ভারতের মত দেশে স্বামীর ঘরে নারীদের নির্যাতনের শিকার হওয়ার অভিজ্ঞতা নতুন নয়। তেমনি এক ভয়ঙ্কর অভিজ্ঞতার সম্মুখী হলেন ৩২ বছরের এক মহিলা। বিয়ের ১১ বছর পরেও স্বামীর হাতে নিয়মিত নির্যাতনের শিকার হয়েছেন ওই মহিলা। এমনকি গত ৬ মাস ধরে একটি ঘরে তাঁকে লোহার শিকল দিয়ে বেঁধে রেখেছিল স্বামী। অবশেষে ওই ওই নির্যাতিতাকে উদ্ধার করেছে মহিলা কমিশন।
দিল্লির ত্রিলোকপুরী অঞ্চল থেকে ওই গৃহবধূকে উদ্ধার করা হয়েছে। জানা যাচ্ছে যে ঘরটিতে তাঁকে আটকে রেখে মারধর করা হত সেখানে ফ্যানের ব্যবস্থা ছিল না। এমনকি তাঁকে শৌচাগারেও যেতে দেওয়া হোত না। ৬ মাস ধরে নোংরার মধ্যেই পড়ে ছিলেন তিনি। তিন সন্তানের মা ওই মিহলাকে গত ৬ মাল ধরে পায়ে শিকল বেঁধে রাখা হয়েছিল। তাঁর সারা শরীরে রয়েছে অত্যাচারের চিহ্ন। ওই মহিলাকে উদ্ধার করে তাঁর চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
অটোচলাক স্বামী যে তাঁকে নিয়মিত মারধর করতো সেকথা জানিয়েছেন মহিলার সন্তানরাও। ইতিমধ্যে এই ঘটনায় অভিযুক্ত স্বামীর বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের হয়েছে। তবে কী কারণে ওই মহিলার উপর অত্যাচার করছিল তাঁর স্বামী, সেটা এখনও জানা যায়নি।
সূত্রের খবর, ওই মহিলার উপর অকথ্য অত্যাচারের বিষয়ে দিল্লি মহিলা কমিশনের মহিলা পঞ্চায়েত দলকে খবর দেন এক স্বেচ্ছাসেবী। মহিলা কমিশনের চেয়ারপার্সন স্বাতী মালিওয়ালকে এই বিষয়ে অবহিত করেন কমিশনের দুই সদস্য ফিরদৌস খান ও কিরণ নেগি। সঙ্গে সঙ্গে ওই মহিলার বাড়িতে যান তাঁরা। সেখানে গিয়ে দেখেন, ঘরে দুর্গন্ধে টেকা যাচ্ছে না। তার মধ্যেই মেঝেতে পড়ে আছেন ওই মহিলা। পায়ে লোহার শিকল বাঁধা। পোশাক ছেঁড়া। মহিলার সারা শরীরে রয়েছে অত্যাচারের চিহ্ন।
দিল্লি মহিলা কমিশনের চেয়ারপার্সন স্বাতী মালিওয়াল জানিয়েছেন, ‘রাজধানীর বিভিন্ন অঞ্চলে সক্রিয় মহিলা পঞ্চায়েত। এই দলের কাছ থেকেই আমরা খবর পাই, এক মহিলার উপর অত্যাচার চালানো হচ্ছে। অভিযোগ পেয়েই আমরা সংশ্লিষ্ট ঠিকানায় যাই। সেখানে গিয়ে আমরা যা দেখি তা অত্যন্ত বেদনাদায়ক। ওই মহিলাকে লোহার শিকল দিয়ে বেঁধে রাখা হয়েছিল। তাঁর অবস্থা ছিল শোচনীয়। অত্যাচারের ফলে তাঁর শরীরে গভীর ক্ষত তৈরি হয়েছে। তিনি মানসিকভাবেও অসুস্থ হয়ে পড়েছেন।’
মহিলা কমিশনা ওই নির্যাতিতা মহিলার পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করছে। তিনি যাতে সেরা চিকিৎসা পান, সেটিও কমিশন দেখছে বলে আশ্বাস দেন স্বাতী । একইসঙ্গে যাতে তাঁর উপর অত্যাচারের ঘটনায় কঠোর শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়, সেটাও নিশ্চিত করেন।