল আরও জানিয়েছে, নিক্কিকে হত্যা করেই সে নিজের বিয়ে করতে গিয়েছিল। দিল্লি পুলিশ জানিয়েছে, গত ৯ ফেব্রুয়ারি সাহিলের বাগদান পর্ব সম্পন্ন হয়েছিল। সেই অনুষ্ঠানে বন্ধুদের সঙ্গে ঘণ্টার পর ঘণ্টা নাচ গান করেছিল। তারপরের দিন অর্থাৎ বিয়ের দিন নিক্কি যাদবকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেছিল।
দিল্লি পুলিশ জানিয়েছে, বিয় করতে যাওয়ার আগেই নিজের চার বছরের প্রেমপর্বে নিজের হাতেই ইতি টেনেছিল সাহিল। ২৩ বছরের বয়সী নিক্কি যাদবকে ৯ ফেব্রুয়ারি শেষবারের মত নিজের ভাড়া করা ফ্ল্যাটে ঢুকতে দেখা গিয়েছিল। সেই ফুটেজও পুলিশের হাতে এসেছে। পুলিশ সূত্রের খবর জেরা সাহিল স্বীকার করেছে নিক্কির সঙ্গে ওই দিন বেশ কয়েক ঘণ্টা ঘোরাঘুরির পরেই সে নিগন ঘাটের কাছে একটি পার্কিং লটে সকাল সাড়ে ৮টা থেকে ৯টার মধ্যে নিক্কিকে হত্যা করেছিল। পুলিশের আরও দামি মৃত্যুর আগে পর্যন্ত তিনি জানতের না তাঁর সহবাসসঙ্গী তাঁর সঙ্গে ঠিক কতবড় বিশ্বাসঘাতকতা করতে যাচ্ছে। নিক্কিকে লুকেই বিয়ের সমস্ত তোড়জোড় করেছিল সাহিল।
তদন্তে পুলিশের প্রাথমিক অনুমান বাগদানের পরই সাহিল নিজের খুড়তুতো ভাইয়ের গাড়ি নিয়ে রাত একটার দিকে নিক্কির বাড়িতে চলে গিয়েছিল। ভোর পাঁচটার দিকে তাদের বেরিয়ে যেতে দেখা যায়। দিল্লি পুলিশের হাতে এসেছে তেমনই সিসিটিভি ফুটেজ। দিল্লির নিজামুদ্দিন রেলওয়ে স্টেশনেও গিয়েছিল তাদের গাড়ি। দিল্লি পুলিশ তদন্তে জানতে পারে নিক্কি সাহিসের সঙ্গ গোয়া যেতে চেয়েছিল। কিন্তু সাহিল জানিয়েছিল সে টিকিট পায়নি। কিন্তু তারপেরেও কেন রেলওয়ে স্টেশে গিয়েছিল তারা তারও উত্তর খুঁজছে পুলিশ। পুলিশের অনুমান নিক্কিকে বিভ্রান্ত করেই সাহিলের এই উদ্যোগ।
যাইহোক প্রেমিকাকে হত্যা করে প্রায় ৪০ কিলোমিটার গাড়িচালিয়ে নিক্কির দেহ দুমড়ে মুচড়ে একটি ব্যাগের মধ্যে ভরে ফ্রিজে রেখেছিল সাহিল। তারপরই সেখান থেকে বিয়ে করতে গিয়েছিল। পুলিশের অনুমান ছিল সাহিলের পরিকল্পনা ছিল পরবর্তীকালে হাতে কিছুটা সময় পেলেই নিক্কির লাশ নদীর জলে বা ড্রেনে ভাসিয়ে দেবে।
তবে তার আগে নিক্কির মোবাইল ফোন থেকে তাদের আদানপ্রাদান হওয়া সমস্ত হোয়াটসঅ্যাপ ম্যাসেজও ডিলিট করে দিয়েছিল সাহিল। প্রেমের প্রমাণ লোপাটের উদ্দেশ্যেই এই পদক্ষেপ বলেও জানিয়েছে সাহিল।
দিল্লির শ্রদ্ধা ওয়াকার আর আফতাব আমিন পুনাওয়ালের কথা মনে করিয়ে দিয় নিক্কি যাদব ও সাহিল গেহলট। পুনাওয়ালার মত সাহিলও তাঁর প্রেমিকা বা সহবাস সঙ্গীকে হত্যা করে দেহ সংরক্ষণ করে রেখেছিল ফ্রিজে। তবে পুনাওয়ালার মত নিজের বাড়িতে নয়, সে প্রেমিকার নিথর দেহ রেখেছিল একটি ধাবার ফ্রিজে। শ্রদ্ধা হত্যার সঙ্গে নিক্কি হত্যার অনেক মিল রয়েছে। শ্রদ্ধাকেও তার লিভইন সঙ্গে হত্যা করেছিল। তারপর দেহ লুকিয়ে রেখেছিল একটি ফ্রিজে। এখানেই নিক্কিকে খুন হতে হয় তার ভালবাসার মানুষের হাতেই। সাহিলও নিক্কির দেহ ফ্রিজে লুকিয়ে রেখেছিল। তবে কোনও ক্ষেত্রেই অপরাধীরা ছাড়ায় পায়নি।
আরও পড়ুনঃ
হেরে গিয়েও মাটি আঁকড়ে লড়াই, ভোট যুদ্ধে না থেকেও ত্রিপুরার নির্বাচনে রয়েছেন মানিক সরকার
ফ্রিজে রাখা প্রেমিকার দেহ, সেজেগুজে গিয়ে মা-বাবার পছন্দের পাত্রীকে বিয়ে করে ফেললেন দিল্লির যুবক