৩৭০ ধারা বাতিলের পর থেকে জম্মু ও কাশ্মীরে খতম ৪৩৯ জঙ্গি, দাবি কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর
নিত্যানন্দ বলেন, "জম্মু ও কাশ্মীর থেকে ৩৭০ ধারা বাতিলের পর এখনও পর্যন্ত মোট ৪৩৯ জন জঙ্গিকে খতম করা হয়েছে। এছাড়াও জঙ্গি হামলায় প্রাণ হারিয়েছেন ৯৮ জন স্থানীয় বাসিন্দা। হামলায় শহিদ হয়েছেন নিরাপত্তাবাহিনীর ১০৯ জন। ৫৪১টি জঙ্গি হামলার ঘটনা ঘটেছে সেখানে।"
Web Desk - ANB | Published : Feb 2, 2022 8:39 AM IST / Updated: Feb 02 2022, 02:34 PM IST
২০১৯ সালে ৩৭০ ধারা বাতিল (Repeal of Article 370) করে জম্মু ও কাশ্মীরকে (Jammu and Kashmir) আলাদা দুটি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে বিভক্ত করা হয়। এরপর থেকে এই দুই জায়গায় বদলেছে অনেক কিছুই। এই ধারা বাতিল করার পর থেকে এখনও পর্যন্ত সেখানে মোট ৪৩৯ জঙ্গিকে খতম করা হয়েছে বলে দাবি করেছেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের প্রতিমন্ত্রী নিত্যানন্দ রাই (Nityanand Rai)। রাজ্যসভায় (Rajya Sabha) একথা উল্লেখ করেছেন তিনি।
নিত্যানন্দ বলেন, "জম্মু ও কাশ্মীর থেকে ৩৭০ ধারা বাতিলের পর এখনও পর্যন্ত মোট ৪৩৯ জন জঙ্গিকে (terrorists) খতম করা হয়েছে। এছাড়াও জঙ্গি হামলায় প্রাণ হারিয়েছেন ৯৮ জন স্থানীয় বাসিন্দা (Civilians)। হামলায় শহিদ হয়েছেন নিরাপত্তাবাহিনীর (Security Personnel) ১০৯ জন। ৫৪১টি জঙ্গি হামলার ঘটনা ঘটেছে সেখানে।"
৩৭০ ধারার লাগু হওয়ার আগে ও তা বাতিল হওয়ার পর জম্মু ও কাশ্মীরে কী কী পরিবর্তন এসেছে
৩৭০ ধারা লাগু হওয়ার পর জম্মু ও কাশ্মীর ছিল একটি রাজ্য। কিন্তু, তা বাতিল হওয়ার পর দুটি ভাগে বিভক্ত করা হয় জম্মু ও কাশ্মীরকে। এর ফলে রাজ্যের মর্যাদা হারায় জম্মু ও কাশ্মীর। জম্মু ও কাশ্মীরের পাশাপাশি লাদাখকেও কেন্দ্র শাসিত অঞ্চল হিসেবে ঘোষণা করা হল।
৩৭০ ধারায় জম্মু ও কাশ্মীরকে দেওয়া হয়েছিল বিশেষ মর্যাদা ও স্বায়ত্তশাসনের অধিকার। এর ফলে দেশের অন্যান্য রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে যেসব নিয়ম লাগু হত তা জম্মু ও কাশ্মীরের ক্ষেত্রে লাগু নাও হতে পারত। আসলে দেশের মধ্যে থেকেও গোটা দেশ থেকেই বিচ্ছিন্ন ছিল জম্মু ও কাশ্মীর। তবে ধারা বাতিলের পর সারা দেশের সঙ্গে একই নিয়মের ধারায় বাঁধা হয় জম্মু ও কাশ্মীরকে। তারপর থেকে দেশের অন্যান্য কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের নিয়ম প্রযোজ্য হয় উপত্যকাতেও।
বিশেষ সুবিধার মাধ্যমে দেশের জাতীয় পতাকার পাশাপাশি জম্মু ও কাশ্মীরে ছিল নিজস্ব পতাকাও। কিন্তু, ধারা বাতিলের পর সেখানকার নিজস্ব পতাকাকে বাতিল করা হয়। এর ফলে সেখানেও একমাত্র তিরঙ্গাকেই জাতীয় পতাকাকে হিসেবে মানতে হবে।
৩৭০ ধারার মধ্যেই ছিল ৩৫এ অনুচ্ছেদ। ফলে বাতিল হয়েছে এই অনুচ্ছেদও। তা অনুযায়ী বলা হয়েছিল বাইরের রাজ্যের কোনও লোক জম্মু ও কাশ্মীরে স্থাবর সম্পত্তি কিনতে পারতেন না। কোনও সম্পত্তি কিনতে গেল রাজ্যে থাকতে হতে অন্তত ১০ বছর। কিন্তু, ধারা বাতিলের পর সেই কাজে আর কোনও সমস্যা নেই। অন্য রাজ্যের ভারতীয় নাগরিকও অনায়াসেই জমি কিনতে পারবেন উপত্যকায়।
৩৭০ ধারা অনুযায়ী কোনও মহিলা জম্মু ও কাশ্মীরের বাইরের কাউকে বিয়ে করলে তিনি বাবার সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত হতেন। তাঁর উত্তরাধিকারীরাও সম্পত্তির অধিকার পেতেন না। কিন্তু, ধারা বাতিলের পর সেক্ষেত্রেও পরিবর্তন হয়েছে। এর ফলে কোনও মহিলা কাশ্মীরের বাইরের কাউকে বিয়ে করলেও বাবার সম্পত্তি থেকে আর বঞ্চিত হতে হবে না তাঁকে।
এর আগে সংবিধানের তথ্যের অধিকারের আওতাভুক্ত ছিল না জম্মু ও কাশ্মীর। ধারা বাতিলের পর জম্মু ও কাশ্মীরে সারা দেশের মতোই লাগু হয়েছে তথ্যের অধিকার বা আরটিআই(RTI)।