জম্মু ও কাশ্মীরে সন্ত্রাসবাদীদের গুলিতে মৃত্যু হল মুর্শিদাবাদের ৫ শ্রমিকের। একজনকে গুরুতর আহত অবস্থায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে হাসপাতালে। গোটা এলাকা ঘিরে আপাতত তল্লাশি অভিযান চলছে। ৩৭০ ধারা বাতিলের পর থেকেই অকাশ্মীরিরা জহ্গিদের নিশানা হয়েছেন।
আর সেনা বা নিরাপত্তাকর্মীরা নয়, এবার জঙ্গিদের নিশানা কাশ্মীরে থাকা সকল অকাশ্মীরিরাই। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় জম্মু ও কাশ্মীরের কুলগামে সন্ত্রাসবাদীদের এই নয়া কৌশলের বলি হলেন পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদ থেকে কাজ করতে যাওয়া ৫ শ্রমিক। এদের দেহ গুলি চালিয়ে ঝাঁঝরা করে দিয়েছে জঙ্গিরা। আরও একজন গুলিবিদ্ধকে গুরুতর আহত অবস্থায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে হাসপাতালে।
এই মুহূর্তে ঘাতক জঙ্গিদের সন্ধানে কুলগাম জুড়ে বিশাল তল্লাশি অভিযান চলছে। ডাকা হয়েছে অতিরিক্ত বাহিনীকেও। জম্মু ও কাশ্মীরের ডিজিপি দিলবাগ সিং দাবি করেছেন এই হামলার পিছনে পাকিস্তানের হাত রয়েছে। জানা গিয়েছে পশ্চিমবঙ্গ থেকে ওই শ্রমিকরা রাজমিস্ত্রি হিসেবে কাজ করতে গিয়েছিলেন।
জম্মু ও কাশ্মীরের পুলিশ জানিয়েছে, 'নিরাপত্তা বাহিনী পুরো অঞ্চলটিকে ঘিরে তল্লাশি অভিযান চলছে। অতিরিক্ত সুরক্ষা বাহিনীকে ডেকে পাঠানো হয়েছে। সন্ত্রাসবাদীদের হাতে নিহত শ্রমিকরা পশ্চিমবঙ্গ থেকে দিনমজুরের কাজ করতে এসেছিলেন।'
গত ৫ অগাস্ট সংবিধানের ৩৭০ ধারা বাতিল করা হয়েছিল। তারপর থেকে জম্মু ও কাশ্মীরের অবস্থা কী রকম রয়েছে তা জানার জন্য এদিনই ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের সাংসদদের একটি প্রতিনিধি দল কাশ্মীর সফরে এসেছিলেন। ঠিক এই দিনেই এই হামলা হল।
বস্তুত ৩৭০ ধারা বাতিলের সিদ্ধান্ত গ্রহণের পর থেকেই সন্ত্রাসবাদীরা ট্রাকচালক থেকে শ্রমিক, কাশ্মীরের বাইরে থেকে আসা খেটে খাওয়া মানুষদের নিশানা করা শুরু করেছে। সোমবার অনন্তনাগে জঙ্গিরা উধমপুরের এক ট্রাকচালককে হত্যা করেছিল। গত অগাস্ট থেকে এই নিয়ে জঙ্গিদের হাতে চতুর্থ ট্রাকচালক খুন হয়েছেন।
২৪ অক্টোবর শোপিয়ানে দুই অ-কাশ্মীরি ট্রাক চালককে হত্যা করা হয়। তার আগে ১৪ অক্টোবর, খুন হয়েছিলেন রাজস্থান থেকে ট্রাক নিয়ে আসা আরেক চালক। এই ঘটনার দুদিন পরেই শোপিয়ানে পঞ্জাবের এক আপেল ব্যবসায়ীকে হত্যা করা হয়। একই দিন, পুলওয়ামায় ছত্তিশগড়ের এক ইটভাটা শ্রমিককেও গুলি করে হত্যা করেছিল জঙ্গিরা। এবার সেই মৃত্যু মিছিলে জুড়ল পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদের নামও।