রাজনীতির সঙ্গে অপরাধ জগতের যোগ নতুন নয়। কিন্তু সাংসদদের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলার সংখ্যা বেড়ে চলা উদ্বেগজনক। রাজনীতিকে অপরাধীদের সংস্রবমুক্ত রাখা যাচ্ছে না।
এখন লোকসভা ও রাজ্যসভা মিলিয়ে মোট সাংসদ ৭৬৩ জন। তাঁদের মধ্যে ৩০৬ জনের বিরুদ্ধেই ফৌজদারি মামলা রয়েছে। সাংসদরা যে হলফনামা জমা দিয়েছেন, সেখানেই মামলার কথা উল্লেখ করা হয়েছে। এই হলফনামা অনুযায়ী, ৪০ শতাংশ সাংসদের বিরুদ্ধেই ফৌজদারি মামলা ঝুলছে। রাজনৈতিক দলগুলির মধ্যে সাংসদদের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলার শতাংশের হিসেবে সবার আগে কংগ্রেস, বিজেপি, তৃণমূল কংগ্রেস। পশ্চিমবঙ্গের শাসক দলের ৩৬ সাংসদের মধ্যে জনের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা রয়েছে। শতাংশের হিসেবে যা ৩৯। বিজেপি-র ৩৮৫ জন সাংসদের বিরুদ্ধে ১৩৯ জনের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা রয়েছে। এর অর্থ, কেন্দ্রের শাসক দলের ৩৬ শতাংশ সাংসদের বিরুদ্ধেই ফৌজদারি মামলা রয়েছে। কংগ্রেসের ৮১ জন সাংসদের মধ্যে ৪৩ জনের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা রয়েছে। শতাংশের হিসেবে এক্ষেত্রে দেশের প্রধান বিরোধী দলই সবার আগে। কংগ্রেসের ৫৩ শতাংশ সাংসদের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা ঝুলছে।
অন্যান্য রাজনৈতিক দলগুলির মধ্যে রাষ্ট্রীয় জনতা দলের ৬ জন সাংসদের মধ্যে ৫ জনের বিরুদ্ধেই ফৌজদারি মামলা রয়েছে। সিপিএম-এর ৮ জন সাংসদের মধ্যে ৬ জনের বিরুদ্ধেই ফৌজদারি মামলা রয়েছে। আম আদমি পার্টির ১১ জন সাংসদের মধ্যে ৩ জনের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা রয়েছে। ওয়াই এস আর কংগ্রেস পার্টির ৩১ জন সাংসদের মধ্যে ১৩ জনের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা রয়েছে। এনসপি-র ৮ জন সাংসদের মধ্যে ৩ জনের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা রয়েছে বলে হলফনামা থেকে জানা গিয়েছে। অ্যাসোসিয়েশন ফর ডেমোক্রেটিক রিফর্মস (এডিআর) ও ন্যাশনাল ইলেকশন ওয়াচ একটি রিপোর্ট প্রকাশ করেছে। সেই রিপোর্টেই সাংসদদের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলার তথ্য জানা গিয়েছে।
১৯৪ জন সাংসদ জানিয়েছেন, তাঁদের বিরুদ্ধে খুন, খুনের চেষ্টা, অপহরণ, মহিলাদের উপর অত্যাচারের মতো গুরুতর অভিযোগে মামলা দায়ের করা হয়েছে। দেশের সব রাজ্যের মধ্যে সাংসদদের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলার ক্ষেত্রে সবার আগে কেরালা। দক্ষিণ ভারতের এই রাজ্যের ৭৩ শতাংশ সাংসদের বিরুদ্ধেই ফৌজদারি মামলা ঝুলছে। এক্ষেত্রে দ্বিতীয় স্থানে বিহার। পশ্চিমবঙ্গের পার্শ্ববর্তী এই রাজ্যের ৫০ শতাংশ সাংসদের বিরুদ্ধেই গুরুতর অপরাধের সঙ্গে যুক্ত থাকার অভিযোগ রয়েছে। মহারাষ্ট্রের ৫৭ শতাংশ সাংসদের বিরুদ্ধে গুরুতর ও গুরুতর নয় এমন ফৌজদারি মামলা রয়েছে। তেলঙ্গানার ৫০ শতাংশ সাংসদের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা রয়েছে। দক্ষিণ ভারতের এই রাজ্যের ৯ শতাংশ সাংসদের বিরুদ্ধে গুরুতর অপরাধের সঙ্গে সরাসরি জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে। কেরালার ১০ শতাংশ সাংসদ গুরুতর অপরাধ করেছেন বলে অভিযোগ। মহারাষ্ট্রের ৩৪ শতাংশ সাংসদের বিরুদ্ধে গুরুতর অপরাধের সঙ্গে যুক্ত থাকার অভিযোগ রয়েছে। উত্তরপ্রদেশের ৩৭ শতাংশ সাংসদের বিরুদ্ধে গুরুতর অপরাধের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে মামলা করা হয়েছে।
আরও পড়ুন-
Nipah Virus: কোভিডের মতোই আতঙ্ক বাড়াচ্ছে নিপা, কেরল সরকারের কপালে চিন্তার ভাঁজ
Ram Mandir : 'এই মন্দির পাল্টে দেবে রাজ্যের নকশা', অযোধ্যার অন্দরে এশিয়ানেট নিউজ